ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা ও বিভিন্ন ব্যবহার সম্পর্কে জানুন
ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা সম্পর্কে আজ আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব। বর্তমান সময়ে ড্রাগন ফল একটি জনপ্রিয় ফল হিসেবে বেশ পরিচিতি লাভ করেছে।
ড্রাগন ফলের খোসার বিভিন্ন ব্যবহারের সাথে আজ আমরা বিশেষভাবে জানতে চলেছি, ড্রাগন ফলের খোসা দিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি সম্পর্কে। তবে আর দেরি না করে, চলুন শুরু করা যাক।
পেজ সূচিপত্রঃ ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা
- ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা
- ড্রাগন ফলের খোসা দিয়ে ফেসপ্যাক
- ড্রাগন ফলের খোসা দিয়ে চা
- ড্রাগন ফলের খোসা দিয়ে জ্যাম
- ড্রাগন ফলের খোসা দিয়ে তেল তৈরি
- ড্রাগন ফলের খোসার সরাসরি ব্যবহার
- ড্রাগন ফলের খোসা দিয়ে জেলি
- ড্রাগন ফলের খোসার জুস
- ড্রাগন ফলের খোসা ও তেজপাতা রেমিডি
- লেখকের শেষ কথাঃ ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা
ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা
ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা সম্পর্কে বলতে গেলে, সাধারণত আমরা ড্রাগন ফল খাওয়ার পর খোসা ফেলে দিয়ে থাকি, তবে আজকের পর থেকে আমরা আর ড্রাগন ফলের খোসা ফেলে না দিয়ে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করতে পারি। ড্রাগন ফলের খোসাতে বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্যকর উপাদান রয়েছে, যা আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী হতে পারে।
ড্রাগন ফলের খোসায় উচ্চমানের এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা আমাদের শরীরের ফ্রি রেডিকেল গুলোর সাথে লড়াই করে এবং ক্যান্সার ও অন্যান্য রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এই ফলের খোসাতে রয়েছে ডায়েটারি ফাইবার, যা আমাদের হজমে বেশ সহায়ক হয়ে থাকে। ড্রাগন ফলের খোসা ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার হওয়ায় এটি আমাদের ক্ষুধা অনুভূতি কমিয়ে দিতে পারে, যার মাধ্যমে আমরা শরীরের বাড়তি ওজন কমাতে পারে।
ড্রাগন ফলের খোসায় থাকা ভিটামিন ও মিনারেল ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে এবং ত্বকের কোষ পুনর্জন্মের প্রক্রিয়া গতিশীল করে। এই খোসাতে রয়েছে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস, যা হাড়ের শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং অস্টিওপোরোসিসের মতো রোগ প্রতিরোধ করে থাকে। ড্রাগন ফলের খোসায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অন্যান্য উপাদানে রয়েছে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
ড্রাগন ফলের খোসা দিয়ে ফেসপ্যাক
ড্রাগন ফলের খোসা দিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করা খুবই সহজ এবং ত্বকের জন্য উপকারী। এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে ও আর্দ্রতা ধরে রাখে। ড্রাগন ফলের খোসা দিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করতে আমাদেরকে এই খোসাটি ভালোভাবে ধুয়ে ছোট ছোট টুকরা করে পেস্ট বানাতে হবে। যদি ড্রাগন ফলের খোসা শুকনা হয়, সে ক্ষেত্রে ভালোভাবে গুড়া করে নিতে হবে। ড্রাগন ফলের খোসা দিয়ে ফেসপ্যাক তৈরীর ক্ষেত্রে যে সমস্ত উপকরণ নিতে হবে তা নিম্নে বর্ণনা করছি।
