বাংলাদেশে কোটিপতি হওয়ার উপায়

বাংলাদেশে কোটিপতি হওয়ার উপায় সম্পর্কে বলতে গেলে কোটিপতি শব্দটি শোনার সাথে সাথে মনে এক ধরনের আনন্দ অনুভূত হয়। কে না হতে চায় কোটিপতি। বিষয়টি ধ্যান ও অধ্যায়ন সাপেক্ষ হলেও অসম্ভব নয়।

বাংলাদেশে কোটিপতি হওয়ার উপায়

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কোটিপতি হওয়ার অনেক উপায় আছে, শুধু প্রয়োজন প্রচন্ড মানসিক শক্তি ও কার্যকরী নিয়ম পালনের সদিচ্ছা। চলুন দেখে নেই, কোটিপতি হওয়ার নেপথ্যের কাহিনী।

পেজ সূচিপত্রঃ বাংলাদেশে কোটিপতি হওয়ার উপায়।

বাংলাদেশে কোটিপতি হওয়ার উপায়

বাংলাদেশে কোটিপতি হওয়ার উপায় সম্মন্ধে বলতে গেলে যে কোনো ব্যক্তির ক্ষেত্রে কোটিপতি হওয়া সম্ভব। কোটিপতি হওয়ার জন্য প্রচুর অর্থ থাকতে হয় বিষয়টি এমন নয়। আপনি আপনার মেধা ও শ্রমের মাধ্যমে কোটিপতি হতে পারেন। সাথে থাকতে হবে লক্ষ্যে পৌঁছানোর দৃঢ় সংকল্প এবং মানতে হবে সুচিন্তিত নিয়মাবলী ও নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতি। তবেই আপনি হতে পারবেন কোটিপতি। নিম্নে কিছু বিষয়  বর্ণনা করছি।

 লক্ষ্য ঠিক রেখে ধাপে ধাপে এগিয়ে চলুন। আপনি কোন পর্যায়ে যেতে চান সে বিষয়ে একটি সুন্দর রোড ম্যাপ তৈরি করে নিন। স্রোতের প্রতিকূলে চলার দৃঢ় মন মানসিকতা রাখতে হবে অর্থাৎ সবাই যে কাজ করছে, আপনি একটু ভিন্ন কিছু করুন। নিজের উন্নতির জন্য প্রচুর পড়াশোনা করুন। কাজের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে যুক্তিসঙ্গত ও সুন্দর আচরণ করুন। সুসংগঠিত চিন্তাভাবনা ও সুশৃংখল মন মানসিকতা রাখুন। সঞ্চয়ী স্বভাব গড়ে তুলুন যেটা আপনাকে আপনার লক্ষ্যে পৌঁছতে প্রধান সহায়ক হবে।

আরো যে বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখা উচিতঃ বর্তমান সময় কে পরিপূর্ণ ব্যবহার করে ভবিষ্যৎ গড়ুন।সঠিক সঙ্গী ও সহযোগী নির্বাচনে সাবধান ও বুদ্ধিমত্তার স্বাক্ষর রাখুন।সমালোচনাকে নেতিবাচক ভাবে না দেখে শিক্ষণীয় বিষয় থেকে শিক্ষ নিন। 

কোটিপতি শব্দের অর্থ

কোটিপতি শব্দের অর্থ জানতে হলে আমাদের জানতে হবে, কোটি শব্দের অর্থ একশত লক্ষ, আর পতি অর্থ মালিক অর্থাৎ একশত লক্ষ টাকার মালিক কে আমরা শব্দগত ভাবে কোটিপতি বলতে পারি। অন্যভাবে বলা যায়, কোন ব্যক্তির কাছে যদি এক কোটি টাকা বা তার বেশি অর্থ থাকে, তাকে কোটিপতি বলা যায়। তবে, বর্তমান সময়ে প্রচুর টাকার মালিক কে কোটিপতি বলে আখ্যায়িত করা হয়।

