লাউ খাওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা ও কিছু অপকারিতা, ২৫ টি জেনে রাখুন

লাউ খাওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা ও কিছু অপকারিতা সম্পর্কে আজ আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব। শীতকালীন সবজি হিসেবে লাউ পরিচিত হলেও বছরের বিভিন্ন সময় লাউ পাওয়া যায়। 

লাউ-খাওয়ার-স্বাস্থ্য-উপকারিতা

লাউ এর বিভিন্ন উপকারী ও অপকারী দিকের সাথে আজ আমরা বিশেষভাবে জানতে চলেছি, গর্ভাবস্থায় লাউ খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। তবে আর দেরি না করে, চলুন শুরু করা যাক। 

পেজ সূচিপত্রঃ লাউ খাওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা 

লাউ খাওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা 

লাউ খাওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে বলতে গেলে, লাউ আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্য সম্মত উপাদান হিসেবে পরিচিত। লাউ এর মধ্যে প্রচুর পুষ্টিগুণ সম্পন্ন উপাদান, ভিটামিন, খনিজসহ মানব দেহের প্রয়োজনীয় অনেক উপাদান রয়েছে । লাউ আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি, ওজন কমানো, ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করা সহ নানাবিধ উপকার করে থাকে। 

  • লাউয়ে ক্যালোরি কম থাকে এবং প্রচুর ফাইবার যুক্ত হওয়ায় এটি ওজন কমাতে বেশ সহায়ক হয়। 
  • লাউ খেলে আমাদের হজম শক্তি উন্নত হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করতে খুবই কার্যকরী। 
  • লাউয়ে পটাশিয়াম রয়েছে যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হয়ে থাকে।  
  • লাউয়ে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ উপাদান, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক হয়। 
  • লাউ রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী।
  • লাউয়ে ভিটামিন সি থাকে, যা ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়ক হয়ে হয়। 
  • লাউয়ে থাকা ভিটামিন এবং খনিজ চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। 
  • লাউয়ে থাকা ভিটামিন সি এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। 
  • লাউ আমাদের কিডনির স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং কিডনির পাথর প্রতিরোধ করতে সহায়ক হয়। 
  • ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম এর প্রাচুর্যতা রয়েছে লাউয়ে, যা আমাদের হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।  
  • লাউ আমাদের পেটের গ্যাস কমাতে সহায়ক হয়।
  • লাউ খেলে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। 
  • লাউয়ে রয়েছে প্রচুর আয়রন সমৃদ্ধ উপাদান, যা রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। 
  • লাউ আমাদের শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে এবং ক্লান্তি অনুভূতি কমিয়ে দেয়। 
  • মুত্রাশয়ের কার্যক্রমকে উন্নত করতে পারে লাউ, যা আমাদের কিডনি ভালো রাখতে সহায়ক হয়।
  • লাউয়ে প্রচুর পানি থাকে, যা আমাদের পানি শূন্যতা প্রতিরোধ করে। 
  • লাউ আমাদের পাচনতন্ত্রের কার্যক্রমকে উন্নত করে। 
  • লাউ রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। 
  • লাউ খেলে আমাদের মস্তিষ্কের কার্যক্রম উন্নত হয়। 
  • লাউয়ে রয়েছে ভিটামিন এ, যা আমাদের চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে ব্যাপক কার্যকরী হয়ে থাকে। 
  • এন্টি ইনফ্লামেটরি সম্পন্ন গুণ রয়েছে লাউয়ে, যা আমাদের প্রদাহ দূর করতে সাহায্য করে। 
  • লাউ শরীরের টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে। 
  • লাউ আমাদের হৃদস্পন্দন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে থাকে। 
  • লাউ পেশির কার্যক্রমকে উন্নত করে এবং সুস্থ রাখে। 
  • লাউ আমাদের শরীরের মেটাবোলিজম উন্নত করে। 

