মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের ১০ টি উপায়
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের উপায় সম্পর্কে আজ আমরা বিস্তারিত জানতে চলেছি। অধিক জনসংখ্যার দেশ হিসেবে আমাদের দেশে বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের ক্ষেত্রে মানসিক চাপের প্রবণতা অত্যধিক।
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের সাথে আজ আমরা আরও জানতে চলেছি, মানসিক চাপ কাকে বলে ও বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে। তবে আর দেরি না করে চলুন শুরু করা যাক।
পেজ সূচিপত্রঃ মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের উপায়
- মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের উপায়
- মানসিক চাপ কাকে বলে
- মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে কর্টিসল এর ভূমিকা
- মানসিক চাপের লক্ষণ
- আবেগ নিয়ন্ত্রণ ও মানসিক চাপ মোকাবেলার কৌশল
- মানসিক চাপ ব্যবস্থাপনার কৌশল
- মানসিক চাপ কমানোর ইসলামিক উপায়
- আবেগ নিয়ন্ত্রণ করার উপায়
- মানসিক চাপের নেতিবাচক প্রভাব
- লেখকের শেষ কথাঃ মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের উপায়
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের উপায়
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের উপায় সম্পর্কে বলতে গেলে, মানসিক চাপে থাকেন না এমন মানুষ পাওয়া খুবই কঠিন। একেকজনের মানসিক চাপ একেক রকম। কেউ সহজে দমন করতে পারে আবার কেউ পারেনা। যার কারণে দেখা দেয় হতাশা ও অন্যান্য বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা। মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের দশটি উপায় সম্পর্কে চলুন জেনে আসি।
ধর্মীয় কাজ করাঃ ধর্মীয় কাজ করা হতে পারে আপনার মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের প্রধান উপায়। আবেগ আমাদেরকে বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন দিকে প্রভাবিত করে। এ সময় এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ধর্মীয় কাজ করা উচিত।
মনঃসংযোগ বিচ্ছিন্ন করাঃ আপনি কোন একটি কাজ করতে করতে ক্লান্ত ও অবসন্ন হয়ে পড়েছেন, কোন কিছুই ভালো লাগছে না অনুভূতি কাজ করছে, এ সময় একটু হাঁটাহাঁটি করুন ও বিভিন্ন পজিটিভ বিষয় নিয়ে চিন্তা করুন, ভালো লাগবে।
ওলসন মেথড অনুসরণ করাঃ ২০১২ সালে ডক্টর এনড্রু ওলসন তার বই দ্য ওয়ান মিনিট মেড এ এই পদ্ধতিটি প্রকাশ করেছেন, তা হল ৪-৭-৮ অর্থাৎ কোন একটি আরামদায়ক স্থানে বসে বা শুয়ে আপনার জিহ্বার ডগা উপরের ঠোটের পেছনে রাখুন, তারপর নাক দিয়ে ৪ সেকেন্ডের মধ্যে গভীর শ্বাস টেনে নিন, তারপর ৭ সেকেন্ড নিঃশ্বাস বন্ধ করে রাখুন, তারপর ৮ সেকেন্ড ধীরে ধীরে নিঃশ্বাস ছাড়ুন, এভাবে করে ৪ বার করতে হবে।
আপন মানুষদের সাথে কথা বলাঃ আপন মানুষদের সাথে কথা বলা হতে পারে আপনার মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের একটি মাধ্যম। যখন মানসিক চাপ অনুভব করবেন, তখন প্রিয় মানুষদের সাথে কথা বলুন।
ভ্রমণঃ আপনি যখন মানসিক অবসাদগ্রস্থতা অনুভব করবেন তখন কোথাও ঘুরতে যাওয়া হতে পারে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের অন্যতম বিষয়।
