সৌদি আরব যাওয়ার আগে যে বিষয়গুলো জানা জরুরি, কার্যকরী তথ্য জানুন

সৌদি আরব যাওয়ার আগে যে বিষয়গুলো জানা জরুরী সে সম্পর্কে আজ আমরা বিস্তারিত আলোচনা করতে চলেছি। বর্তমান সময়ে আমাদের দেশ থেকে কাজের উদ্দেশ্যে সৌদি আরবে প্রচুর পরিমাণে মানুষ যাচ্ছে এবং সৌদি আরব সরকার সারা পৃথিবী থেকে প্রচুর পরিমাণে মানুষ তাদের দেশে কাজের জন্য নিচ্ছে।

সৌদি-আরব-যাওয়ার-আগে-যে-বিষয়গুলো-জানা-জরুরী

সৌদি আরব যাওয়ার আগে বিভিন্ন বিষয়ের সাথে আজ আমরা আরও বিস্তারিত জানতে চলেছি, সৌদি আরব যেতে কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন হয় সে সম্পর্কে। তবে আর দেরি না করে, চলুন শুরু করা যাক।

পেজ সূচিপত্রঃ সৌদি আরব যাওয়ার আগে যে বিষয়গুলো জানা জরুরী

সৌদি আরব যাওয়ার আগে যে বিষয়গুলো জানা জরুরী

সৌদি আরব যাওয়ার আগে যে বিষয়গুলো জানা জরুরী এ সম্পর্কে বলতে গেলে, আপনি যখন বিদেশ গিয়ে কাজ করবেন বলে চিন্তা করেছেন তখন আপনার বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরব যাওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয় ও কাগজপত্রের সম্মুখীন হতে হবে। এ বিষয়গুলো যদি আপনি সঠিকভাবে না করতে পারেন আপনাকে অনেক সমস্যায় পড়তে হবে।

সৌদি আরব যাওয়ার আগে টোটাল বিষয় সম্পর্কে যদি আপনার ধারণা থাকে, সে ক্ষেত্রে কোন অবস্থানেই আপনার সমস্যা হওয়ার কথা নয়। আজকের এই আর্টিকেল এ এই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব, যে বিষয় না জানলে আপনি সৌদি আরব যাওয়ার বিষয়ে ভালো ফলাফল পাবেন না।

আপনার বয়স এবং অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করবে আপনি কি ধরনের কাজ করবেন সে বিষয়ে আজ জানতে পারবেন। সৌদি আরবে বিভিন্ন ধরনের কাজ রয়েছে, সেখান থেকে আপনার উপযোগী কোন কাজটা হতে পারে সে বিষয়ে জেনেও বুঝে আপনাকে কাজের উদ্দেশ্যে ওই দেশে যেতে হবে। চলুন এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জেনে নেই।

সৌদি আরব যেতে কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন হয়

সৌদি আরব যেতে কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন হয় এ সম্পর্কে বলতে গেলে, আপনি কে এবং আপনি কি জানেন এ সম্পর্কে সম্পূর্ণ বিষয় লিপিবদ্ধ থাকে আপনার কাগজপত্রে। আপনি দেশের বৈধ নাগরিক না অবৈধ অথবা বিভিন্ন ফৌজদারি মামলা আপনার নামে আছে কি না বা আপনি কি কি বিষয়ে দক্ষ এ সমস্ত বিষয়ে আপনার কাগজপত্রে উল্লেখ থাকে। এজন্য কাগজপত্র অত্যন্ত জরুরি বিষয়।

বৈধ পাসপোর্টঃ আপনার পাসপোর্টের মেয়াদ অন্তত ১বছর থাকতে হবে।

জাতীয় পরিচয় পত্রঃ আপনি কোন দেশের নাগরিক এবং বৈধ নাগরিক কি না, সে বিষয়টি আপনারা জাতীয় পরিচয় পত্র দেখে বোঝা যাবে।