আবার অনেক ক্ষেত্রে, কোটি টাকা মূল্যের সম্পদ থাকা ব্যক্তিকে কোটিপতি বলা হয় যদিও তার হাতে নগদ অর্থ নেই। আবার স্থাবর সম্পত্তি নেই কিন্তু হাতে ক্যাশ টাকা আছে, তাকেও কোটিপতি বলা যায় অর্থাৎ ক্ষেত্র বিশেষে কোটিপতি বিষয়টা বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। আবার সাধারণভাবে শত বা হাজার কোটি টাকার মালিককেও কোটিপতি বলা হয়।

আরও পড়ুনঃ  ফ্রিল্যান্সিং হালাল ইনকামের খোঁজে

বাংলাদেশে কোটিপতি হওয়ার উপায় জানতে আরো যে বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখা উচিত তা হল, কোটিপতি শব্দটি অর্থের দিক দিয়ে বিশ্লেষণ করা গেলেও নীতি নৈতিকতার দিক থেকে সম্পূর্ণ বিশ্লেষণ করা যায় না। তবুও প্রাথমিকভাবে কোটিপতিদের দুই ভাগে বিভক্ত করা যায়। যেমনঃ সৎ ব্যবসায়িক উপায়ে অর্জিত অর্থের মাধ্যমে তৈরি হয় সৎ কোটিপতি আর অসৎ উপায়ে অর্জিত অর্থের মালিক কে আমরা অসৎ কোটিপতি বলতে পারি।

কিভাবে দ্রুত কোটিপতি হওয়া যায়

কিভাবে দ্রুত কোটিপতি হওয়া যায় এ বিষয়ে বলতে গেলে কোটিপতি হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কোন সময়সীমা নেই। আপনি খুব দ্রুত কোটিপতি হয়ে যেতে পারেন আবার সময়ও লাগতে পারে। দ্রুত কোটিপতি হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কোন নিয়ম-নীতি বা কার্যপদ্ধতি নেই। মিরাকল ঘটিত কোন বিষয়ের মাধ্যমে দ্রুত কোটিপতি হতে পারেন তবে এ বিষয়ের হার খুবই নগণ্য। তবে চেষ্টাই একজন মানুষকে নিয়ে যেতে পারে সঠিক লক্ষ্যে।

 কিছু আইন বহির্ভূত বিষয় আমাদের সমাজে ছড়িয়ে আছে, যেমন জুয়া। এ জাতীয় কর্মকাণ্ড করে আপনি দ্রুত কোটিপতি হয়ে যেতে পারেন সে ক্ষেত্রে ঝুঁকি আছে। আবার এই কাজে আপনি ফকিরও হয়ে যেতে পারেন। তবে যেহেতু আইন বহির্ভূত বিষয়, এর থেকে দূরে থাকাই ভালো। অসৎ পথে প্রাপ্ত অর্থের সাথে প্রচুর ঝামেলাও পোহাতে হয় যা আপনার জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলতে পারে।


শুধুমাত্র কোটিপতি হওয়ার চিন্তা করলেই হবে না, আপনার রাস্তাটা আইনসিদ্ধ ও সমাজসিদ্ধ হতে হবে।  মানুষের ক্ষতি হবে না এমন কোন কর্মকাণ্ড করে আপনি প্রচুর অর্থ ইনকামের চেষ্টা করতে পারেন। লোভে পড়ে অন্যায় কিছু করে ফেললে তার খারাপ প্রভাব আপনার উপরেই বর্তাবে। বর্তমান সময়ে সঠিক চিন্তাভাবনা না করে অনেকেই টাকা ইনকাম করছে, যা দেশের জন্যও ক্ষতিকর।  

কি ব্যবসা করে কোটিপতি হওয়া যায়

কি ব্যবসা করে কোটিপতি হওয়া যায় এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, কোটিপতি  হওয়ার একমাত্র রাস্তা ব্যবসা করা। যেকোনো ধরনের ব্যবসা করে কোটিপতি হওয়া যায় তবে মানতে হয় নিয়ম-নীতি ও সঠিক কার্য পদ্ধতি। ইতিবাচক চিন্তা ভাবনা থেকে যেকোনো পণ্য বেচাকেনা করে, মান ভালো রেখে গ্রাহকের সামনে তুলে ধরে ব্যবসা করলে নীতি-নৈতিকতা সম্বলিত ব্যবসা হিসেবে পরিগণিত হয়।

