কালোজিরা খাওয়ার অসাধারণ উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে ১৮টি কার্যকরী তথ্য জানুন

কালোজিরা খাওয়ার অসাধারণ উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আজ আমরা বিস্তারিত আলোচনা করতে চলেছি। কালোজিরায় উচ্চ মানের ঔষধি গুণ থাকায় যুগ যুগ ধরে এর ব্যবহার সম্পর্কে জানা যায়।

কালোজিরা-খাওয়ার-অসাধারণ-উপকারিতা

কালোজিরার উপকারী ও অপকারী বিভিন্ন বিষয়ের সাথে আজ আমরা আরও বিস্তারিত জানব, গর্ভাবস্থায় কালোজিরা খেলে কি হয় এ সম্পর্কে। তবে আর দেরি না করে, চলুন শুরু করা যাক।

পেজ সূচিপত্রঃ কালোজিরা খাওয়ার অসাধারণ উপকারিতা 

কালোজিরা খাওয়ার অসাধারণ উপকারিতা 

কালোজিরা খাওয়ার অসাধারণ উপকারিতা সম্পর্কে বলতে গেলে, কালোজিরার বৈজ্ঞানিক নাম Nigella Sativa, যা প্রাচীনকাল থেকে আয়ুর্বেদ এবং ভেষজ চিকিৎসার ক্ষেত্রে জনপ্রিয় ভাবে ব্যবহার হয়ে আসছে। বিভিন্ন খাবারের সাথে কালোজিরার ব্যবহার খাবারের স্বাদ ও পুষ্টি উপাদান বৃদ্ধিতে ব্যাপক সহায়ক হয়ে থাকে।

কালোজিরার অসাধারণ ১৮টি উপকারিতা 

  • নিয়মিত কালোজিরা খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়।
  • কালোজিরার পুষ্টি উপাদান ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে এবং রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
  • কালোজিরায় রয়েছে থাইমোকুইনোন, যা শরীরের ব্যথা, লাল ভাব ও বিভিন্ন সংক্রমণ কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
  • কালোজিরা ত্বকের বিভিন্ন দাগ, ব্রণ ও ফুসকুড়ি কমাতে সাহায্য করে।
  • কালোজিরায় থাকা উপাদান চুলের গোঁড়া মজবুত করে এবং খুশকি দূর করতে সহায়ক হয়।
  • কালোজিরা থাকা উপাদান গ্যাস, বদহজম এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।
  • কালোজিরা খেলে শরীরের মেটাবোলিজম বৃদ্ধি পায় এবং দ্রুত ওজন কমাতে সহায়ক হয়।
  • কালোজিরা খেলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
  • কালোজিরা লিভারকে সুস্থ রাখে এবং কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  • কালোজিরায় থাকা উপাদান শরীরে অ্যান্টি অক্সিডেন্টের মাত্রা বৃদ্ধি করে এবং ক্ষতিকর ফ্রি র‍্যাডিকেল থেকে কোষকে রক্ষা করে।
  • কালোজিরায় থাকা অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান শ্বাসনালী পরিষ্কার করে এবং শ্বাসকষ্ট কমাতে সহায়ক হয়।
  • কালোজিরায় থাকা থাইমোকুইনোন উপাদান ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রোধ করে ক্যান্সার থেকে আমাদের শরীরকে মুক্তি দেয়।
  • কালোজিরা খেলে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত হয় এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।
  • উচ্চ রক্তচাপ কমাতে কালোজিরার বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
  • পেটের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে কালোজিরায় বেশ উপকারিতা পাওয়া যায়।
  • কালোজিরা মুখের ব্যাকটেরিয়া কমিয়ে দেয় এবং দুর্গন্ধ দূর করে।
  • কালোজিরা খেলে পাকস্থলীর অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
  • কালোজিরা খেলে ভালো ঘুম হয় এবং শরীরের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে ব্যাপক কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