মেডিকেল সার্টিফিকেটঃ এই সার্টিফিকেটটি আপনার স্বাস্থ্যগত কোন সমস্যা আছে কি না তা প্রকাশ করবে এবং যে সমস্ত স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে বিদেশে যেতে পারবেন না, সে বিষয় সম্পর্কে তারা ভালোভাবে বুঝতে পারবে।

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটঃ এই সার্টিফিকেটটি প্রমাণ করবে যে, আপনি দেশের বৈধ নাগরিক কি না এবং কোন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত আছেন কি না এ বিষয়ে।

স্কিল সার্টিফিকেটঃ এই সার্টিফিকেটটি আপনার কি দক্ষতা আছে সে বিষয় প্রকাশ করবে, যাতে কোম্পানি ভালোভাবে আপনার সম্পর্কে বুঝতে পারে।

স্পন্সর বা কোম্পানির চুক্তিপত্রঃ আপনি যে কাজের জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন বা কোন ধরনের অনুমোদন আছে কি না এ বিষয়ে ক্লিয়ার করবে আপনার এই কাগজ।

এই বিষয়গুলো বেসিক্যালি প্রয়োজন হয়। আপনার যদি এই সমস্ত কাগজপত্র ওকে থাকে, সে ক্ষেত্রে আপনি সৌদি আরব কাজের উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে পারেন। আপনাদের যাদের এই সমস্ত কাগজপত্র নেই, তারা সৌদি আরব যাওয়ার আগে এই কাগজপত্র গুলো ঠিকঠাক করবেন। যদি কোন সমস্যা থাকে, তা সমাধান করবেন।

সৌদি আরবে কোন কাজের চাহিদা বেশি

সৌদি আরবে কোন কাজের চাহিদা বেশি এই সম্পর্কে বলতে গেলে, বিভিন্ন ধরনের কাজের উদ্দেশ্যে সৌদি আরবে লোক নিয়োগ করা হয়। সৌদি আরবে কাজের প্রচুর সুযোগ রয়েছে। যে সমস্ত কাজে সবচেয়ে বেশি লোক নিয়োগ হয় সে বিষয়ে, চলুন জেনে আসি।

সৌদি-আরবে-কোন-কাজের-চাহিদা-বেশি

নির্মাণ খাতঃ  শ্রমিক, মেশন, প্লাম্বার এবং ইলেকট্রিশিয়ান, নির্মাণ খাতে কাজ করার উদ্দেশ্যে সৌদি আরব যেতে পারেন। সৌদি আরবে সবচেয়ে বেশি এই খাতে লোক নিয়োগ করা হয়।

পরিষেবা খাতঃ হাউস কিপিং, ড্রাইভার এবং ক্লিনার এই সেক্টরে প্রচুর মানুষ সৌদি আরবে যেয়ে কাজ করে থাকে।

আরও পড়ুনঃ আর্ট মহল ওয়েবসাইটে কি বিষয়ে পোস্ট লেখা হয়

হসপিটালটি সেক্টরঃ হোটেল স্টাফ, কিচেন হেল্পর এবং ক্যাটারিং কর্মী এই সেক্টরে কাজ করে থাকে।

কারখানাঃ উৎপাদন শ্রমিক এবং ফ্যাক্টরি টেকনিশিয়ান এই খাতে কাজ করে থাকে।

টেকনিক্যাল খাতঃ এসি মেকানিক, মেশিন অপারেটর এবং টেকনিক্যাল হেল্পার এই খাতে প্রচুর মানুষ কাজ করে থাকে। 

মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম বড় দেশ সৌদি আরব হওয়ায় এই দেশে কাজের সুযোগ সব সময় থাকে। আপনারা যারা বিদেশে চাকরি করতে আগ্রহী, তাদের জন্য সবচেয়ে সহজ গন্তব্য হল সৌদি আরব। সৌদি আরবে যেয়ে আপনি আশানুরূপ কাজ করতে পারবেন।