অন্যদিকে, যদি অনৈতিক পন্থায় প্রচুর টাকার মালিক হওয়ার ইচ্ছা থাকে, সে ক্ষেত্রে নীতি-নৈতিকতা বহির্ভূত ব্যবসা করে কোটিপতি হওয়া যায় কিন্তু সেটা কখনোই ভালো ফল বয়ে আনে না। দিনশেষে বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় জর্জরিত হয়ে সামাজিকভাবে নেতিবাচক সম্মোধনে ব্যক্তিত্ব কলুষিত হয়ে পড়ে।

সমাজসিদ্ধ সৎ পথে পুঁজি বিনিয়োগ করে অনেক ধরনের ব্যবসা করা যেতে পারে। সেই ব্যবসায়ীক অর্থ আপনার জীবনকে সুন্দর ও অর্থবহ করে তুলতে পারে। বর্তমান সময়ে তরুণ প্রজন্মের কাছে অনলাইন ব্যবসা খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তার সাথে জনপ্রিয় ও বহুল প্রচলিত কিছু ব্যবসার বিষয়ে চলুন জেনে নেওয়া যাক।

ই কমার্সঃ বর্তমান সময়ে অনলাইনে অনেক ধরনের ব্যবসায়িক প্ল্যাটফর্ম রয়েছে, যার মাধ্যমে পণ্য বেচাকেনা করা হয়, যেমনঃ দারাজ, ফুডপান্ডা পাঠাও, সহ বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিস ইত্যাদি। এজাতীয় একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে দ্রুত সময়ের মধ্যে কোটিপতি হয়ে যেতে পারেন। সাথে অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও হয়ে যাবে।

ডিজিটাল মার্কেটিংঃ ডিজিটাল মার্কেটিং বর্তমান সময়ে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি অনলাইন ব্যবসা। কার্যকরী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতার সাথে এই ব্যবসাটি শিখে আপনি দ্রুত সময়ের মধ্যে কোটিপতি হয়ে যেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সময় দিতে হবে। রাজশাহীতে উল্লেখযোগ্য ডিজিটাল মার্কেটিং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অর্ডিনারি আইটি। 

শেয়ার বাজারঃ শেয়ার বাজারের মাধ্যমে বর্তমান সময়ে প্রচুর মানুষ অর্থ উপার্জন করে থাকে। বিষয়সংশ্লিষ্ট জ্ঞান রেখে আপনাদেরকে কাজ করতে হবে। এই বিজনেসে বেশ ঝুঁকি থাকলেও বর্তমান সময়ে বিষয়টি বেশ জনপ্রিয়। তবে না জেনে, হুট করে যেকোনো জায়গায় অর্থ ডিপোজিট করে ফেললে খারাপ ফলাফলও ঘটতে পারে।

কন্ট্রাক্টর বা সাব কন্ট্রাক্টরঃ বর্তমান সময়ে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে দ্রুত গতিতে। এ সময় তৈরি হচ্ছে অনেক ইনফ্রাস্ট্রাকচার। কন্ট্রাক্টর বা সাব কন্ট্রাকটরদের মাধ্যমে এই কাজগুলো হয়ে থাকে। তবে, এই ব্যবসায় নামার আগে অবশ্যই আপনার ব্যাপক পুঁজি ও লাইসেন্স প্রয়োজন হবে। সাথে অনেক পুরাতন প্রতিযোগীর সাথে প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকতে হবে।

এছাড়াও ইন্টেরিয়র ডিজাইন ব্যবসা, পার্ট টাইম জব, বিভিন্ন বিষয়ের প্রশিক্ষণ ও সার্ভিস প্রদান সহ সব ধরণের ব্যবসার মাধ্যমে প্রচুর মানুষ অর্থ উপার্জন করে থাকে।