- ড্রাগন ফলের খোসা দুইটা
- সিদ্ধ চাল ১ চামচ
- এক কাপ পানি।
এই উপকরণ গুলি উচ্চ তাপমাত্রায় ১০ মিনিট মত সিদ্ধ করতে হবে। সিদ্ধ উপকরণ গুলি ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করতে হবে এবং ছাকনি দিয়ে ছেঁকে নিতে হবে। তার সাথে যুক্ত করতে হবে,
- এলোভেরা জেল এক চামচ
- নারকেল তেল এক চামচ
- চিনি এক চামচ (প্রয়োজনের ক্ষেত্রে)
এই উপকরণগুলি ভালোভাবে মিশিয়্ মুখে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যবহার করা যেতে পারে। একটি কাঁচের বোতলে সর্বোচ্চ ১৫ দিন ফ্রিজে সংরক্ষণ করে ব্যবহার করা যেতে পারে।
আপনাদের সামনে আরেকটি ফেসপ্যাক তৈরির পদ্ধতি উপস্থাপন করছি।
- ড্রাগন ফলের খোসা (শুকনা বা সতেজ)
- মধু এক টেবিল চামচ
- টক দই এক টেবিল চামচ
- গোলাপ জল দুই তিন ফোটা (এই উপাদানটি আপনারা চাইলে ব্যবহার নাও করতে পারেন)
ড্রাগন ফলের খোসা ভালোভাবে ধুয়ে ছোট ছোট টুকরা করে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। খোসা যদি শুকনা হয়, সে ক্ষেত্রে ভালোভাবে গুড়া করে পানি দিয়ে মিশিয়ে পেস্ট করে নিতে হবে। ড্রাগন ফলের খোসার পেস্ট এর সাথে এক চা চামচ মধু, এক টেবিল চামচ দই মিশিয়ে নিতে হবে এবং ভালোভাবে নাড়তে হবে যেন ফেসপ্যাক এর মত মসৃণ ভাবে তৈরি হয়।
মুখ এবং গলার ত্বক সহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে এই ফেসপ্যাক ব্যবহার করলে ত্বক সতেজ থাকবে এবং ত্বকের উপরিভাগের বিভিন্ন কালো দাগ দূর হয়ে যাবে। ১৫ থেকে ২০ মিনিট এই ফেসপ্যাকটি মুখে লাগিয়ে রাখতে হবে, শুকিয়ে গেলে হালকা হাতে মাসাজ করে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। মুখ পরিষ্কার করার পর হালকা ময়েশচারাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে।
ড্রাগন ফলের খোসা দিয়ে চা
ড্রাগন ফলের খোসা দিয়ে চা কিভাবে তৈরি হয়, এ বিষয়ে এখন আমরা বিস্তারিত জানবো। এই চা খেলে শরীরে এন্টি অক্সিডেন্ট ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি পূরণ হবে। আপনি চাইলে দুধ চা তৈরি করতে পারেন আবার দুধ ব্যতীত রং চা তৈরি করা যেতে পারে। রং চা তৈরি করার ক্ষেত্রে যে সমস্ত উপকরণ প্রয়োজন তা দেখে নিন।
- ড্রাগন ফলের খোসা
- চা পাতা (পরিমাণ মতো)
- পানি দুই কাপ
- মধু বা চিনি (প্রয়োজনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করবেন)
- আদা এক টুকরা
- লেবুর রস এক টেবিল চা চামচ (প্রয়োজনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে)
ড্রাগন ফলের খোসা ভালোভাবে ধুয়ে ছোট ছোট টুকরা করে কেটে নিতে হবে। একটি পাত্রে দুই কাপ পানি নিয়ে সাথে চা পাতা দিয়ে চুলায় গরম করতে হবে। পানি গরম হয়ে গেলে ড্রাগন ফলের খোসার টুকরা গুলো ৫ থেকে ১০ মিনিট হালকা আঁচে ফুটাতে হবে। এরপর চুলা থেকে নামিয়ে পানি ছেঁকে নিয়ে, মধু বা চিনি, আদা ও লেবুর রস মিশিয়ে চায়ের মত পান করা যেতে পারে।
আরও পড়ুনঃ পেঁপের উপকারিতা ও অপকারিতা
