ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের জীবনযাত্রাকে কিভাবে পরিবর্তন করেছে
ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের জীবনযাত্রাকে কিভাবে পরিবর্তন করেছে এ বিষয়ে বলতে গেলে, ডিজিটাল প্রযুক্তির ভালো এবং খারাপ দুইটি দিকই রয়েছে। আজকের ব্লগে আমরা এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে চলেছি।
প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে কিভাবে সহজ করে দিয়েছে সে বিষয়েও আজকে আমরা আলোচনা করতে চলেছি। তো আর দেরি কেন চলুন শুরু করা যাক।
পেজ সূচিপত্রঃ ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের জীবনযাত্রাকে কিভাবে পরিবর্তন করেছে
- ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের জীবনযাত্রাকে কিভাবে পরিবর্তন করেছে
- প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে কিভাবে সহজ করে দিয়েছে
- প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে কিভাবে প্রভাবিত করে
- প্রযুক্তির ক্ষতিকর প্রভাব
- অতিরিক্ত ইন্টারনেট ব্যবহারের কুফল
- তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রধান উপকরণ কোনটি
- আমাদের জীবনে প্রযুক্তির ব্যবহার
- মানব জীবনে প্রযুক্তির প্রভাব
- প্রযুক্তি ব্যবহার করতে কি ধরনের শক্তি ব্যাবহৃত হয়
- লেখকের শেষ কথাঃ ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের জীবনযাত্রাকে কিভাবে পরিবর্তন করেছে
ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের জীবনযাত্রাকে কিভাবে পরিবর্তন করেছে
ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের জীবনযাত্রাকে কিভাবে পরিবর্তন করেছে এই বিষয়ে বলতে গেলে, আমাদের জীবন এখন ডিজিটাল প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে উঠেছে। প্রাত্যহিক জীবন যাপনে এমন কোন বিষয় নেই যার সাথে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার নেই। ১৯৫০ এর দশকের শেষের দিকে প্রথম ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপনের পর থেকে সারা বিশ্বে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের শক্তি পৃথিবীকে নতুনভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
শিক্ষা, চিকিৎসা, দৈনন্দিন জীবন থেকে শুরু করে মহাকাশ বিজ্ঞান সহ পৃথিবীর এমন কোন সেক্টর নাই যেখানে প্রযুক্তির ছোয়া লাগেনি। খুবই ক্ষুদ্র অবস্থা থেকে বৃহৎ আকারে যা কিছু আছে সবই তথ্যপ্রযুক্তির আন্ডারে। পূর্বের সময় কি ছিল আর এখন কি হয়েছে এবং প্রতিনিয়ত যে উন্নতি হচ্ছে তা কল্পনাতীত। এ যেন এক সৃজনশীল খেলা, যে যেভাবে পারছে এই খেলা খেলে বিভিন্ন ফল প্রকাশ করছে।
প্রযুক্তির কল্যাণে আমাদের জীবনযাত্রা যেমন সহজ ও সুন্দর হয়েছে, তেমনি ধ্বংস হয়েছে নীতির নৈতিকতা সহ অনেক বিষয়। এই পৃথিবীতে প্রত্যেকটি জিনিসের ভালো এবং খারাপ দুইটি দিক রয়েছে। বর্তমান পৃথিবীর তথ্য ও প্রযুক্তি আমাদেরকে এই দুইটি বিষয়ই উপস্থাপন করছে। আমরা যারা ভাল চিন্তা করে ভালো কাজ করতে পারছি তার জন্য যেমন ভালো রেজাল্ট আসছে তেমনি অনেক খারাপ রেজাল্ট এর সম্মুখীনও আমরা হচ্ছি।
