শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে ২১টি চমৎকার তথ্য জানুন

শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আজ আমরা বেশ কিছু চমৎকার তথ্য জানতে চলেছি। বিভিন্নভাবে শসা খাওয়ার প্রচলন আমাদের সমাজে যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। 

শসা-খাওয়ার-উপকারিতা

শসা খাওয়ার বিভিন্ন বিষয়ের সাথে আজ আমরা বিশেষ ভাবে জানতে চলেছি, খালি পেটে শসা খাওয়ার উপকারিতা কি সে সম্পর্কে। তবে আর দেরি না করে, চলুন শুরু করা যাক।

পেজ সূচিপত্রঃ শসা খাওয়ার উপকারিতা 

শসা খাওয়ার উপকারিতা 

শসা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বলতে গেলে, এটি আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় থাকা অত্যন্ত পুষ্টিকর ও জনপ্রিয় একটি সবজি। শসা আমাদের শরীরে নানাভাবে উপকার দিয়ে থাকে। শসায় থাকা প্রাকৃতিক পানি আমাদের শরীরে পানির ভারসাম্য ও অভাব পূরণ করতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। শসা খাওয়ার প্রচুর উপকারিতার মধ্যে ২১টি উপকারিতা এখন আমরা জানতে চলেছি। 

শসা খাওয়ার ২১টি উপকারিতা 

  • শসায় থাকা উচ্চ জলীয় উপাদান দেহের পানি শূন্যতা দূর করে এবং শরীরকে সতেজ রাখতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। 
  • শসা ত্বকে আর্দ্রতা বজায় রাখে এবং ব্রণ ও বিভিন্ন সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। 
  • শসায় উপস্থিত কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ব্যাপক উপকারী এবং এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
  • শসায় রয়েছে পটাশিয়াম সমৃদ্ধ উপাদান, যা উচ্চ রক্তচাপ কমিয়ে রক্তচাপের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। 
  • শসায় রয়েছে উচ্চ মাত্রার ফাইবার, যা হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করে।
  • শসায় থাকা নিম্ন ক্যালরি এবং উচ্চ জলীয় উপাদান আমাদের ওজন কমানোর জন্য আদর্শ হিসেবে বিবেচিত।  
  • শসা মুখের ভেতরের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে এবং দুর্গন্ধ দূর করতে কার্যকর ভূমিকা রাখে। 
  • চোখের উপর শসার টুকরো রেখে কিছুক্ষণ বসলে শরীরের ক্লান্তি ও চোখের নিচের ডার্ক সার্কেল কমে যায়।
  • শসায় রয়েছে ভিটামিন সি ও বিটা ক্যারোটিন, যা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং কোষের ক্ষতি প্রতিরোধ করে থাকে।
  • শসা মূত্র বর্ধক হিসেবে কাজ করে এবং কিডনি থেকে ক্ষতিকর পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে। 
  • শসায় রয়েছে ভিটামিন কে ও ক্যালসিয়াম উপাদান, যা আমাদের হাড়কে শক্তিশালী করে এবং অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধে ব্যাপক সাহায্য করে। 
  • শসায় থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করে। 
  • শসা পেট ঠাণ্ডা রাখে এবং পেটের অ্যাসিডিটি সহ অন্যান্য বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। 
  • শসা দেহ থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করতে সাহায্য করে এবং লিভার পরিষ্কার রেখে ডিটক্সিফিকেশন প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে। 
  • শসায় রয়েছে সিলিকা ও সালফার, যা চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। 
  • শসা রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদরোগ প্রতিরোধে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। 
  • গ্রীষ্মের তীব্র গরমে শসা শরীর ঠাণ্ডা রাখে এবং হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে ব্যাপক ভূমিকা রাখে।
  • শসায় রয়েছে অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান, যা শরীরের বিভিন্ন সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে। 
  • পেটের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে শসার ভূমিকা রয়েছে এবং এটি হার্ট বার্ন কমাতে সাহায্য করে। 
  • শসায় রয়েছে আয়রন উপাদান, যা রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে এবং রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে সাহায্য করে। 
  • শসায় থাকা অ্যান্টি এজিং বৈশিষ্ট্য ত্বকের বলি রেখা কমিয়ে ত্বককে তরুণ ও প্রাণবন্ত রাখতে সাহায্য করে। 