দুধ চা বানানোর ক্ষেত্রে ড্রাগন ফলের খোসা ভালোভাবে ধুয়ে দুধ ও চা পাতার সাথে ১০ মিনিট জ্বাল দিতে হবে। তারপর সম্পূর্ণ উপকরণ চুলা থেকে নামিয়ে ভালোভাবে ছেঁকে নিতে হবে। যাদের ডায়াবেটিস বা মিষ্টি খেতে সমস্যা নেই তারা মিষ্টি যোগ করে পান করতে পারেন। চায়ের সাথে ড্রাগন ফলের খোসার মিশ্রণ আপনাকে বাড়তি প্রশান্তি ও শারীরিক পুষ্টি দিবে।
ড্রাগন ফলের খোসা দিয়ে জ্যাম
ড্রাগন ফলের খোসা দিয়ে জ্যাম তৈরি করা একটি সৃজনশীল ও স্বাস্থ্যকর পদ্ধতি। এটি এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায়, স্বাস্থ্যকর এবং মিষ্টি স্বাদের জন্য দারুন একটি রেসিপি। ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতার সাথে জ্যাম তৈরি করার ক্ষেত্রে যে সমস্ত উপকরণ প্রয়োজন, তা নিম্নে উপস্থাপন করছি।
- ড্রাগন ফলের খোসা এক কাপ। (ছোট ছোট টুকরো করে কাটা)
- চিনি হাফ কাপ।
- লেবুর রস এক টেবিল চামচ।
- পানি। (এক কাপের চার ভাগের এক ভাগ)
- পেকটিন। (জ্যাম ঘন করার জন্য ব্যবহৃত হয়)
প্রথমে ড্রাগন ফলের খোসা গুলো ১০-১৫ মিনিট ভালোভাবে সিদ্ধ করতে হবে। সিদ্ধ হয়ে যাওয়ার পর এটি ব্লেন্ডারে দিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করতে হবে। তারপর ছাঁকনি দিয়ে সুন্দর মত ছেঁকে নিতে হবে। ছেঁকে নেওয়ার পর এই উপকরণটি আবার চুলায় বসাতে হবে। চিনি ও লেবুর রস মিশিয়ে মাঝারি আঁচে গরম করতে হবে এবং নাড়তে থাকতে হবে। কিছু সময় নাড়াচাড়া করার পর এটি ঘন হয়ে আসলে নামিয়ে নিতে হবে।
আরও পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় চালতার উপকারিতা
ড্রাগন ফলের খোসা দিয়ে জ্যাম তৈরি করার ক্ষেত্রে যদি উপকরণটি আরো থকথকে শক্ত করার প্রয়োজন হয়, সে ক্ষেত্রে পেকটিন যোগ করতে হবে, এতে থকথকে উপকরণটি তুলনামূলক শক্ত জ্যামের মত অনুভূতি দিবে। কাচের বয়ামে এই জ্যাম দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করে রাখা যেতে পারে। তবে বারবার ব্যবহারের কারণে এটি দ্রুত খেয়ে ফেলা উচিত, নইলে নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।
ড্রাগন ফলের খোসা দিয়ে তেল তৈরি
ড্রাগন ফলের খোসা দিয়ে তেল তৈরি সম্পর্কে বলতে গেলে, এই খোসার বিভিন্ন ধরনের ব্যবহার রয়েছে। সাধারণত এই খোসা দিয়ে তেল তৈরি করার প্রচলন খুব কম। আমরা একটি সহজ ও কার্যকরী তেল তৈরির পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করব। এই খোসা দিয়ে তেল তৈরির উপকরণ নিম্নে উপস্থাপন করছি।
- ড্রাগন ফলের খোসা এক কাপ। (শুকনা বা তাজা)
- নারকেল তেল বা জলপাই তেল হাফ কাপ।
- ভিটামিন ই তেল দুই তিন ফোটা। (ব্যবহার নাও করা যেতে পারে)
- একটি পরিষ্কার বোতল।
চুলার উপর একটি পাত্রে তেল নিতে হবে। ড্রাগন ফলের খোসাগুলো গরম তেলের মধ্যে দিয়ে দিতে হবে। ১৫ থেকে ২০ মিনিট মাঝারি আঁচে গরম করতে হবে এবং মাঝে মাঝে নাড়তে হবে এবং নামিয়ে নিতে হবে। তেল ঠান্ডা হওয়ার জন্য ২০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে এবং একটি ছাকনি বা সুতি কাপড়ে ছেঁকে নিতে হবে।
ছেকে নেওয়া তেল একটি পরিষ্কার কাচের বয়ামে বা বোতলে ভরে রাখতে হবে। এই তেল দিয়ে আপনার মাথা ও চুলের যত্ন নিতে পারবেন, যা প্রাকৃতিকভাবে তৈরি ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া মুক্ত হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। আপনার চুল ও মাথার ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো করতে এই তেলটি অত্যন্ত কার্যকরী হিসেবে উপকার দিবে।