প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে কিভাবে সহজ করে দিয়েছে
প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে কিভাবে সহজ করে দিয়েছে এই বিষয়ে বলতে গেলে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা যা কিছু করি তার সাথে প্রযুক্তি জড়িত। প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় দান মোবাইল ফোন। বর্তমান সময়ে এমন কোন কাজ নাই যা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে করা যায় না। কোন কোন ক্ষেত্রে উচ্চ স্তরের কাজ না করা গেলেও কাজ করা যায়।
কম্পিউটার প্রযুক্তি আমাদেরকে প্রতিনিয়ত আশ্চর্য করে তুলেছে। আমরা যা ভাবতেও পারি না তাই হচ্ছে কম্পিউটারের মাধ্যমে। শিল্পীরা কোন একটি ধারণার উপরে নির্ভর করে ছবি এঁকে থাকে, ঠিক সেই কাজটি এখন এ আই করছে। আপনার দেহের কি অবস্থা হার্ড, পালস, রক্তের গতি এ সমস্ত বিষয় প্রযুক্তি আমাদেরকে যেকোনো সময় বলে দিচ্ছে স্মার্টওয়াচের মাধ্যমে।
জানার জন্য আগে পৃথিবীর এ প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে চলে যেত জ্ঞানপিপাসুর। ইসলাম ধর্মে জ্ঞান অর্জনের জন্য সুদূর চীন পর্যন্ত যেতে বলা হয়েছে অর্থাৎ জ্ঞান অর্জনের জন্য দূর বহুদূর পর্যন্ত যাওয়াটা খুবই স্বাভাবিক বিষয় ছিল কিন্তু বর্তমানে ঘরে বসেই আপনি পৃথিবীর সমস্ত জ্ঞান দিতে পারেন। প্রযুক্তির কল্যাণে আমরা একদিনে যে কাজ করতে পারি পূর্ববর্তী সময়ে তা করতে হয়তো ২০-৩০ বছর লেগে যেত।
প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে কিভাবে প্রভাবিত করে
প্রযুক্তির ক্ষতিকর প্রভাব
অতিরিক্ত ইন্টারনেট ব্যবহারের কুফল
অতিরিক্ত ইন্টারনেট ব্যবহারের কুফল সম্পর্কে বলতে গেলে তা অনেক বড় আলোচনা। ভালো বিষয়ে হোক আর খারাপ বিষয় হোক অতিরিক্ত ইন্টারনেট ব্যবহারের কারণে আপনি একা হয়ে পড়বেন, যা কিছু করবেন তা একা একা। এতে আপনার মানসিকতার উপরে ব্যাপক প্রভাব পড়বে। আপনি সমাজে অসামাজিক হিসেবে বিবেচিত হবেন। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় অতিরিক্ত ইন্টারনেট ব্যবহারের কারণে আমাদের ঘুম নষ্ট হয়ে যায়।
আমরা জানি ঘুম আমাদের স্বাস্থ্য ও মস্তিষ্ক ঠিক রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইন্টারনেটের আসক্তির মধ্যে পড়ে আমরা বুঝে না বুঝে এই সমস্যায় পড়ছি, যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমাদের দেহ, মস্তিষ্ক। বিভিন্ন ধরনের নিষিদ্ধ ও অসামাজিক কার্যকলাপে আমরা উদ্বুদ্ধ হচ্ছি ও সহজেই করতে পারছি। বিভিন্ন ধরনের গেম আমাদের যুব সমাজের সময়, মস্তিষ্ক ধ্বংস করে কর্মবিমুখতা ও উৎপাদনশীলতা শূন্যের কোঠায় এনে ঠেকিয়েছে।
বিভিন্ন সময় আমরা দেখতে পাই রাষ্ট্রের উপর জঙ্গিগোষ্ঠী থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের পক্ষে ক্ষতিকর এমন কার্যকলাপ তারা করছে এই তথ্য ও প্রযুক্তির মাধ্যমে, যার কারণে দেশ হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়ছে। অধিক সময় ইন্টারনেট ব্যবহারের কারণে আমাদের চোখ স্বাভাবিক দৃষ্টিশক্তি হারাচ্ছে। এক জায়গায় ১০ জন ব্যক্তি বসে থাকলে কেউ কারোর সাথে কথা না বলে সবাই একা একা ফোনকে সময় দিচ্ছে, যা আমাদের সামাজিকতার বিষয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রধান উপকরণ কোনটি