গর্ভাবস্থায় লাউ খাওয়ার উপকারিতা 

গর্ভাবস্থায় লাউ খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বলতে গেলে, গর্ভাবস্থায় মায়েদের সঠিক পুষ্টি নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, লাউ এ ক্ষেত্রে খুবই ভালো ভূমিকা পালন করে। লাউ খাওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতার মধ্যে, লাউয়ে থাকা পুষ্টি উপাদান গর্ভবতী মায়ের শরীর ও গর্ভের শিশুর সঠিক বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। লাউ গর্ভবতী মায়ের শরীরে কেমন উপকারিতা দেয় সে বিষয়ে, চলুন জেনে নেই। 

ফাইবার সমৃদ্ধ উপাদানঃ লাউয়ে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা গর্ভবতী মায়ের হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। 

হাইড্রেশনঃ লাউয়ে প্রায় ৯৫ ভাগ পানি রয়েছে, যা গর্ভকালীন সময়ে শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে। 

কম ক্যালরিযুক্ত সবজিঃ লাউ কম ক্যালরির খাবার, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এবং অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। 

ভিটামিন সিঃ লাউয়ে রয়েছে ভিটামিন সি, যা গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে। 

পটাশিয়ামঃ লাউয়ে থাকে প্রচুর পটাশিয়াম, যা গর্ভবতী মায়ের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং প্রি একলামসিয়া থেকে রক্ষা করে।

ফোলেটঃ লাউয়ে থাকে ফোলেট, যা গর্ভের শিশুর সঠিক স্নায়ুতন্ত্রের গঠন ও উন্নতিতে সাহায্য করে থাকে। 

এন্টিঅক্সিডেন্টঃ লাউয়ে থাকে প্রচুর এন্টিঅক্সিডেন্ট সম্পন্ন উপাদান, যা গর্ভবতী মায়ের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।  

হৃদরোগ প্রতিরোধঃ লাউ গর্ভবতী মায়ের হৃদরোগ প্রতিরোধ করে থাকে এবং হৃদস্পন্দন নিয়ন্ত্রণে রাখে।

শক্তি বৃদ্ধি করেঃ লাউ গর্ভবতী মায়ের শক্তি বৃদ্ধিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। 

ত্বকের স্বাস্থ্যঃ গর্ভকালীন সময়ে অনেকের ত্বকের সমস্যা দেখা দেয় যা লাউ খেলে সমস্ত সমস্যা দূর হয়ে যাবে। 

লাউ খেলে কি ঠাণ্ডা লাগে 

লাউ খেলে কি ঠাণ্ডা লাগে এই কথার প্ররিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, লাউ খাওয়ার সাথে ঠাণ্ডা লাগার সম্পর্ক নিয়ে বেশ কিছু বিতর্ক রয়েছে। লাউ একটি পুষ্টিকর এবং হালকা জাতীয় সবজি, যা আমরা অনেকেই নিয়মিত খেয়ে থাকি। লাউকে অনেকে স্বর্গীয় সবজি বা জান্নাতি সবজি হিসেবে বলে থাকে। এ জাতীয় কথা থেকে আমরা বুঝতে পারি লাউয়ের রয়েছে প্রচুর উপকারী গুনাগুন। 

উপকারী গুনাগুন যতই থাকুক না কেন যেহেতু ঠাণ্ডা লাগার বিষয়টি এসেছে সেহেতু বলতে হয় লাউ এ মানব শরীরে ঠাণ্ডা লাগার মত এমন কোন উপাদান নাই। অন্যভাবে বলা যায় ঠাণ্ডা লাগার মত সমস্যা বা সরাসরি কোন সম্পর্ক এখনও স্পষ্টভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। লাউয়ে প্রচুর পানি থাকে, যা শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে। এটি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।  

আরও পড়ুনঃ হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম

তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা মানে তাপমাত্রা কমিয়ে দেওয়া নয় এই বিষয়টি আমাদের বুঝতে হবে। তবে, লাউতে শরীর ঠাণ্ডা করার মত উপাদান রয়েছে। শীতকালে লাউ খেলে ঠাণ্ডা জাতীয় সমস্যা হলেও হতে পারে। লাউ খেলে সবার শরীরে একই রকম অনুভূতি দিবে এমনটা নয়। এক একজনের শরীরে এক এক ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তবে যাদের ঠাণ্ডার সমস্যা রয়েছে, শীতকালে তাদের লাউ খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। 