যোগব্যায়ামঃ যোগ ব্যায়াম হতে পারে আপনার মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের অন্যতম বিষয়। যোগব্যায়াম আপনার দীর্ঘকালীন শারীরিক সুস্থতাও বজায় রাখবে।
পছন্দনীয় কাজ করুনঃ যে কাজ করতে আপনার সবচেয়ে ভালো লাগে মন খারাপ থাকলে সেই কাজ করুন, ভালো লাগবে।
মোবাইল থেকে দূরে থাকুনঃ আপনার উপর যখন অবসন্নতা জেঁকে বসবে তখন ডিজিটাল ডিভাইস থেকে দূরে থাকুন, ভালো লাগবে।
প্রকৃতির সান্নিধ্যে আসুনঃ যখন আপনি মানসিক চাপ অনুভব করবেন, তখন পশু প্রাণীর সাথে সময় কাটাতে পারেন বা বিভিন্ন আর্ট ও বনসাই গাছপালা নিয়ে চিন্তা করতে পারেন।
চুইংগাম চিবানোঃ আপনার যখন মন সংযোগের ঘাটতি দেখা দিবে বা অবসন্ন লাগবে তখন চুইংগাম চিবালে আপনার ভালো লাগবে ও মনোযোগ বৃদ্ধি পাবে।
মানসিক চাপ কাকে বলে
মানসিক চাপ কাকে বলে এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, আমাদের জীবন সুন্দর ও মসৃণভাবে কখনো চলতে পারেনা। ভালো-মন্দ, চড়াই-উৎরাই, পাওয়া-না পাওয়া ইত্যাদির মাধ্যমে জীবন পরিচালিত হয়। এই জীবন ভ্রমণের মতো, বিভিন্ন ধরনের অনুভূতি দেখা দেয়। জীবনের এ সমস্ত কর্মকাণ্ড অনেক সময় আমাদেরকে মানসিকভাবে চিন্তিত ও হতাশাগ্রস্ত করে ফেলে।
অনেকে পড়াশুনা করে ভালো ফল না পাওয়া, চাকুরীতে আশানুরূপ উন্নতি করতে না পারা, জীবন যেভাবে চালানোর জন্য মনে মনে কল্পনা করা হয় সেভাবে চলতে না পারা, পছন্দের নারীকে না পাওয়া, অর্থ কষ্ট ইত্যাদি আমাদের জীবনকে সব সময় সমস্যাগ্রস্ত করে তোলে, যা সাধারণভাবে আমরা মানসিক চাপ বলে থাকি।
মানসিক চাপের কারণে সৃষ্টি হয় হতাশা, আর এই হতাশা মানুষের শারীরিক ও মানসিক বিপর্যয়ের কারণ। কোন কোন ব্যক্তি হতাশা থেকে দ্রুত বের হয়ে আসতে পারেন, আবার অনেকে পারেন না। যারা পারেন না তাদের ক্ষেত্রে অনেক সময় দেখা যায় আত্মহত্যা সহ অন্যান্য বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা সৃষ্টির কারণ। তার সাথে পারিবারিক কলহ ও অশান্তি স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দেখা দেয়।
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে কর্টিসল এর ভূমিকা
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে কর্টিসল এর ভূূমিকা সম্পর্কে আমরা এখন আলোচনা করব। কর্টিসল হল অ্যাড্রেনাল গ্রন্থি থেকে বের হওয়া এক ধরনের হরমোন যা নির্গত হওয়ার কারণে বিভিন্ন মানসিক অনুভূতি প্রকাশ পায়। স্বাভাবিকভাবে সকালে কর্টিসলের মাত্রা বেশি থাকে ও রাতে কম থাকে। মানুষ যখন মানসিক চাপে থাকে তখন প্রচুর পরিমাণে কর্টিসল নির্গত হয়।
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের উপায় এর সাথে আমরা বলতে পারি, কর্টিসলকে স্ট্রেস হরমোন নামেও অভিহিত করা হয় কারণ, এই হরমোনটি মানুষের মানসিক চাপ ও আবেগ অনুভূতি ঘটায়। কর্টিসল যখন অধিক পরিমাণে নিঃসৃত হয় তখন এর একটি স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া শরীরে দেখা দেয়, যার কারণে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন আমরা হয়ে থাকি।
আরও পড়ুনঃ মিল্কশেক এর উপকারিতা ও অপকারিতা