খালি পেটে শসা খাওয়ার উপকারিতা 

খালি পেটে শসা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে এখন আমরা বেশ কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে চলেছি। খালি পেটে শসা খাওয়ার ব্যাপক উপকারিতা রয়েছে। এটি আমাদের শরীরকে যেমন সারাদিনের জন্য প্রাণবন্ত রাখে, অন্যদিকে হজম শক্তি বৃদ্ধি করে শরীরকে কর্ম চঞ্চল রাখতে সাহায্য করে। খালি পেটে শসা খাওয়ার ১০ টি ব্যতিক্রমী উপকারিতা এখন আপনাদের সামনে তুলে ধরছি। 

  • শসার প্রাকৃতিক অ্যাল্কালাইন বৈশিষ্ট্য আমাদের শরীরের পিএইচ লেভেল ঠিক রাখতে সাহায্য করে, যা অ্যাসিডিটি ও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করে। 
  • খালি পেটে শসা খেলে দেহের মেটাবোলিজম উন্নত হয় এবং অতিরিক্ত ক্যালরি বার্ন করতে সাহায্য করে, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখে। 
  • খালি পেটে শসা খাওয়ার ফলে লিভার ও কিডনি থেকে বিষাক্ত পদার্থ সহজেই বের হয়ে যায়, যা দেহকে ভেতর থেকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
  • শসার প্রাকৃতিক অ্যান্টি অক্সিডেন্ট দেহের কোষে শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে, যা দিনের শুরুতে আপনাকে বাড়তি শক্তি প্রদান করবে। 
  • খালি পেটে শসা খেলে আপনার যদি পেট ফোলা ভাব থেকে থাকে সেটা কমিয়ে দিবে এবং শরীর হালকা অনুভব করতে সাহায্য করবে। 
  • খালি পেটে শসা খেলে ত্বকের টক্সিন দূর হয় এবং ত্বকে প্রাকৃতিক আভা এবং উজ্জ্বলতা ফিরে আসে। 
  • শসায় থাকা ম্যাগনেসিয়াম এবং ভিটামিন বি শরীরকে রিলাক্স করতে সাহায্য করে, যা মানসিক চাপ কমানোর ক্ষেত্রে সহায়ক হয়। 
  • খালি পেটে শসা খাওয়ার ফলে শসায় থাকা পটাশিয়াম উপাদান পেশির সংকোচন ও শিথিলতার ভারসাম্য রক্ষা করে, যা ব্যায়ামের ক্ষেত্রে সহায়ক হয়। 
  • খালি পেটে শসা খেলে শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে এবং দীর্ঘ সময় প্রাকৃতিক শক্তি শরীরের প্রদান করে। 
  • দিনের শুরুতে শসা খেলে ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং দিনের বাকি সময়ে অপ্রয়োজনীয় ক্যালোরি গ্রহণ কমিয়ে দেয়। 

রাতে শসা খাওয়ার উপকারিতা 

রাতে শসা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বলতে গেলে, এটি আমাদের শরীরের জন্য ব্যাপক উপকারী হয়ে থাকে। রাতে শসা খেলে, এটি সহজপাচ্য হওয়ায় হালকা খাবার হিসেবে বেশ ভালো উপকার দেয়। শসায় থাকা পুষ্টি উপাদান রাতে ভালো ঘুম আনতে সাহায্য করে। দিনে শসা খাওয়ার উপকারিতার তুলনায় রাতে খেলে এর ভিন্নধর্মী উপকার পাওয়া যায়। চলুন, এ বিষয়ে আরও তথ্য জেনে নেই। 