লাউয়ের রসের উপকারিতা 

লাউয়ের রসের উপকারিতা সম্পর্কে এখন আমরা আলোচনা করব। লাউয়ের রস একটি পুষ্টিকর পানীয় হিসেবে এর বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। এটি অনেক প্রাচীন সময় থেকে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। লাউয়ের রস শরীরের হাইড্রেশন বজায় রাখে এবং বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানের যোগান দেয়। গরমে সতেজতা প্রদান করে এবং শরীর ঠান্ডা রাখে। 

  • লাউয়ের রস শরীর থেকে টক্সিন দূর করতে সহায়ক হয়। 
  • লাউয়ের রসে ক্যালরি কম থাকায় ওজন কমাতে সাহায্য করে থাকে। 
  • লাউয়ের রস হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। 
  • লাউয়ের রস রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। 
  • লাউয়ের রস শরীরের তাৎক্ষণিক শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
  • লাউয়ের রসে থাকা ভিটামিন ও মিনারেল উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। 
  • লাউয়ের রস ত্বককে মসৃণ ও উজ্জ্বল করে। 
  • লাউয়ের রস হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। 
  • লাউয়ের রস রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, যা ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে ব্যাপক কার্যকর। 
  • লাউয়ের রস শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং গরমে শীতল অনুভূতি দেয়। 

আরও পড়ুনঃ মুলার উপকারিতা ও অপকারিতা

লাউয়ের রস খাওয়ার প্রবণতা আমাদের দেশে কম হলেও এই উপকারিতা গুলো জানার কারণে আমরা এই রস পান করে শারীরিক উপকারিতা পেতে পারি। ঠাণ্ডা জাতীয় সবজি হিসেবে লাউয়ের বেশ সুনাম রয়েছে। লাউয়ের রস আমাদের মস্তিষ্কের শীতলত দেয় এবং শরীরের বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের যোগান দেয়। 

লাউয়ের পুষ্টি উপাদান   

লাউয়ের পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে এখন আমরা বেশ কিছু তথ্য জানতে চলেছি। লাউ আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর উপাদান হিসেবে বেশ পরিচিত। লাউয়ে রয়েছে প্রচুর পানি, ভিটামিন এবং মিনারেল। লাউ আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে। 

লাউয়ের-পুষ্টি-উপাদান

১০০ গ্রাম লাউয়ের পুষ্টি উপাদান

নম্বর উপাদান পরিমাণ
পানি ৯২ গ্রাম
এনার্জি ১৪ ক্যালরি
প্রোটিন ০.৬ গ্রাম
ফ্যাট ০.০১ গ্রাম
কার্বোহাইড্রেট ৩.৩৯ গ্রাম
শর্করা ২.৯ গ্রাম
ফাইবার ০.৫ গ্রাম
ভিটামিন সি ১০ মি. গ্রা
ভিটামিন বি৯ ৬ মাইক্রো গ্রাম
১০ পটাশিয়াম ১৫০ মি. গ্রা
১১ সোডিয়াম ২ মি. গ্রা
১২ ক্যালসিয়াম ২৬ মি. গ্রা
১৩ ম্যাগনেসিয়াম ১১ মি. গ্রা
১৪ ফসফরাস ১৩ মি গ্রা

লাউ খেলে কি ওজন কমে 

লাউ খেলে কি ওজন কমে এ সম্পর্কে এখন আমরা জানতে চলেছি। লাউ একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর সবজি, যা আমাদের খাদ্য তালিকায় খুবই সাধারণ ভাবে থাকে। লাউ খুবই কম ক্যালরিযুক্ত একটি সবজি, যা আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। লাউ খেলে অতিরিক্ত ক্ষুধা অনুভুতি কমে যায়, যার কারনে বেশি খাওয়া থেকে আমরা বিরত থাকতে পারি। 