গর্ভাবস্থায় কালোজিরা খেলে কি হয় 

গর্ভাবস্থায় কালোজিরা খেলে কি হয় এ সম্পর্কে বলতে গেলে, গর্ভাবস্থায় খাবার বাছাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কারণ, এ সময় গর্ভবতী মায়ের সুস্থতার উপর গর্ভস্থ শিশুর সুস্থতা ও বিকাশ নির্ভর করে। কালোজিরা ভেষজ ঔষধ এবং পুষ্টিগুণ সম্পন্ন উপাদান হিসেবে ব্যাপক প্রচলিত, যা গর্ভাবস্থায় খুবই ভালো উপকার দিয়ে থাকে।  

গর্ভাবস্থায় কালোজিরা খাওয়ার ১০টি উপকারিতা 

  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে গর্ভাবস্থায় কালোজিরার ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। 
  • গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য একটি সাধারণ সমস্যা, যা কালোজিরা খেলে উপকার পাওয়া যায়। 
  • গর্ভাবস্থায় রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে কালোজিরা খুবই ভালো কাজ করে। 
  • কালোজিরা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি থেকে মুক্ত রাখে। 
  • কালোজিরায় থাকে ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৬, যা গর্ভবতী মায়ের স্নায়ুর কার্যকারিতা উন্নত করে। 
  • গর্ভাবস্থায় কোমর ও মাংসপেশির ব্যথা কমাতে কালোজিরা কার্যকরী ভূমিকা রাখে। 
  • কালোজিরায় থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট শিশুর কোষের বিভিন্ন ক্ষতি রোধ করে এবং সঠিক বৃদ্ধি বজায় রাখে।
  • কালোজিরা শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে ভূমিকা রাখে। 
  • কালোজিরা বেশি খেলে জরায়ুর সংকোচন হতে পারে, যা গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
  • গর্ভাবস্থায় কালোজিরা খাওয়ার বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরী বিষয়। 

গর্ভাবস্থায় কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম 

গর্ভাবস্থায় কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে এখন আমরা বেশ কিছু বিষয় আলোচনা করব। গর্ভাবস্থায় সঠিক খাদ্যাভ্যাস গর্ভবতী মা ও শিশুর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কালোজিরা গর্ভাবস্থায় খুব ভালো ফলাফল দিয়ে থাকে। কালোজিরা খাওয়ার বিষয়ে সব সময় পরিমাণ মেনে চলা উচিত। গর্ভাবস্থায় কালোজিরা বেশি খেলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। 

গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন ১-২ গ্রাম কালোজিরা খাওয়া নিরাপদ হয়ে থাকে। কালোজিরার ভালো উপকারিতা পেতে ১ চিমটি কালোজিরা গরম পানিতে দিয়ে খেতে পারেন। কালোজিরা পাউডার দুধ ও মধুর সাথে মিশিয়ে খেলেও ভালো উপকার পাওয়া যায়। আপনি চাইলে রান্নার মসলায় সামান্য কালোজিরা ব্যবহার করলে ভালো উপকার পাবেন। 

আরও পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার উপকারিতা 

গর্ভাবস্থায় খালি পেটে কালোজিরা খাওয়া উচিত হবে না। গর্ভাবস্থার প্রথম ৩ মাস কালোজিরা না খাওয়াই ভালো। গর্ভাবস্থার শেষের দিকে কালোজিরা খাওয়া বন্ধ করে দিবেন। নিরাপদ সময়ে কালোজিরা খাওয়ার ক্ষেত্রে খুব কম পরিমাণে খাবেন। গর্ভাবস্থায় কালোজিরা খাওয়ার বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আপনার শরীরের অবস্থা বুঝে কালোজিরা খাওয়া উচিত। 

গর্ভাবস্থায় কালোজিরা ও মধু খাওয়ার উপকারিতা 

গর্ভাবস্থায় কালোজিরা ও মধু খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে এখন আমরা আলোচনা করব। এই সময় খাবারের পুষ্টিগুণ বিবেচনা করা অত্যন্ত জরুরী। কালোজিরা ও মধু দুইটি উপাদান পুষ্টি উপাদানে ভরপুর। গর্ভাবস্থায় কালোজিরা ও মধু একসাথে খেলে বিশেষ স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া সম্ভব। এ বিষয়ে চলুন, আরও বিস্তারিত জেনে নেই। 