  • রাতে শসা খেলে হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয় এবং এটি শরীরের জন্য ব্যাপক উপকার বয়ে আনে। 
  • শসায় থাকা পুষ্টি উপাদান ঘুমের ক্ষেত্রে উপকারী হয়। 
  • শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে রাতে শসা খাওয়ার বেশ ভূমিকা রয়েছে। 
  • শসায় থাকা প্রাকৃতিক ডিটক্সি ফাইং উপাদান রাতে খাওয়ার ফলে দেহ থেকে টক্সিন সহজে বেরিয়ে যেতে পারে। 

আরও পড়ুনঃ মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা ও ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে কার্যকরী তথ্য জানুন

  • কম ক্যালোরি যুক্ত সবজি শসা হওয়ায় এটি রাতে খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক হয়। 
  • শসা খেলে পেট ভরা অনুভূতি তৈরি হয়, যা অতিরিক্ত খাওয়া থেকে আমাদেরকে বিরত রাখতে পারে। 
  • শরীর ঠাণ্ডা রাখতে রাতে শসা খাওয়ার বিশেষ উপকারিতা রয়েছে। 
  • শসায় রয়েছে ভিটামিন সি এবং বায়োটিন, যা রাতে খেলে চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং চুলের স্বাস্থ্য ভালো হয়। 

ত্বকে শসার উপকারিতা 

ত্বকে শসার উপকারিতা সম্পর্কে এখন আমরা আলোচনা করব। শসা ত্বকের জন্য এমন একটি প্রাকৃতিক উপাদান, যা যুগ যুগ ধরে ত্বক চর্চার ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়ে আসছে। শসায় থাকা উপাদান ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে এবং ত্বকের ভেতর ও বাহির থেকে ভালো রাখতে সমানভাবে কার্যকর হয়ে থাকে। 

শসা সরাসরি ত্বকে লাগালে ত্বক ঠাণ্ডা হয় এবং ত্বকের উপরে থাকা বিভিন্ন ফুসকুড়ি ও লালচে ভাব দূর করতে সাহায্য করে থাকে। আপনার ত্বকে যদি অতিরিক্ত রোদ লেগে বা অন্য কোন কারণে জ্বালা-পোড়া করে, সে ক্ষেত্রে শসা লাগিয়ে রাখলে ভালো উপকার পাবেন। ত্বকে শসা লাগালে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকে এবং ত্বক নরম হয়।

আরও পড়ুনঃ মুলার উপকারিতা ও অপকারিতা 

আপনার চোখের নিচে যদি কালো দাগ ও ফোলা ভাব সৃষ্টি হয় সেখানে শসার টুকরা লাগিয়ে রাখলে উপকার পাওয়া যায়। শসায় রয়েছে অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান, যা চোখের ক্লান্তি দূর করে এবং ত্বকের পিগমেন্টেশন কমিয়ে দেয়। আপনি যদি নিয়মিত শসা খান, সে ক্ষেত্রে এটি ত্বকে ভিটামিনের অভাব পূরণ করবে এবং এতে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে দিবে। 

শসার পুষ্টি উপাদান 

শসার পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে এখন আমরা বিস্তারিত তথ্য জানতে চলেছি। আমরা জেনে না জেনে, নিজেদের ইচ্ছামত বিভিন্ন শাকসবজি খেয়ে থাকি। অতিরিক্ত এবং না জেনে খাওয়ার ফলে অনেক সময় বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হয়। আমি এখানে শসার পুষ্টি উপাদান উল্লেখ করছি যেন আপনারা আপনাদের শারীরিক অবস্থা বুঝে পুষ্টি উপাদানের প্রয়োজনীয়তা অনুসারে শসা খেতে পারেন। 

শসার-পুষ্টি-উপাদান

১০০ গ্রাম শসার পুষ্টি উপাদান 

নম্বর উপাদান পরিমাণ
পানি ৯৫.২ গ্রাম
ক্যালোরি ১৫ কিলো ক্যালরি
কার্বোহাইড্রেট ৩.৬ গ্রাম
প্রোটিন ০.৭ গ্রাম
ফাইবার ০.৫ গ্রাম
ভিটামিন সি ২.৮ মিলিগ্রাম
ভিটামিন কে ১৬.৪ মাইক্রোগ্রাম
পটাশিয়াম ১৪৭ মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম ১৩ মিলিগ্রাম
১০ ক্যালসিয়াম ১৬ মিলিগ্রাম
১১ ফসফরাস ২৪ মিলিগ্রাম
১২ আয়রন ০.২৮ মিলিগ্রাম
১৩ ভিটামিন বি৯ ৭ মাইক্রোগ্রাম
১৪ জিংক ০.২ মিলিগ্রাম