কোটিপতি হওয়ার মিটার

কোটিপতি হওয়ার মিটার কথাটা শুনতে একটু অন্যরকম হলেও আপনার দীর্ঘসময়ের পরিকল্পনা বাস্তবে রূপ দিচ্ছে কিনা সেটা আপনি কিছু বিষয়ের মাধ্যমে পরিমাপ করতে পারবেন। যদি পরিমাপ সঠিকভাবে হয়, আপনার ধাপে ধাপে এগিয়ে যাওয়া ও কোটিপতি হওয়ার বিষয়ে সহায়ক হবে। নির্দিষ্ট সময় পর পর, সব সময়ের জন্য এই বিষয়গুলো মেনে চললে, ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে। এই  পরিমাপের বিষয়টাকে মিটার হিসেবে ধরে নিচ্ছি।
কোটিপতি হওয়ার মিটার
  • আপনার পরিকল্পনার দিন থেকে শুরু করে তিন মাস পর পর  অবস্থার পরিমাপ করুন। 
  • কতটুকু উন্নতি হলো বা অবনতি হলো, সে বিষয়ে সম্যক ধারণা রাখুন। 
  • এই সময়ের মধ্যে আপনার কি কি অর্জন হয়েছে, সে বিষয় নিরূপণ করুন। 
  • আপনি নতুন কি শিখেছেন, সে বিষয়ে জানুন। 
  • এই সময়ের মধ্যে কোন কাজটি করে আপনি সবচেয়ে বেশি আনন্দ পেয়েছেন, সেই বিষয়টি ভাবুন। 
  • সমস্ত কার্যক্রমের মধ্যে কোন বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ ছিল, তা নিরূপণ করুন।

কোটিপতি হতে করণীয়

কোটিপতি হতে করণীয় বিষয়টি বলতে গেলে কোটিপতি হওয়া অনেক ধ্যান ও কষ্টসাধ্য ব্যাপার। সঠিক নিয়মে বিষয়ের উপর পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে সুপরিকল্পিতভাবে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাওয়ার মন-মানসিকতা তৈরি করতে পারেন। যেকোনো ধরনের আবেগী সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থাকতে হবে। আবেগের বশবর্তী হয়ে কোন কাজকর্ম করে ফেললে হিতে বিপরীত ফল দিতে পারে যা আপনার সামনে চলার পথকে দীর্ঘায়িত করে ফেলবে।

 একটা চিন্তা-ভাবনা করে কাজ শুরু করার পর মাঝপথ থেকে অন্যের কথা শুনে যদি পথ পরিবর্তন করেন সে ক্ষেত্রে আপনাকে নতুন করে ভাবতে হতে পারে। জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ শুরু করার পর না থেমে ধাপে ধাপে এগিয়ে যাওয়া। কোটিপতি হতে গেলে বিষয়টি ভালোভাবে মেনে চলা আমাদের উচিত।

সৎ ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে, নিজের প্রতি পূর্ণ আত্মবিশ্বাস রেখে, ব্যবসায়িক মূলধন বিনিয়োগ  করতে পারলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে। সব সময় চিন্তা করতে হবে, সৎ পথে টাকা উপার্জনের মাধ্যম খোঁজা। অসৎ উপার্জন আপনাকে সফল করলেও শান্তি দিবে না। কোটিপতি হওয়ার জন্য আর যে সমস্ত করণীয় বিষয় মাথায় রেখে এগিয়ে যেতে হবে তা আপনাদের সামনে তুলে ধরছি।


অর্থ সঞ্চয় করাঃ অর্থ সঞ্চয় করা হতে পারে আপনার কোটিপতি হওয়ার রাস্তায় চলার পাথেয়। সঞ্চয়ী মনোভাব ব্যতীত কোনমতেই কোন ব্যক্তি ধীরে ধীরে কোটিপতি হতে পারবে না। আপনার প্রতি মাসের ইনকাম থেকে কি পরিমান অর্থ পরিবার এবং প্রয়োজনীয় বিষয়ের জন্য খরচ করবেন তার বাজেট তৈরি করুন এবং প্রতিমাসের শুরুতে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ সঞ্চয়ের জন্য রেখে দিন।

প্যাসিভ ইনকাম বাড়ানোঃ প্যাসিভ ইনকাম অর্থাৎ যে বিষয় থেকে আপনার প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ নতুন কোন কাজ না করেই আসবে এমন ইনকামের খাত গুলো বৃদ্ধি করতে হবে যেটা আপনার রানিং ইনকামের সাথে যোগ হয়ে স্বাস্থ্যসম্মত মোট ইনকামে পরিণত হবে। একটি প্যাসিভ ইনকাম হতে পারে আপনার স্বপ্নের সিঁড়ি   বেঁয়ে উপরে ওঠার প্রতিটি ধাপ।