কালোজিরা ও মধু একসাথে খেলে শরীর রোগমুক্ত থাকে এবং অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন সমস্যা দূর হয়ে যায়। শরীরকে ডিটক্সিফাই করতে এই দুটি উপাদান খুবই কার্যকর। কালোজিরায় থাকে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান, যা বিভিন্ন সংক্রমণ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। সর্দি-কাশি ও জ্বর হওয়া প্রতিরোধ করতে কালোজিরা ও মধুর ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। 

আরও পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়ার উপকারিতা

কালোজিরা ও মধু একসাথে খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং পেটের যাবতীয় সমস্যা দূর করে দেয়। গর্ভবতী মায়ের শরীরে পুষ্টি দ্রুত শোষণ করতে কালোজিরা ও মধুর ভূমিকা রয়েছে। গর্ভবতী মায়ের মানসিক চাপ কমাতে এই দুটি উপাদান ব্যাপক সহায়তা করে থাকে। শরীরের ক্লান্তি দূর করে প্রয়োজনীয় শক্তি প্রদান করতে কালোজিরা ও মধুর ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে।

কালোজিরার পুষ্টি উপাদান 

কালোজিরার পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে বলতে গেলে, গর্ভাবস্থায় আপনি যে খাবার গ্রহণ করবেন সে বিষয়ে জেনে ও বুঝে খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভাবস্থায় শরীর খুবই স্পর্শকাতর হয়ে থাকে এবং গর্ভস্থ শিশুর শারীরিক বিষয়ের উপর চিন্তা করে খাওয়া-দাওয়া করা উচিত। কালোজিরায় থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হল। 

কালোজিরার-পুষ্টি-উপাদান

১০০ গ্রাম কালোজিরার পুষ্টি উপাদান 

নম্বর উপাদান পরিমাণ
অ্যানার্জি ৩৩৪ কিলো ক্যালরি।
প্রোটিন ১৬.৮৬ গ্রাম।
ফ্যাট ৩৩.৩৩ গ্রাম।
কার্বোহাইড্রেট ৩৫.৬৪ গ্রাম।
চিনি ২.২৫ গ্রাম।
ভিটামিন বি১ ০.৪০৩ মিলিগ্রাম।
ভিটামিন বি২ ০.১৭৭ মিলিগ্রাম।
ভিটামিন বি৩ ৪.৫৭৯ মিলিগ্রাম।
ফলিক অ্যাসিড ১০৫ মাইক্রোগ্রাম।
১০ ক্যালসিয়াম ৯৩১ মিলিগ্রাম।
১১ আয়রন ৬.২৩ মিলিগ্রাম।
১২ ম্যাগনেসিয়াম ৩৬৬ মিলিগ্রাম।
১৩ ফসফরাস ৫৬৬ মিলিগ্রাম।
১৪ পটাশিয়াম ১৬৯৪ মিলিগ্রাম।
১৫ সোডিয়াম ৮৮ মিলিগ্রাম।
১৬ জিংক ৫.০৩ মিলিগ্রাম।
১৭ পানি ৭.৮৫ গ্রাম।
১৮ ফাইটোস্টেরলস ৯৩ মিলিগ্রাম।

কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা 

কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার একটি বিশেষ উপকারিতা হল, এতে থাকা সক্রিয় উপাদান সরাসরি এবং সম্পূর্ণরূপে শরীরের শোষিত হয়। কালোজিরা চিবিয়ে খেলে এর গুণাগুণ কোন অংশে নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। কালোজিরা খাওয়ার অসাধারণ উপকারিতার মধ্যে আপনার শরীরকে দীর্ঘ জীবন ভালো ও কর্মক্ষম রাখতে কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। 

কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার ফলে দাঁত-মাড়ি এবং মুখের সব ধরনের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায় এবং মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়ে যায়। কাঁচা কালোজিরায় অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান সম্পূর্ণরূপে থাকার কারণে এটি জীবাণুমুক্ত মুখ ও গলা রাখতে খুবই সহায়ক ভূমিকা রাখে। আপনার যদি নিঃশ্বাসের সমস্যা থাকে তা সম্পূর্ণরূপে সমাধান করে দেবে কালোজিরা। 