শসা খাওয়ার সঠিক সময় 

শসা খাওয়ার সঠিক সময় সম্পর্কে এখন আমরা বেশ কিছু তথ্য জানব। শসা এমন একটি খাবার, যা দিনের বিভিন্ন সময় খাওয়া যেতে পারে। আপনার শরীরের প্রয়োজন, হজম ক্ষমতা এবং পুষ্টির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে শসা নির্দিষ্ট সময়ে খেতে হবে। সঠিক সময়ে শসা খাওয়া শরীরের জন্য উপকারী হয়ে থাকে। 

  • সকালে খালি পেটে শসা খেলে শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করতে সাহায্য করে। শসায় থাকা জলীয় উপাদান আপনার শরীরকে সারাদিনের জন্য হাইড্রেট রাখে। আপনি যদি খালি পেটে শসা খেতে পারেন, সে ক্ষেত্রে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের হবে এবং শরীরের মেটাবোলিজম উন্নত হবে। 
  • দুপুরে খাবারের আগে শসা খেলে ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং বেশি খাওয়ার প্রবণতা নষ্ট হয়, যা ওজন নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে সহায়ক। শসায় থাকা উচ্চমানের ফাইবার আপনার পেট ভরিয়ে রাখবে এবং অতিরিক্ত ক্ষুধা অনুভূতি কমিয়ে দেবে। 

আরও পড়ুনঃ ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা ও বিভিন্ন ব্যবহার সম্পর্কে জানুন

  • বিকেলের হালকা নাস্তার সাথে শসা একটি আদর্শ খাবার হিসেবে আপনি খেতে পারেন। শসা আপনার অন্য খাবারের সাথে বাড়তি শক্তি যোগাবে এবং শরীরকে তরতাজা রাখবে। এতে ক্যালোরি কম হওয়ায় দুপুর ও রাতের খাবারের মাঝে চমৎকার খাবার হিসেবে আপনি গ্রহণ করতে পারেন। 
  • রাতে শসা খেলে শরীর ঠাণ্ডা থাকে এবং ঘুমের মান উন্নত হয়। শসা আমাদের শরীরে সহজে হজম হয় এবং পেট ফোলা ভাব বা অস্বস্তি দূর করে দেয়। রাতের খাবারের পরে শসা খেলে পেট পরিষ্কার হয় এবং সারা রাতের হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়। 

শসা খাওয়ার নিয়ম 

শসা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে এখন আমরা বেশ কিছু তথ্য জানতে চলেছি। নিয়ম মাফিক আপনি যদি শসা খেতে পারেন আপনার শরীরের জন্য এটি খুবই ভালো ফলাফল দিবে। শিশু থেকে বৃদ্ধ সকল বয়সী মানুষের জন্য শসা একটি ভাল খাবার। বয়স ভেদে আমাদের হজম ক্ষমতার ভিন্নতার কারণে নিয়ম না মেলে শসা খেলে কিছু সমস্যা হতে পারে। 

  • শিশুদের জন্য শসা খাওয়ার পরিমাণ মেনে খাওয়া উচিত। শিশুদের হজম শক্তি কম থাকে যার কারণে ২-৩ বছরের শিশুরা দিনে ১টি ছোট শসা খেতে পারে। শিশুদের জন্য শসা ছোট ছোট করে কেটে বা ম্যাস করে খাওয়ানো যেতে পারে। 