ড্রাগন ফলের খোসার সরাসরি ব্যবহার
ড্রাগন ফলের খোসার সরাসরি ব্যবহার কিছু ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্যগত উপকারিতা এনে দিতে পারে। যদিও আমরা সাধারণভাবে খোসা খাই না, তবে কিছু সৃজনশীল উপায় অবলম্বন করে এটি সরাসরি ব্যবহার করা যায়। ড্রাগন ফলের খোসা ত্বকের জন্য খুবই উপকারী, এটি এন্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ও খনিজে সমৃদ্ধ, যা ত্বককে করে উজ্জল ও মসৃণ।
ড্রাগন ফলের খোসার ভেতরের অংশ নরম হয় এবং এটি সরাসরি ত্বকে প্রাকৃতিক স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এটা হালকা এক্সফলিয়েটর হিসেবে কাজ করে, যা ত্বকের মরা চামড়া দূর করতে সাহায্য করে। ড্রাগন ফলের খোসার ভেতরের অংশ ব্লেন্ড করে মুখে প্যাক হিসেবে ব্যবহার করা যায়, এটি ত্বকের আর্দ্রতা ও উজ্জ্বলতা বাড়াতে সহায়ক হয়।
আরও পড়ুনঃ ত্রিফলার উপকারিতা ও অপকারিতা
ড্রাগন ফলের খোসার উপরে সরাসরি নারকেল তেল বা কাস্টার অয়েল রেখে চুলে মাসাজ করলে চুলের পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি পূরণ হয়। ড্রাগন ফলের খোসার রং সাধারণত গাড় গোলাপি হয়ে থাকে। এটি অন্যান্য খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে প্রাকৃতিক রং হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। চিকন চিকন ফালি করে ড্রাগন ফলের খোসা বিভিন্ন পানীয় এর সাথে ব্যবহার করলে দেখতে সুন্দর লাগে।
ড্রাগন ফলের খোসা দিয়ে জেলি
ড্রাগন ফলের খোসা দিয়ে জেলি তৈরি করলে এটি মজাদার ও স্বাস্থ্যকর একটি জেলি হতে পারে। এই জেলিতে ভিটামিন, মিনারেল ও এন্টিঅক্সিডেন্ট পরিপূর্ণভাবে থাকে। ড্রাগন ফলের খোসা দিয়ে জেলি তৈরি করার ক্ষেত্রে যে সমস্ত নিয়ম মানতে হয়, সে বিষয়ে নিম্নে আলোচনা করছি।
- ড্রাগন ফলের খোসা এক কাপ (ছোট ছোট টুকরো করে কাটা)
- চিনি হাফ কাপ।
- পানি এক কাপ।
- লেবুর রস এক টেবিল চামচ।
- পেকটিন এক টেবিল চামচ।
- জেলি সংরক্ষণের জন্য কাঁচের বয়াম।
ড্রাগনের খোসা ভালোভাবে ধুয়ে, টুকরো করে কেটে, খোসার বাইরের অংশটা ফেলে দিতে হবে, কারণ সেটি অনেক শক্ত হয়ে থাকে। একটি পাত্রে এক কাপ পানি গরম করে তাতে ড্রাগন ফলের খোসার টুকরো গুলো দিয়ে দিতে হবে। ১০ থেকে ১৫ মিনিট খোসা গুলো সিদ্ধ করতে হবে, যাতে সুন্দর নরম হয়ে যায় এবং রস পানিতে ছেড়ে দেয়।
আরও পড়ুনঃ কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
সেদ্ধ করা খোসার মিশ্রণ ঠান্ডা হলে ছেঁকে নিতে হবে, যাতে খোসাগুলো আলাদা হয়ে যায় এবং শুধু রস টুকু থেকে যায়, এই রস জেলির জন্য ব্যবহার করা হবে। ছেকে রাখা রসের মধ্যে হাফ কাপ চিনি, এক টেবিল চামচ লেবুর রস দিয়ে চুলায় বসিয়ে হিট দিতে হবে। মিশ্রণটি ফুটতে শুরু করলে পেকটিন দিয়ে দিতে হবে। মিশ্রন টি যখন ঘন হয়ে আসবে তখন নামিয়ে ঠান্ডা করে সংরক্ষণ করতে হবে।
ড্রাগন ফলের খোসার জুস
ড্রাগন ফলের খোসার জুস তৈরি করা সম্ভব ও এটি একটি ভিন্নধর্মী ও স্বাস্থ্যকর পানীয় হতে পারে। ড্রাগন ফলের খোসায় থাকা পুষ্টি উপাদান যেমনঃ এন্টি অক্সিডেন্ট, ফাইবার এবং ভিটামিন, যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। ড্রাগন ফলের খোসার জুস তৈরি করার ক্ষেত্রে যে সমস্ত উপকরণ প্রয়োজন তা নিম্নে উপস্থাপন করছি।
- ড্রাগন ফলের খোসা এক কাপ (ছোট ছোট করে কাটা)