আরও পড়ুনঃ বিট খাওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা ও অপকারিতা

কালোজিরা চিবিয়ে খেলে পেটের কৃমি দূর হয়ে যায় এবং হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়। নিয়মিত কালোজিরা চিবিয়ে খেলে শরীরের বিপাক ক্রিয়া সক্রিয় হয় এবং অতিরিক্ত চর্বি কমে যায়। শরীরের মেটাবোলিজম বাড়াতে নিয়মিত কালোজিরা চিবিয়ে খেতে পারেন। পিত্ত থলির কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার ব্যাপক সুবিধা রয়েছে। 

টানা সাত দিন কালোজিরা খেলে কি হয় 

টানা সাত দিন কালোজিরা খেলে কি হয় এ সম্পর্কে বলতে গেলে, দীর্ঘদিন ধরে প্রাকৃতিক চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে কালোজিরা। বলা হয়ে থাকে মৃত্যু ব্যতীত সকল রোগের ঔষধ এই কালোজিরা। কালোজিরা বিভিন্নভাবে আমরা ব্যবহার করে থাকি। আমরা যদি টানা সাতদিন নিয়ম করে কালোজিরা খাই, সে ক্ষেত্রে কি উপকার পাব, চলুন জেনে নেই। 

টানা সাত দিন কালোজিরা খেলে লিভারের বিষাক্ত পদার্থ দূর হয়ে যায় এবং এর কার্যক্ষমতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। নিয়মিত কালোজিরা খেলে মনোযোগ এবং স্মৃতিশক্তি উন্নত হয়, যা পড়াশোনা এবং মানসিক বিভিন্ন কাজে একাগ্রতা বাড়াতে সাহায্য করে। আপনার যদি চোখের কোন সমস্যা থাকে, সে ক্ষেত্রে টানা ৭ দিন কালোজিরা খেলে প্রাথমিক পর্যায়ের ফল বুঝতে পারবেন। 

আরও পড়ুনঃ কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

টানা ৭ দিন কালোজিরা খেলে আপনার অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি হয়, যা হজমের ক্ষেত্রে ব্যাপক সহায়ক। অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রমের কারণে যদি আপনার পেশি এবং জয়েন্টে ব্যথা হয়, সে ক্ষেত্রে টানা ৭দিন কালোজিরা খেলে ব্যাপক উপকার পাবেন। এটি আপনার রক্ত পরিষ্কারের ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে। এছাড়াও শরীরে হরমোনের ভারসাম্য, দ্রুত ক্ষত সারাতে ও ঘামের দুর্গন্ধ কমাতে খুবই উপকারী হবে। 

রাতে কালোজিরা খেলে কি হয় 

রাতে কালোজিরা খেলে কি হয় এ সম্পর্কে বলতে গেলে, কালোজিরার বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা পেতে দিন ও রাতের যে কোনও সময় খাওয়া যেতে পারে। ঘুমের মধ্যে শরীরের কার্যক্রম ভালোভাবে হয়ে থাকে, এ ক্ষেত্রে রাতে কালো জিরা খেলে আরও সুন্দরভাবে এই উপকারিতা আমরা পেতে পারি। 

রাতে-কালোজিরা-খেলে-কি-হয়

রাতে কালোজিরা খেলে হজমশক্তি উন্নত হয়। সারাদিন খাওয়া-দাওয়ার ফলে পাকস্থলীকে একটু আরাম দেওয়া হয় রাতে কালোজিরা খাওয়ার মাধ্যমে। সারাদিন আপনি যে খাবার গ্রহণ করেন তা রাতে কালোজিরা খাওয়ার মাধ্যমে শরীরে ভালোভাবে শোষিত হয়। রাতে কালোজিরা খেয়ে ঘুমালে পরদিন সকালে আপনি এর উপকারিতা সুন্দরভাবে বুঝতে পারবেন। 