আরও পড়ুনঃ পেঁপের অসাধারণ উপকারিতা ও লুকানো অপকারিতা

  • প্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে দিনের যে কোন সময় শসা খাওয়া যায়। আপনি যদি সকাল এবং বিকেলে শসা খান, এ ক্ষেত্রে ভালো ফলাফল পাবেন। পূর্ণ বয়স্কদের ক্ষেত্রে ১ থেকে ২টি শশা একদিনে খাওয়া যেতে পারে। এটি আপনার শরীরের জন্য খুবই ভালো ফলাফল বয়ে আনবে।
  • বয়স্কদের জন্য শসা খাওয়ার পরিমাণ কম রাখতে হয়। সাধারণত দিনে ১টির বেশি শসা খাওয়া উচিত হবে না। এই পরিমাণ শসা খেলে শরীরে কোন সমস্যা হবে না এবং শরীরে ব্যাপক উপকার প্রদান করবে। 

ওজন কমাতে শসা খাওয়ার নিয়ম 

ওজন কমাতে শসা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে এখন আমরা বেশ কিছু কার্যকরী তথ্য জানতে চলেছি। ওজন কমানো অনেকের জন্য একটি বড় লক্ষ্য এবং এটি খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব। আপনি যদি ওজন কমানোর কথা চিন্তা করে থাকেন, সে ক্ষেত্রে শসা খাওয়া হতে পারে একটি অত্যন্ত কার্যকরী সিদ্ধান্ত। এই বিষয়ে আরও বেশ কিছু তথ্য আপনাদের সামনে তুলে ধরছি। 

ওজন-কমাতে-শসা-খাওয়ার-নিয়ম

  • ওজন কমানোর জন্য সকালে খালি পেটে শসা খাওয়া সবচেয়ে ভালো উপায় হতে পারে। সকালে খালি পেটে একটি শসা আপনি যদি খেতে পারেন, সে ক্ষেত্রে এটা হতে পারে খুবই ভালো একটি উপায়। 
  • রাতের খাবারের আগে শসা খাওয়া হতে পারে আপনার ওজন কমানোর ক্ষেত্রে একটি ভালো সিদ্ধান্ত। এই সময় শসা খেলে আপনার পেট ভরা অনুভূতি দিবে এবং অতিরিক্ত খাওয়ার ইচ্ছা কমিয়ে দেবে। শসা কম ক্যালরি সমৃদ্ধ এবং হালকা খাবার, যা আপনার অতিরিক্ত ওজন কমাবে এবং শরীর ঝরঝরে রাখতে সাহায্য করবে। 
  • ওজন কমানোর জন্য আপনার খাবারের সাথে সাইড ডিস হিসেবে শসা ব্যবহার করতে পারেন। শসা সালাদ, সুপ বা অন্যান্য খাবারের সাথে মিশিয়ে খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়। ওজন কমানোর ক্ষেত্রে শসা খাওয়ার সাথে উচ্চ ক্যালোরি ও চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। 

শসা খাওয়ার অপকারিতা 

শসা খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে এখন আমরা বেশ কিছু কার্যকরী তথ্য জানতে চলেছি। শসা খাওয়ার বিভিন্ন উপকারী বিষয় সম্পর্কে এতক্ষণ আমরা আলোচনা করেছি। আপনি যদি বেশি পরিমাণে শসা খান এবং আপনার শরীরে যদি বিশেষ সমস্যা থেকে থাকে, সে ক্ষেত্রে বেশ কিছু ক্ষতির সম্মুখীন আপনি হতে পারেন। আপনাদের সুবিধার্থে আমি এখানে বেশ কিছু বিষয় উল্লেখ করছি। 