সৌদি আরব যেতে কি শিক্ষাগত যোগ্যতা ও দক্ষতার প্রয়োজন

সৌদি আরব যেতে কি শিক্ষাগত যোগ্যতা ও দক্ষতার প্রয়োজন এ বিষয়ে এখন আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব। দক্ষ শ্রমিকের সারা পৃথিবীব্যাপী বেশ মূল্যায়ন রয়েছে। আপনি যদি কোন বিষয়ে দক্ষ হয়ে সৌদি আরব যান, সে ক্ষেত্রে আপনার নির্দিষ্ট কাজ পেয়ে যাবেন এবং আশানুরূপ বেতন ও পাবেন।

শিক্ষাগত যোগ্যতা

  • অদক্ষ বা সাধারণ কাজের জন্য বিশেষ কোন শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন হয় না।
  • টেকনিক্যাল কাজের জন্য এসএসসি বা সমমানের সার্টিফিকেট থাকতে হয়।
  • ইঞ্জিনিয়ারিং বা চিকিৎসা খাতের জন্য উচ্চ শিক্ষার প্রয়োজন হয়।

দক্ষতা

ভাষা জ্ঞানঃ আরবি বা ইংরেজি ভাষায় প্রাথমিক ধারণা থাকতে হয়।

টেকনিক্যাল স্কিলঃ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি চালানো, নির্মাণ কাজ বা অন্যান্য টেকনিক্যাল দক্ষতার প্রয়োজন হয়।

আরও পড়ুনঃ আর্ট মহল ওয়েবসাইটে কি সঠিক তথ্য পাওয়া যায়

ব্যবস্থাপনা ও যোগাযোগ দক্ষতাঃ হোটেল বা ক্যাটারিং খাতে কাজের জন্য ব্যবস্থাপনার জ্ঞান প্রয়োজন হয়।

এ জাতীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা ও দক্ষতা আপনার থাকলে আপনি ভালোভাবে সৌদি আরবে যেয়ে কাজ করতে পারবেন। অদক্ষ শ্রমিকদের জন্য যেহেতু শিক্ষাগত যোগ্যতার অত প্রয়োজন নেই, সেহেতু স্পষ্টভাবে বলা যায়, যে কেউ সৌদি আরবে যেয়ে ভালোভাবে কাজ করতে পারে।

সৌদি আরবে কোন কাজের বেতন কেমন

সৌদি আরবে কোন কাজের বেতন কেমন এই বিষয়ে আমাদের ভালোভাবে জেনে সৌদি আরব যেতে হবে। অনেক সময় এমন হয়, আপনি যে কাজে দক্ষ সে কাজে ভালো বেতন হচ্ছে না, সে ক্ষেত্রে আপনি যে কোন কাজে যেতে পারেন। আবার আপনি যে কাজে দক্ষ সেই কাজ পেয়ে গেলে আপনি ভালো অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

সৌদি-আরবে-কোন-কাজের-বেতন-কেমন

অদক্ষ শ্রমিকঃ মাসিক বেতন ৮০০ থেকে ১২০০ রিয়াল হয়ে থাকে, যা বাংলা টাকায় কম বেশি ২৪,০০০ থেকে ৩৮,০০০ টাকা।  

নির্মাণ কর্মীঃ মাসিক বেতন ১২০০ থেকে ১৮০০ রিয়াল হয়ে থাকে, যা বাংলা টাকায় কম বেশি ৩৮,০০০ থেকে ৫৭,০০০ টাকা।

টেকনিক্যাল পেশাঃ এসি ম্যাকানিক বা ইলেকট্রিশিয়ান এর বেতন হতে পারে ১৮০০ থেকে ২৫০০ রিয়াল, যা বাংলা টাকায় কম বেশি ৩৮,০০০ থেকে ৭৯,০০০ টাকা।

হোটেল ও রেস্টুরেন্ট কর্মীঃ এই সেক্টরে সাধারণত ১৫০০ থেকে ২০০০ রিয়াল বেতন হয়ে থাকে, যা বাংলা টাকায় কম বেশি ৪৭,০০০ থেকে ৬৩,০০০ টাকা।