অর্থ পরিকল্পনা করাঃ অর্থই শুধুমাত্র অনর্থের মূল নয়। অর্থের মাধ্যমে আপনি অনেক ভালো কিছু করতে পারেন। সুশৃংখল অর্থ পরিকল্পনার মাধ্যমে যেকোনো কাজ সুন্দরভাবে করা যায়। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যদি ভালো কিছু করতে হয়, তাহলে সুশৃংখল একটি অর্থ পরিকল্পনা আপনাকে সঠিক লক্ষ্যে পৌঁছতে সাহায্য করবে।অর্থ পরিকল্পনা যার যত সঠিক তার সফলতার হারও তত বেশি।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাঃ আপনি, আপনার পরিবার ও সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে সম্যক ধারণা রেখে, সুন্দর একটি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করতে পারেন যা আপনাকে ধাপে ধাপে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সহায়ক  ভূমিকা পালন করবে। একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আপনাকে সুন্দর ভবিষ্যৎ উপহার দিবে এবং আপনাকে সফল হতে সাহায্য করবে।

পরিবারের সবাই মিলে ইনকাম করাঃ আপনি যদি দ্রুত সম্পদশালী হতে চান, আপনার একার ইনকামের পক্ষে তা যথেষ্ট কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে পরিবারের সবাই মিলে যদি ইনকামের রাস্তা তৈরি করা যায়, আপনি দ্রুত সময়ের মধ্যে  লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবেন। পরিবারের সদস্যদের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করে সকলে মিলে কাজ করার জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত হওয়া উচিত।

দক্ষতা বাড়ানোঃ আপনি যে কর্মে দক্ষ তা প্রতিনিয়ত আপডেট করতে হবে। সময় এগিয়ে চলছে, সাথে সাথে সবকিছু উন্নত হচ্ছে। আপনি যদি সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে না পারেন, আপনি সফল হতে পারবেন না। এজন্য দক্ষতার কোন বিকল্প নেই। দক্ষ মানুষ কখনো বসে থাকে না। কাজ তাদের দিকে ছুটে আসে এবং মানুষ তাকে সমীহ করে।

কোটিপতি হতে বর্জনীয় কিছু বিষয়

কোটিপতি হতে বর্জনীয় কিছু বিষয় আমাদের মেনে চলতে হবে। একজন সাধারন মানুষ যেভাবে চিন্তা করে, কোটিপতিরা সেভাবে ভাবেনা। কোটিপতি হওয়ার আগে বা হওয়ার রাস্তায় কোটিপতি ভাব নিয়ে লোক দেখিয়ে চলা আপনার জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। সেজন্য কোটিপতি হতে চাইলে আপনাকে সঠিক চিন্তাভাবনা করে সুন্দর রোডম্যাপ তৈরি করে পথ চলতে হবে।

অগোছালো জীবন, যা ইচ্ছা তাই করার মন-মানসিকতা আপনার চলার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
এজন্য নিয়মতান্ত্রিকভাবে সুন্দর জীবন যাপন করা উচিত। আপনার চলার পথে বাধা সৃষ্টিকারী সমস্ত বিষয় বুদ্ধিমত্তার সাথে পরিচালনা করতে হবে, যেন কোন সমস্যা সৃষ্টি হতে না পারে। যেকোনো সময় যেকোনো দিক থেকে বিপদ আসতে পারে, সতর্ক থাকুন।

মানুষের সাথে ভালো ব্যবহার করা ও যোগাযোগ বৃদ্ধি করা হতে পারে আপনার একটি ভালো অভ্যাস। এটা বজায় রাখতে হবে। কোটিপতি হতে গেলে  আরও কিছু বিষয়ে আপনাকে বর্জন করতে হবে। এই বর্জনীয় বিষয়গুলো সঠিকভাবে মানতে পারলে আপনি দ্রুত কোটিপতি হতে পারবেন। চলুন বিস্তারিত দেখে নেওয়া যাক।