অতিরিক্ত কর্টিসল নিঃসরণের কারণে দীর্ঘকালীন শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। যখন মায়েরা গর্ভবতী হন তখন প্রচুর কর্টিসল নির্গত হতে পারে। কর্টিসলের মাত্রা স্বাভাবিক রাখার জন্য বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা রয়েছে। কর্টিসলের বিষয়ে আমাদের ধারণা রাখা উচিত, কারণ শারীরিক ও মানসিক বিভিন্ন অনুভূতির সাথে কর্টিসলের সম্পর্ক রয়েছে।
মানসিক চাপের লক্ষণ
মানসিক চাপের লক্ষণ হিসেবে আমরা বলতে পারি, সর্বপ্রথম আপনার এমন অনুভূতি হবে যে, আপনি বোধহয় জীবনে ভালো কিছুই করতে পারবেন না বা অনেক সময় এমন মনে হতে পারে, আমার সাথে কেন এমন হচ্ছে। সামাজিক ও পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়ে যখন আপনি দীর্ঘক্ষণ একটি বিষয় নিয়ে ভাববেন তখনই আপনি বুঝবেন, আপনি মানসিক চাপে আছেন।
চাকুরী, পড়াশোনা সহ বিভিন্ন বিষয়ের ক্ষেত্রে আমরা যখন বিফল হই, তখনই আমাদের মাথায় চিন্তা এসে ভর করে। আর এই চিন্তা যখন দীর্ঘ সময় মাথার মধ্যে ক্রিয়া করে, তখন কোন কিছুই ভালো লাগেনা ও বিভিন্ন নেতিবাচক চিন্তা মাথায় আসে। এ সমস্ত কর্মকাণ্ড যখন আপনার জীবনের সাথে ঘটতে থাকবে তখনই আপনি বুঝবেন আপনি মানসিক চাপে আছেন।
আরও পড়ুনঃ ব্রয়লার মুরগির ডিমের ক্ষতিকর দিক
অর্থনৈতিক সমস্যা আমাদের সমাজে সবচেয়ে বড় সমস্যা হিসেবে প্রচলিত। আপনি যখন অর্থনৈতিকভাবে অসচ্ছল থাকবেন, তখন আপনার বিভিন্ন মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া, মানুষের সাথে খারাপ ব্যবহার করা ও সমাজের থেকে নিজেকে আলাদা করা সমস্যাগুলো প্রকট আকার ধারণ করবে। এ জাতীয় সমস্যা যখন আপনার জীবনে আসবে তখন আপনি মনে করবেন, আপনি মানসিক চাপে আছেন।
আবেগ নিয়ন্ত্রণ ও মানসিক চাপ মোকাবেলার কৌশল
আবেগ নিয়ন্ত্রণ ও মানসিক চাপ মোকাবেলার কৌশল হিসেবে আমরা বলতে পারি, আপনি যখন মানসিক চাপে আছেন বলে মনে করবেন, তখন বিভিন্ন মোটিভেশনাল কথাবার্তা শুনতে পারেন। মন ভালো করার মতো গান শুনুন। সর্বোপরি চিন্তা করতে হবে আমাকে এই পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে এবং জীবনে ভালো কাজ করতে হবে।
মেডিটেশন করার অভ্যাস মানুষের জীবনে শান্তি এনে দেয়। মানুষের জীবনের প্রত্যেকটি সময় ভালো এবং খারাপ দুই টি বিষয়ের সাথে মিশ্রিত। আপনার সাথে যে খারাপ ঘটনা বা বিষয়ে ঘটেছে, সেটাকে দুইটি দিক বিচার করুন, যেমনঃ এই ঘটনা বা বিষয়ের কারণে আপনার কি ভাল হয়েছে এবং কি খারাপ হয়েছে, এটাকে অনেক ক্ষেত্রে ক্রস এক্সাম বলা হয়।
খেলাধুলা ও শরীর চর্চা করা হতে পারে আবেগ নিয়ন্ত্রণ ও মানসিক চাপ মোকাবেলার কৌশল। মানসিক চাপ মোকাবেলার জন্য আপনাকে চিন্তার বিঘ্ন ঘটাতে হবে, অর্থাৎ আপনার চিন্তাকে খুব দ্রুত অন্য একটি চিন্তার মাধ্যমে পরিবর্তন করতে হবে। কোন একটি বিষয় নিয়ে দীর্ঘক্ষণ ভাবা যাবে না। সব সময় মনে রাখতে হবে, আপনার সাথে খারাপ যা ঘটছে তার ভালো দিক ও আছে।
মানসিক চাপ ব্যবস্থাপনার কৌশল
মানসিক চাপ ব্যবস্থাপনার কৌশল হিসেবে আমরা বলতে পারি, দুই ধরনের মানসিক চাপ আমাদের জীবনে দেখা যায়। দীর্ঘকালীন ও স্বল্পকালীন মানসিক চাপ। মানসিক চাপ ব্যবস্থাপনার কৌশলকে স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট বলা হয়। বিভিন্নভাবে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আজকে আপনাদের সাথে ৪ এ পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করব।