চিকিৎসক বা ইঞ্জিনিয়ারঃ উচ্চ দক্ষতার জন্য এই সেক্টরে ৫,০০০ রিয়াল বা তার বেশি বেতন হতে পারে, যা বাংলা টাকায় কম বেশি ১৫৯,০০০ বা তাঁর বেশি হয়ে থাকে।

এটা একটা আনুমানিক ধারণা।  আপনার কাজের দক্ষতার উপর এই বেতন নির্ভর করবে। আপনি যদি ভালো কাজ দেখাতে পারেন এবং তাদের চাওয়া অনুযায়ী কাজ করতে পারেন, আপনার বেতন প্রতিনিয়ত বাড়তে পারে বা আপনি বেশি বেতনে কাজ পেতে পারেন।

সৌদি আরবে কত ধরনের ভিসা রয়েছে

সৌদি আরবে কত ধরনের ভিসা রয়েছে এ সম্পর্কে এখন আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব। আমাদের মনে হয়, হয়তো শুধুমাত্র এক ধরনের ভিসা সৌদি আরবে যাওয়ার ক্ষেত্রে রয়েছে কিন্তু এ বিষয় আপনাদের আজ ক্লিয়ার হতে চলেছে। চলুন আরও বিস্তারিত জেনে নেই।

ওয়ার্ক ভিসাঃ যে কোন কাজের জন্য প্রচুর মানুষ এই ভিসাতে সৌদি আরব যেয়ে থাকে।

রেসিডেন্স ভিসাঃ যারা দীর্ঘ মেয়াদে সৌদি আরবে বসবাস করতে চান, তাদের জন্য এই ভিসা রয়েছে।

ভিজিট ভিসাঃ আপনার কোন পরিবারের সদস্য সৌদি আরবে থাকলে আপনি তাদের সাথে সাক্ষাৎ করতে চাইলেন এই ভিসার মাধ্যমে দেখা করতে পারবেন।

বিজনেস ভিসাঃ বিভিন্ন ব্যবসা কার্যক্রমের জন্য আপনি এই ভিসা ব্যবহার করে সৌদি আরব যেতে পারবেন।

আরও পড়ুনঃ আর্ট মহল সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

হজ্জ ও ওমরা ভিসাঃ ধর্মীয় কাজে আপনি এই ভিসা ব্যবহার করে হজ্জ ও ওমরা পালন করতে পারবেন।

ইনভেস্টর ভিসাঃ আপনি যদি সৌদি আরবে ইনভেস্ট করে ব্যবসা করতে চান, সে ক্ষেত্রে এই ভিসা আপনার জন্য।

সৌদি আরবে যাওয়ার ক্ষেত্রে আপনি কোন ভিসা নিয়ে সৌদি আরবে যেতে চান, এ বিষয়ে ক্লিয়ার হয়ে আপনাকে সৌদি আরব যেতে হবে। শুধুমাত্র ওয়ার্কার রা সৌদি আরব যায় না। বিভিন্ন ধরনের ব্যক্তিবর্গ বিভিন্ন কাজে ও কারণে সৌদি আরব যেতে পারে।

লেখকের শেষ কথাঃ সৌদি আরব যাওয়ার আগে যে বিষয়গুলো জানা জরুরী

সৌদি আরবে যাওয়ার আগে যে বিষয়গুলো জানা জরুরী সে বিষয় সম্পর্কে উপরিউক্ত আলোচনা থেকে আমরা প্রাথমিক ধারণা পেলাম। আমরা যারা সৌদি আরব যেতে আগ্রহী, এই বিষয়গুলো মাথায় রেখে আমাদের কাজ করতে হবে।

আমার এই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন বিষয়ের উপর ব্লগ পোস্ট করা হয়। এতক্ষণের আলোচনায় আশা করি আপনি আশানুরূপ তথ্য পেয়েছেন এবং উপকৃত হয়েছেন। নিয়মিত এই ওয়েবসাইটটি ভিজিট করলে বিভিন্ন বিষয়ের উপর তথ্য পাবেন। আপনাদের সুন্দর ভবিষ্যৎ কামনা করে, আজ এখানেই শেষ করছি। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আর্টমহলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url