রাতে কালোজিরা খেয়ে ঘুমালে খুব ভালো ঘুম হয়। কালোজিরায় থাকা প্রাকৃতিক উপাদান আপনার স্নায়ুকে শিথিল করে এবং মানসিক চাপ কমিয়ে দিতে সাহায্য করে। আপনার যদি অনিদ্রার সমস্যা থেকে থাকে, সে ক্ষেত্রে রাতে কালোজিরা খেয়ে ঘুমানোর অভ্যাস করুন। আপনার শরীরের ক্ষতিকর উপাদান গুলো ভালোভাবে দূর করতে রাতে কালোজিরা খাওয়ার বিকল্প নেই।

কালোজিরা খাওয়ার অপকারিতা 

কালোজিরা খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে বলতে গেলে, এতক্ষণ আমরা কালোজিরার বিভিন্ন উপকারী গুণ সম্পর্কে জানতে পারলাম। কালোজিরা বেশি এবং অনিয়ন্ত্রিত ভাবে খেলে বেশ কিছু সমস্যা হতে পারে। পরিমাণ মেপে কালোজিরা খেলে পুষ্টি উপাদান ভালোভাবে পাওয়া যায়। কালোজিরা খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে, চলুন আরও কিছু তথ্য জেনে নেই। 

রক্তচাপ কমিয়ে দেয়াঃ অতিরিক্ত কালোজিরা খেলে রক্তচাপ অনেক কমে যেতে পারে,   যা নিম্ন রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। 

গর্ভপাতের সম্ভাবনাঃ গর্ভাবস্থায় বেশি পরিমাণে কালোজিরা খেলে জরায়ুর সংকোচন তৈরি হয় এবং গর্ভপাতের ঝুঁকি থেকে যায়। 

পেটের সমস্যাঃ অতিরিক্ত কালোজিরা খেলে পেটে গ্যাস, বদ হজম ও অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। 

অ্যালার্জির সমস্যাঃ কালোজিরা বেশি খেলে ত্বকে লাল হয়ে ফুলে যাওয়া,   চুলকানি সহ অ্যালার্জির অন্যান্য প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। 

রক্ত পাতলা হয়ে যাওয়াঃ অতিরিক্ত কালোজিরা খেলে রক্ত পাতলা হয়ে যায়, যার ফলে বিভিন্ন সার্জারি বা আঘাতের পর অতিরিক্ত রক্তপাত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।

শুক্রাণুর পরিমাণ কমে যাওয়াঃ আপনি যদি অতিরিক্ত কালোজিরা খেয়ে থাকেন, সে ক্ষেত্রে শুক্রাণুর সংখ্যা ও গুণগত মান কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।  

কিডনি সমস্যা হওয়াঃ দীর্ঘদিন নিয়মিত কালোজিরা খেলে কিডনি ও লিভারের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। 

শরীরের পানি শুকিয়ে যাওয়াঃ কিছু ক্ষেত্রে কালোজিরা বেশি খেলে মুখ শুকিয়ে যেতে পারে এবং তৃষ্ণা বেড়ে যেতে পারে।

ব্লাড সুগার কমে যাওয়াঃ ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে কালোজিরা বেশি খেলে ব্লাড সুগার অতিরিক্ত কমে যেতে পারে, যা শারীরিক সমস্যার কারণ।  

ঔষধের কার্যকারিতা কমিয়ে দেওয়াঃ আপনি যদি ব্লাড প্রেশার বা ডায়াবেটিসের ঔষধ খেয়ে থাকেন, সে ক্ষেত্রে কালোজিরা বেশি পরিমাণে খেলে ঔষধের কার্যকারিতা কমে যেতে পারে। 

লেখকের শেষ কথাঃ কালোজিরা খাওয়ার অসাধারণ উপকারিতা 

কালোজিরা খাওয়ার অসাধারণ উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে এতক্ষণ আমরা বিস্তারিত আলোচনা করলাম এবং কালোজিরা খাওয়ার বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে পারলাম। 

আমার এই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন বিষয়ের উপর ব্লগ পোস্ট করা হয়। এতক্ষণের আলোচনায় আশা করি বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন এবং উপকৃত হয়েছেন। নিয়মিত এই ওয়েবসাইটটি ভিজিট করলে বিভিন্ন বিষয়ের উপর তথ্য পাবেন। আপনাদের সুস্বাস্থ্য কামনা করে, আজ এখানেই শেষ করছি। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আর্টমহলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url