শসা খাওয়ার ২১টি অপকারিতা 

  • অতিরিক্ত শসা খেলে আপনার পেট ব্যথা হতে পারে। শসায় রয়েছে পানি এবং ফাইবার উপাদান, যা আপনার পেট ফুলে যাওয়া ও পেটের বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। 
  • শসা খাওয়ার পর আপনার শরীরে যদি পানি স্বল্পতা থাকে, সে ক্ষেত্রে  কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হতে পারে। শসা খাওয়ার সাথে পর্যাপ্ত পানি পান করা উচিত। 
  • অতিরিক্ত শসা খেলে পেটে অ্যাসিডিটি ও অস্বস্তিকর অনুভূতি হতে পারে। 
  • প্রয়োজনের তুলনায় শসা বেশি খেলে হজমে সমস্যা হওয়া সম্ভাবনা রয়েছে।
  • বেশি পরিমাণে শসা খেলে অতিরিক্ত পানি শোষণের কারণে পানি শূন্যতা দেখা দিতে পারে। 
  • বেশি পরিমাণে শসা খেলে শরীরের পটাশিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যেতে পারে, যা হৃদযন্ত্রের সমস্যা সৃষ্টির কারণ।
  • শসার কিছু অ্যান্টি নিউট্রিয়েন্টস থাকে, যা বেশি খেলে শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজ শোষণ বাধাগ্রস্ত করতে পারে।  
  • শসায় রয়েছে ট্যানিন এবং শর্করা, যা আপনার পেটে গ্যাস্ট্রিক এবং জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করতে পারে। 
  • গর্ভবতী মহিলাদের জন্য অতিরিক্ত শসা খাওয়া ক্ষতিকর হতে পারে। গর্ভাবস্থায় পরিমিত পরিমাণে শসা খাওয়া উচিত। 
  • অতিরিক্ত শসা খেলে শরীর অত্যধিক ঠাণ্ডা হয়ে যেতে পারে, যার ফলে শারীরিক দুর্বলতা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। 
  • অতিরিক্ত শসা খেলে শীতকালে শরীর বেশি শীতল হয়ে যেতে পারে, যা সর্দি কাশির মত সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। 
  • যদি শসার উপরের খোসা ভালোভাবে পরিষ্কার না করা হয়, তবে তা আমাদের শরীরের ত্বকের জন্য সমস্যা সৃষ্টির কারণ হতে পারে। 
  • অতিরিক্ত শসা খেলে মাথাব্যথার মত সমস্যা হতে পারে। 
  • শসায় হালকা তিতা স্বাদ রয়েছে, যা অনেকের ক্ষেত্রে অরুচি ও বমি ভাব সৃষ্টি করতে পারে। 
  • বেশি পরিমাণে শসা খেলে সোডিয়ামের পরিমাণ ব্যাপকভাবে বেড়ে যেতে পারে, যা উচ্চ রক্তচাপের কারণ।
  • শসা খাওয়ার পর কিছু মানুষের শরীরে অ্যালার্জি দেখা দিতে পারে, যার ফলে চুলকানি বা ফুসকুড়ি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 
  • যাদের পেটে সমস্যা রয়েছে, বেশি পরিমাণে শসা খেলে অস্বস্তিকর অনুভূতি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। 
  • অতিরিক্ত শসা খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা এলোমেলো হয়ে যেতে পারে। ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে পরিমাণ মেপে শসা খাওয়া উচিত। 
  • পেটের বিভিন্ন সমস্যা থাকলে শসা খাওয়ার পর সেই সমস্যাগুলো ব্যাপকভাবে বেড়ে যেতে পারে। 
  • শসা যদিও কম ক্যালোরি যুক্ত খাবার তবে অতিরিক্ত খেলে শরীরে অতিরিক্ত পানি বেড়ে যেতে পারে, যা ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। 

লেখকের শেষ কথাঃ শসা খাওয়ার উপকারিতা 

শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে এতক্ষণ আমরা বিস্তারিত আলোচনা করলাম এবং শসা খাওয়ার ভালো ও মন্দ উভয় বিষয় সম্পর্কে জানতে পারলাম। 

আমার এই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন বিষয়ের উপর ব্লগ লেখা হয়। এতক্ষণের আলোচনায় আশা করি আপনি শসা খাওয়ার বিষয়ে প্রচুর তথ্য পেয়েছেন এবং উপকৃত হয়েছেন। নিয়মিত এই ওয়েবসাইট ভিজিট করলে বিভিন্ন বিষয়ের উপর তথ্য পাবেন। আপনাদের সু-স্বাস্থ্য কামনা করে, আজ এখানেই শেষ করছি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আর্টমহলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url