লাউয়ে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে, যা শরীরকে পানির অভাব থেকে মুক্তি দেয় এবং দেহের তাপমাত্রা ভালো রাখে। কম ক্যালরি এবং প্রচুর পানি থাকায় লাউ একটি আদর্শ খাদ্য হিসেবে বিবেচিত। যারা ওজন কমাতে চান, তাদের জন্য লাউ একটি আদর্শ খাদ্য হিসেবে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় থাকতে পারে।

আরও পড়ুনঃ পাথরকুচি পাতার ক্ষতিকর দিক 

লাউয়ে থাকা পটাশিয়াম এবং অন্যান্য মিনারেল রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এবং শরীরের ফ্লুইড ব্যালান্স বজায় রাখে। সঠিক পরিমাণে লাউ খাওয়া স্বাস্থ্যকর ডায়েটের অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। ওজন কমানোর ক্ষেত্রে লাউয়ের ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। লাউয়ের সঠিক পুষ্টি উপাদান পেতে রান্নার সময় কম তেল ও মসলা ব্যবহার করা উচিত এবং সঠিক পদ্ধতিতে রান্না করা উচিত। 

লাউ শাকের উপকারিতা 

লাউ শাকের উপকারিতা সম্পর্কে এখন আমরা বিস্তারিত জানব। লাউ শাক আমাদের গ্রামাঞ্চলে সচরাচর পাওয়া যায়। শহর অঞ্চলেও সবজির দোকানে লাউ শাক একটি জনপ্রিয় উপাদান। লাউশাকে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি উপাদান, যা আমাদের শরীর গঠন এবং শরীর ভালো রাখতে খুবই কার্যকরী হয়ে থাকে। লাউ শাক বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়। 

লাউশাকে রয়েছে ভিটামিন এ, সি, কে, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, এই পুষ্টি উপাদান গুলি শরীরের বিভিন্ন কার্যক্রমে সহায়তা করে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নতিতে অবদান রাখে। লাউ শাকে প্রচুর ফাইবার রয়েছে, যা হজম প্রক্রিয়ায় ভালো ফলাফল দেয়। লাউ শাকে থাকা ভিটামিন সি এবং অন্যান্য এন্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। 

আরও পড়ুনঃ বরই পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা 

লাউ শাকের কার্যকরী উপাদান আমাদের শরীরকে বিভিন্ন রোগের হাত থেকে রক্ষা করে। হৃদরোগ প্রতিরোধে লাউ শাকের ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। কারণ, লাউ শাকে পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম উপাদান পাওয়া যায়। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে লাউ শাক বেশ কার্যকর হয়ে থাকে। ত্বকের যত্নে লাউ শাকের ব্যাপক গুরুত্ব রয়েছে। লাউ শাক খেলে ত্বক মসৃণ এবং ত্বকের দাগ দূর হয়ে যায়। 

লাউ এ কি ভিটামিন রয়েছে

লাউ এ কি ভিটামিন রয়েছে এ বিষয়ে বলতে গেলে, লাউ আমাদের খাদ্য তালিকায় একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং প্রয়োজনীয় সবজি হিসেবে যুগ যুগ ধরে জনপ্রিয়। লাউয়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পানি, যা শরীরের পানি স্বল্পতা রোধ করে। লাউয়ে ভিটামিন ও মিনারেল থাকার কারণে আমাদের শরীরে বিভিন্ন উপকারী উপাদান সরবরাহ করে।

লাউ-এ-কি-ভিটামিন-রয়েছে

উপাদান পরিমাণ
ভিটামিন সি ১০ মি. গ্রা
ভিটামিন বি৯ ৬ মাইক্রো গ্রাম
ভিটামিন এ খুবই সামান্য
ভিটামিন বি২ ০.০২ মি. গ্রা
ভিটামিন বি৩ ০.৩ মি গ্রা

এই ভিটামিন আমাদের শরীরের বিভিন্ন কার্যক্রমে ব্যাপক সহায়ক হয় এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে বিশেষভাবে কার্যকর। লাউয়ে থাকা পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় এবং শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করে দিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