একসেপ্টঃ একসেপ্ট পদ্ধতিটা এমন, আপনি যে পরিবেশ মেইনটেইন করছেন তার মধ্যে এমন যে বিষয়গুলো রয়েছে যা আপনি কখনোই পরিবর্তন করতে পারবেন না এমন বিষয় মেনে নেওয়া এবং আপনার সাথে অপরাধ করেছে এমন কাউকে ক্ষমা করে দেওয়া।
অল্টারঃ কোন একটি কাজ আপনি একা করতে পারছেন না, সে ক্ষেত্রে কৌশলী হয়ে অন্য কারোর সাথে বিষয়টি শেয়ার করে কাজ ভাগাভাগি করে ফেললে মানসিক চাপ কমে যাবে।
এডাপ্টঃ এডাপ্ট শব্দের অর্থ মানিয়ে নেওয়া, অর্থাৎ আপনার রাগকে নিয়ন্ত্রণ করে পরিবেশের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে চললে মানসিক চাপ কমে যাবে।
আরও পড়ুনঃ আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট বোঝার উপায়
এভোয়েডঃ জীবনে চলার পথে এমন অনেক ব্যক্তি ও বিষয় আসে যা আপনার জন্য ক্ষতিকর বা সমস্যার হতে পারে। এমন সব বিষয়গুলো এড়িয়ে চলতে হবে এবং আপনি যে বিষয়ের সাথে জড়িয়ে আছেন তা ভালোভাবে করতে হবে।
মানসিক চাপ কমানোর ইসলামিক উপায়
মানসিক চাপ কমানোর ইসলামিক উপায় হিসেবে আমরা বলতে পারি, মানুষের জীবন সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা দেওয়া রয়েছে ধর্মীয় গ্রন্থে। ধর্মীয় অনুশাসন ও কার্যবিধি সুন্দরভাবে মেনে চললে মানসিক চাপ কমানোর বিষয়ে ফলপ্রসূ সমাধান পাওয়া যায়। আমাদের জীবনকে সুন্দর ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করার জন্য ধর্মীয় বিষয় মেনে চলা উচিত। মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের উপায় এর সাথে চলুন আরও কিছু বিষয় জেনে নেই।
কুরআন তেলাওয়াতঃ কুরআন তেলাওয়াত হতে পারে আপনার মানসিক চাপ কমানোর অন্যতম মাধ্যম। সব সময়ের জন্য কুরআন তেলাওয়াত করলে আপনার জীবন সুন্দর হয়ে উঠবে।
নামাজ আদায়ঃ নিয়মিত নামাজ আদায় করলে নির্দিষ্ট নিয়ম কানুনের মধ্যে আবদ্ধ থাকার ফলে আপনাদের জীবনের অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন, যা মানসিক চাপ সৃষ্টি হওয়ার ক্ষেত্রে বাধা দিবে।
আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়াঃ আল্লাহ আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন তার ইবাদত করার জন্য। যখন আমরা ধর্মীয় বিভিন্ন বিষয় থেকে সরে থাকি, তখন আমাদের মাঝে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।
আরও পড়ুনঃ ফ্রিল্যান্সিং হালাল ইনকামের খোঁজে
দরুদ পড়াঃ নিয়মিত দরুদ পড়লে আল্লাহ আমাদের উপর রহমত প্রদান করে। মানসিক চাপ যখন আমাদের মধ্যে আসবে তখন বেশি বেশি দরুদ পড়তে হবে ও আল্লাহর কথা স্মরণ করতে হবে।
আবেগ নিয়ন্ত্রণ করার উপায়
আবেগ নিয়ন্ত্রণ করার উপায় হিসেবে আমরা বলতে পারি, আমাদের সমাজে ও জীবনে বিভিন্ন ধরনের ঘটনা ঘটে যা আমরা তাৎক্ষণিক ভাবে সমাধান না করে রেগে গিয়ে সমস্যা আরো জটিল করে তুলি ও বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর কাজকর্ম করে থাকি। যার প্রভাব পড়ে নিজের ও অন্যান্যদের উপর। আবেগ নিয়ন্ত্রণের কিছু বিষয় চলুন জেনে নেই।