স্ট্যাটাস দেখানোঃ আপনার আশপাশের মানুষ জনের সাথে স্ট্যাটাস বিষয়ে প্রতিযোগিতায় নামতে গেলে আপনি কখনোই সম্পদশালী হতে পারবেন না কারন আপনার যা ইনকাম হবে তার পুরোটাই খরচ করে আপনাকে স্ট্যাটাস দেখাতে হবে সে ক্ষেত্রে জয়া হওয়ার কোন অপশন নাই। আর এই জমা না হওয়ার বিষয়টাই আপনাকে পিছিয়ে দিবে।

ব্যবসা শুরু করতে গড়িমশি করাঃ ধরুন আপনার হাতে বেশ কিছু অর্থ আছে। এই অর্থ বিনিয়োগের মাধ্যমে আপনি আরো অর্থ বৃদ্ধি করবেন কিন্তু আজ করবেন কাল করবেন করে সময় নষ্ট করছেন। যতটুকু সময় নষ্ট করবেন ততটুকু পিছিয়ে পড়বেন। এজন্য জেনে বুঝে ভেবেচিন্তে যত দ্রুত সম্ভব বিনিয়োগ বা নতুন ব্যবসা শুরু করে দিন, আপনার সাফল্য কেউ ধরে রাখতে পারবে না।


প্ল্যানিং এর অভাবঃ আপনার আয় ভালো হচ্ছে কিন্তু আপনি প্লান করতে পারছেন না যে কিভাবে আরও সম্পদ তৈরি করা যায় বা আপনি যে অর্থ ইনকাম করছেন, চলছেই তো এই চিন্তা করে বসে আছেন। সে ক্ষেত্রে আপনার সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথ রুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। এই অভ্যাসটি পরিত্যাগ করুন, ভালো ফল পাবেন। একটি সুন্দর প্ল্যানিং হতে পারে আপনার জীবনের সফলতার কারণ।

পরামর্শের অভাবঃ সঠিক পরামর্শ হতে পারে আপনার এগিয়ে যাওয়ার পথের যোগ্য সঙ্গী। যার তার কাছ থেকে পরামর্শ নিলে লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি হয়ে যেতে পারে। এজন্য সফল ব্যক্তির কাছ থেকে পরামর্শ নিন তার সফলতার ইতিহাস জানুন, শুনুন, সেই অনুযায়ী কাজ করুন। আপনি কোটিপতি হতে পারবেন। সৎ পরামর্শ আপনাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

পরিবারের একজন ইনকাম করাঃ প্রবাদ আছে, একের লাঠি দশের বোঝা। আপনি যদি একা ইনকাম করেন তা খুবই হালকা হবে বা কম হবে। যখন সবাই মিলে ইনকাম করা হবে তখন তা বোঝা বা পরিমাণে অনেক বেশি হবে। এজন্য সবাই মিলে ইনকাম করলে তা একটি স্বাস্থ্যসম্মত মূলধনে পরিণত হয়। অলসতা করে কাজ কর্ম না করে বসে থাকা যেমন নিজের ক্ষতি, তেমন পরিবার ও দেশের ক্ষতি।

অসৎ পথে কোটিপতি হওয়ার কিছু নিয়ম

অসৎ পথে কোটিপতি হওয়ার কিছু নিয়ম বলতে গেলে বর্তমান সময়ে আমরা দেখছি  টাকা কামানোর পন্থা হিসেবে আমাদের দেশের কিছু মানুষ রাজনীতিকে  ব্যবহার করছে। আবার কিছু মানুষ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে ভালো সখ্যতা বজায় রেখে শত কোটি টাকা লোন নিয়ে আর ফেরত না দিয়ে রাতারাতি কোটিপতি হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের টাকা মেরে দিয়ে ভালো কিছু করা সম্ভব নয়।
অসৎ পথে কোটিপতি হওয়ার কিছু নিয়ম
চোখ কান খোলা রেখে, সময় বুঝে লুটপাট ডাকাতির মাধ্যমে অনেক অর্থ উপার্জন করা যায়। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে, ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে অনেকের কাছ থেকে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি দখলের মাধ্যমে অনেকে রাতারাতি কোটিপতি বনে যাচ্ছে। আবার অনেকে চাঁদাবাজি করে অনেক অর্থ উপার্জন করছে।