- পানি দুই কাপ।
- চিনি বা মধু। (পরিমান মত)
- লেবুর রস।
- বরফ কুচি।
প্রথমে ড্রাগন ফলের খোসা ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে, যাতে কোন ময়লা বা কেমিক্যাল না থাকে। বাইরের শক্ত অংশটি ফেলে দিয়ে ভেতরের নরম অংশটি নিতে হবে। একটি পাত্রে দুই কাপ পানি গরম করতে হবে এবং তাতে ড্রাগন ফলের খোসার টুকরো গুলো দিতে হবে। ১০ থেকে ১৫ মিনিট খোসা গুলো সেদ্ধ করার পর এগুলো নরম হয়ে পানির সাথে মিশে যাবে।
খোসাগুলো ছাঁকনিতে ছেঁকে পানি আলাদা করে নিতে হবে। মিশ্রনটি ঠান্ডা হওয়ার পর তার সাথে চিনি বা মধু, লেবুর রস ও বরফ কুচি মিশিয়ে পরিবেশন করা যেতে পারে। ড্রাগন ফলের খোসার জুস খেলে শরীরে পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি পূরণের সাথে সাথে খুবই প্রাণবন্ত অনুভূত হয়। মধু ও লেবুর রস, এই জুসের সাথে মেশানোর কারণে পুষ্টিগুণ অনেক বেড়ে যায়।
ড্রাগন ফলের খোসা ও তেজপাতা রেমিডি
ড্রাগন ফলের খোসা ও তেজপাতা রেমিডি কিভাবে তৈরি হয় এ সম্পর্কে বলতে গেলে, এটি একটি কার্যকরী প্রাকৃতিক রেমিডি হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এই দুটি উপাদান শরীরের নানা সমস্যা দূর করতে সহায়ক হয় এবং এর এন্টি অক্সিডেন্ট গুণ শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তেজপাতা ও ড্রাগন ফলের খোসার রেমিডি তৈরীর বিষয় নিম্নে উপস্থাপন করছি।
- ড্রাগন ফলের খোসা এক কাপ। (ছোট টুকরো করে কাটা)
- তেজপাতা দুই থেকে তিনটি।
- পানি দুই কাপ।
- মধু পরিমান মত।
ড্রাগন ফলের খোসা ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে, যেন ময়লা ও কেমিক্যাল না থাকে এবং তেজপাতা ও ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। একটি পাত্রে দুই কাপ পানি নিয়ে তা গরম করতে হবে। যখন পানি ফুটতে শুরু করবে, তখন ড্রাগন ফলের খোসা ও তেজপাতা গুলো দিয়ে দিতে হবে। ১০-১৫ মিনিট ধরে ফুটাতে হবে যেন খোসার পুষ্টিগুণ ও তেজ পাতার গুনাগুন একসাথে মিশে যায়।
মিশ্রণটি ঠান্ডা হওয়ার পর মধুসহ প্রতিদিন এক থেকে দুইবার পান করলে শারীরিক ব্যাপক উন্নতি পাওয়া সম্ভব। এই রেমিডি শরীর থেকে টক্সিন বের করতে সাহায্য করে এবং অতিরিক্ত ওজন কমানোর ক্ষেত্রে বেশ সহায়ক হয়। এই রেমিডি ব্যবহারের ফলে কোন সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা নেই, তা সত্ত্বেও যদি কেউ কোন সমস্যা অনুভব করেন, সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত হবে।
লেখকের শেষ কথাঃ ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা
ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা সহ বিভিন্ন বিষয় এতক্ষণ আমরা আলোচনা করলাম এবং এও বুঝতে পারলাম, একটি ফেলে দেওয়া খোসা থেকে কত ধরনের পুষ্টিকর খাবার ও পানীয় তৈরি করা যেতে পারে, যা আমাদের শারীরিক অনেক পুষ্টি চাহিদা পূরণে সহায়ক হতে পারে।
আমার এই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন বিষয়ের উপর ব্লগ পোস্ট করা হয়। উপরিউক্ত আলোচনা থেকে আশা করি আপনারা চমৎকার তথ্য পেয়েছেন ও উপকৃত হয়েছেন। নিয়মিত এই ওয়েবসাইটটি ভিজিট করলে বিভিন্ন ধরনের তথ্য পাবেন। আপনাদের সুস্বাস্থ্য কামনা করে, এখানেই শেষ করছি।
আর্টমহলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url