হুট করে রিএ্যাক্ট না করাঃ অনেক সময় আমরা দেখি যেকোনো সমস্যার ক্ষেত্রে হুট করে রেগে গিয়ে ঝামেলা বাড়িয়ে দেই। এ জাতীয় কাজকর্ম করা যাবে না। বিষয় ভালোভাবে বুঝে শুনে ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তাভাবনা করে কথা বলতে হবে।
সমস্যার সমাধান করাঃ আপনার সামনে যে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে তার সমাধান নিয়ে দ্রুত ভাবতে হবে শুধু শুধু সমস্যা নিয়ে কথা বাড়িয়ে বিষয়ে জটিল না করার চিন্তা করতে হবে।
সচেতন হওয়াঃ মানুষের জীবনে অনেক ধরনের অনুভূতি বিভিন্ন কারণে প্রকাশ পায়। হতাশা, রাগ, ক্ষোভ এগুলো বিষয় আপনার সাথে ঘটলে কেমন অনুভূতি প্রকাশ করেন, সে বিষয়ে সচেতন হতে হবে ও নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে ভালোভাবে বিষয়টি সমাধান করতে হবে।
চিন্তাভাবনা পরিবর্তন করতে হবেঃ চিন্তাভাবনা পরিবর্তন করার বিষয়ে বলতে গেলে, আপনি যে বিষয় নিয়ে ভাবলে আবেগ অনুভূতি মনের মধ্যে জেগে ওঠে, সেই বিষয়গুলি মাথা থেকে সরানোর জন্য অন্য কোন বিষয় নিয়ে ভাবার অভ্যাস তৈরি করতে হবে, তাতে আপনার মানসিক চাপ কমে যাবে।
মানসিক চাপের নেতিবাচক প্রভাব
মানসিক চাপের নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে বলতে গেলে, আমরা যখন বিভিন্ন কারণে মানসিক চাপে থাকি তখন বিভিন্ন ধরনের শারীরিক পরিবর্তন দেখা দেয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে শারীরিক বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যায়, অনেক সময় মৃত্যুও ঘটতে পারে। এজন্য মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারা অনেক বড় একটি বিষয়। মানসিক চাপের কিছু নেতিবাচক প্রভাব চলুন জেনে নেই।
- সব সময় মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকা।
- দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস পড়া, শরীরে ঘাম দেখা দেওয়া ও হার্ড বিট বেড়ে যাওয়া।
- বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা যেমনঃ মাথা ঘোরা, দুর্বল অনুভব করা ও মাথা ব্যথা করা।
- ঘুমের সমস্যা হওয়া।
- বদ হজম, বমি বমি ভাব ও বমি হওয়া।
- শারীরিক পরিবর্তন হওয়া, যেমনঃ ওজন কমে যাওয়া ও চেহারার উজ্জ্বলতা নষ্ট হয়ে যাওয়া।
- বিভিন্ন ধরনের ব্যথা ও অসুস্থ ভাব শরীরে লেগেই থাকা।
- পরিবারের সদস্যদের সাথে খারাপ আচরণ করা।
- মানুষের সাথে সুন্দর ভাবে কথা না বলা।
লেখকের শেষ কথাঃ মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের উপায়
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের উপায় সহ আরও বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আমরা এতক্ষণ আলোচনা করলাম। মানসিক বিভিন্ন সমস্যায় আমরা যেহেতু সব সময় পড়ে থাকি, এই বিষয়গুলো আমাদের জানা থাকা উচিত।
আমার এই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন বিষয়ের উপর ব্লগ পোস্ট করা হয়। মানসিক চাপ সংক্রান্ত এই আলোচনা থেকে আশা করি আপনারা উপকৃত হয়েছেন। আমার এই ওয়েবসাইটটি সব সময় ভিজিট করুন ও বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আপনাদের সুস্বাস্থ্য কামনা করে এখানেই শেষ করছি।
আর্টমহলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url