 লাউয়ের অপকারিতা 

লাউয়ের অপকারিতা সম্পর্কে বলতে গেলে, লাউ একটি পুষ্টিকর এবং প্রয়োজনীয় সবজি হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয় হলেও অতিরিক্ত বা অনুপযুক্ত ভাবে খেলে কিছু সমস্যার কারণ হতে পারে। আমাদের দৈনন্দিন খাদতালিকায় লাউ রাখার সময় এই বিষয়গুলো মাথায় রাখা জরুরী। চলুন, বিস্তারিত জেনে নেই।

  • লাউয়ে রয়েছে অতিরিক্ত ফাইবার, যা বেশি খেলে গ্যাস বা অস্বস্তি হতে পারে।
  • লাউয়ে প্রচুর পানি রয়েছে, যা বেশি খাওয়ার ফলে শরীরে অতিরিক্ত পানি জমতে পারে,    এতে আমাদের ইলেক্ট্রোলাইট ব্যালান্সে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
  • লাউয়ে প্রচুর পটাশিয়াম রয়েছে, বেশি পটাশিয়াম শরীরে প্রবেশ করলে হাইপারকালেমিয়া হতে পারে, যা হার্টের জন্য ক্ষতিকর।
  • অতিরিক্ত ভিটামিন সি লাউতে রয়েছে, যা গ্রহণে ডায়রিয়া এবং পেটে ব্যথা হতে পারে।
  • লাউতে রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট, যা বেশি খেলে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস তৈরি হতে পারে, যার ফলে শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • লাউয়ে অতিরিক্ত ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে, যা খেলে ডায়রিয়া এবং অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • লাউতে প্রচুর ক্যালসিয়াম রয়েছে, যা বেশি খেলে কিডনির পাথর তৈরির ঝুঁকি হতে পারে।
  • লাউতে রয়েছে সোডিয়াম, যা বেশি খেলে উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে।
  • লাউ খাওয়ার ফলে অনেকের গ্যাসের সমস্যা হতে পারে, যা খাওয়ার আগে আমাদের বুঝে খেতে হবে।
  • কিছু মানুষ লাউ খেয়ে অ্যালার্জি সমস্যায় পড়েছেন, এ জাতীয় সমস্যা হলে কম পরিমাণ লাউ খেতে হবে।
  • কখনো কখনো লাউয়ে টক্সিন থাকতে পারে, যা খাদ্য বিষক্রিয়ার সৃষ্টি করে শরীরের বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
  • লাউ আমাদের রক্তচাপ কমানোর ক্ষেত্রে উপকারী হলেও অতিরিক্ত লাউ খেলে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে।
  • কিছু মানুষের ক্ষেত্রে লাউ খাওয়ার পর বমি ভাব ও মাইগ্রেনের সমস্যা দেখা দিয়েছে, যা খুবই নগণ্য হিসেবে বিবেচিত।

লাউ এর এ জাতীয় সমস্যা বিশ্লেষণ করে আমাদের লাউ খেতে হবে। পরিমিত পরিমাণে লাউ খেলে শারীরিক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। লাউ বেশি পরিমাণে খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। লাউ খেয়ে কোন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হলে সাথে সাথে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

লেখকের শেষ কথাঃ লাউ খাওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা 

লাউ খাওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা ও কিছু অপকারিতা সম্পর্কে এতক্ষণ আমরা বিস্তারিত আলোচনা করলাম এবং লাউয়ের বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য জানতে পারলাম, যা আমাদের খাওয়া-দাওয়ার ক্ষেত্রে চিন্তা ভাবনা করতে সহায়তা করবে।

আমার এই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন বিষয়ের উপর ব্লগ পোস্ট করা হয়। এতক্ষণের আলোচনায় আশা করি আপনারা বিষয় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন এবং উপকৃত হয়েছেন। নিয়মিত এই ওয়েবসাইটটি ভিজিট করলে বিভিন্ন ধরনের তথ্য পাবেন। আপনাদের সুস্বাস্থ্য ও সুন্দর জীবন কামনা করে, এখানেই শেষ করছি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আর্টমহলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url