এ সমস্ত পন্থায় যেমন দ্রুত কোটিপতি হওয়া যায় তেমনি দ্রুত ধস নেমে আসে। আর সাথে বোনাস হিসেবে থাকে জেল আর সামাজিকভাবে চোর ডাকাত উপাধি। এই সমস্ত বিষয়ের তোয়াক্কা যদি আপনি না করেন, এই পন্থায় অর্থ উপার্জন করতে পারেন। তবে, নীতি নৈতিকতার বিষয়টি মাথায় রেখে আমাদেরকে সঠিক পথে উপার্জনের চেষ্টা করা উচিত।   

কোটিপতি হতে টাকা দিয়ে টাকা বানানো

কোটিপতি হতে টাকা দিয়ে টাকা বানানো সম্পর্কে বলতে গেলে, কথায় আছে টাকায় টাকা আনে অর্থাৎ আপনার কাছে যে মূলধন আছে সেই অর্থ ব্যবহার করে দ্রুত টাকা বানাতে পারেন। এজন্য প্রথমে মূলধন জোগাড় করার বিষয় সচেষ্ট হতে হবে। সবচেয়ে কঠিন বিষয় হলো, খরচের হার নির্ধারণ করা। আমরা ভোগে বিশ্বাসী মানুষ। কিভাবে সঞ্চয় করতে হয় সে অভ্যাস জীবনের শুরু থেকে গড়ে উঠলে টাকা বাড়ানো সহজ হয়।

 এখন কথা হচ্ছে, কিভাবে টাকা বানাতে পারি। আপনার কাছে যে গচ্ছিত অর্থ রয়েছে সেটা বিভিন্ন ব্যবসায় খাটিয়ে টাকা বানাতে পারেন। শেয়ার মার্কেট অথবা ব্যাংকের বিভিন্ন অর্থ ডিপোজিট করার পদ্ধতি থেকে পছন্দ মত সেক্টরে ডিপোজিট করে রাখতে পারেন। যেটা আপনাকে প্রতিমাসে নির্দিষ্ট হারে লভ্যাংশ দিবে। এভাবে করেও টাকা রোলিং করে প্রচুর টাকা অর্জন করা সম্ভব।

তবে, ভুলেও এমন কোন স্কিমে অর্থ লগ্নি করা যাবে না, যেখানে অতিরিক্ত লভ্যাংশের আশ্বাস দেওয়া হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলো ফেক হয়। যার কারণে, আপনার লগ্নিকৃত অর্থ মেরে দেওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। আর একটা কথা মনে রাখবেন "লোভে পাপ পাপে মৃত্যু"। সেজন্য অর্থ লগ্নির ক্ষেত্রে ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

লেখকের শেষ কথাঃ বাংলাদেশে কোটিপতি হওয়ার উপায়

বাংলাদেশে কোটিপতি হওয়ার উপায় বিষয়ে আমরা বলতে পারি, মূলধন বাড়ানোর ক্ষেত্রে চিন্তাভাবনা করে সঠিক স্থানে বিনিয়োগ করা কোন ব্যক্তির সফলতার কারণ হয়ে উঠতে পারে। যেকোনো ধরনের অনৈতিক পন্থায় দ্রুত বড়লোক হওয়া, বিনিয়োগের তুলনায় মাসিক অধিক মুনাফার লোভ, এই বিষয়গুলো বাদ দিয়ে মেধা, শ্রম ব্যায় করে শুদ্ধ উপায়ে ইনকামের চেষ্টা করা আমাদের উচিত হবে বলে আমি মনে করি।

এই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন বিষয়ের উপর ব্লগ লেখা হয়ে থাকে। আশা করি আজকের এই বিষয়টি আপনারা ভালোভাবে বুঝেছেন। আপনারা যদি অর্থ ও বাণিজ্য বিষয়ক আরো ব্লগ পড়তে চান অবশ্যই এই ওয়েবসাইটটি ফলো করে রাখুন। ব্লগটি পড়ে আপনাদের কেমন লাগলো কমেন্টে জানাবেন। আপনাদের সুস্বাস্থ্য কামনা করে এখানেই শেষ করছি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আর্টমহলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url