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রধান উপকরণ কোনটি এ বিষয়ে বলতে গেলে, তথ্যপ্রযুক্তির যেকোনো ধরনের কাজ করার জন্য প্রয়োজন হয় কম্পিউটার আর এই কম্পিউটার পরিচালিত হয় হার্ডওয়ার, সফটওয়্যার, ইলেকট্রিসিটি, ইন্টারনেট সংযোগ ইত্যাদির মাধ্যমে। কম্পিউটার আবিষ্কারের পর মানুষ ভাবতেই পারেনি এই যন্ত্রটা ব্যবহার করে সভ্যতা এতদূর এসে পড়বে।
আমাদের জীবনে প্রযুক্তির ব্যবহার
মানব জীবনে প্রযুক্তির প্রভাব
মানব জীবনে প্রযুক্তির প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে আমরা অসাধ্য সাধন করছি। প্রযুক্তির খারাপ প্রভাব সম্পর্কে আমরা ইতোমধ্যে আলোচনা করেছি। প্রযুক্তির প্রভাব আমাদেরকে অনেক সময়ের কাজ অল্প সময়ে করে দিচ্ছে। আমরা এই সময়ে এসে বলতে পারি আমাদের যদি ৬০ বছরের জীবন হয় পূর্বের হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে যদি ৬০ বছরই বেঁচে থাকি হিসাবটা হয় কমবেশি ৫০০ বছরের।
অর্থাৎ আগে ৬০ বছরে মানুষ যে কাজ করতে পারতো এখন সেই কাজ অল্প সময়ের মধ্যে করতে পারছে। কোন ব্যক্তির কমবেশি ৫০০ বছরের কাজ আমরা এখন ষাট বছরে করে ফেলতে পারছি, তথ্য ও প্রযুক্তির কল্যাণে। তবে একটা কথা স্বীকার করতে হবে, প্রযুক্তির কল্যাণে আমরা অলস হচ্ছি। আমাদের দৈহিক পরিশ্রম থাকছেই না, যার ফলে আমরা শারীরিকভাবে অথর্ব হয়ে পড়তে পারি। ঘরে বসে পৃথিবীর সমস্ত কাজকর্ম করতে পারার কারণে এই সমস্যাগুলো দেখা দিচ্ছে।
মানব জীবনে প্রযুক্তির ব্যাপক প্রভাবের কারণে আমরা যন্ত্র মানব টাইপের হয়ে যাচ্ছি। আমাদের চিন্তা-ভাবনা, কথাবার্তা, কাজকর্ম, সবই যন্ত্র-নির্ভর হয়ে গিয়েছে। রান্না করা, কাপড়-চোপড় ধোয়া, সিনেমা তৈরি করা, মিউজিক বানানো, ক্যামেরা শুটিং, ভূ উপগ্রহ সহ প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে আমাদের জীবনে তথ্য ও প্রযুক্তির প্রভাব অনস্বীকার্য এবং ভবিষ্যৎ সময় কেমন হতে চলেছে তা আমাদের চিন্তাভাবনার গন্ডির অনেক বাইরে।
প্রযুক্তি ব্যবহার করতে কি ধরনের শক্তি ব্যাবহৃত হয়
প্রযুক্তি ব্যবহার করতে কি ধরনের শক্তি ব্যবহৃত হয় এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বলতে পারি, বর্তমান পৃথিবীতে বিভিন্ন ধরনের এনার্জি রয়েছে। তার মধ্যে ইলেকট্রিক এনার্জি, সোলার এনার্জি, অ্যাটোমিক এনার্জি ইত্যাদি, বর্তমানে প্রযুক্তি ব্যবহার করতে অন্যতম ভাবে ব্যবহার হচ্ছে। এছাড়াও আরো ছোট ছোট বিভিন্ন ধরনের এনার্জি রয়েছে তার মধ্যে তেল ব্যবহার করে তৈরিকৃত এনার্জি অন্যতম।
সাধারণত ইলেকট্রিক এনার্জি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয় কম্পিউটার পরিচালনার ক্ষেত্রে। ইলেকট্রিক এনার্জি আমরা ব্যবহার করে থাকি নরমালি টেলিভিশন, রেডিও, রেফ্রিজারেটর, এসি, ওয়াশিং মেশিন সহ বিভিন্ন ধরনের মেশিন আমরা ইলেকট্রিক এনার্জির মাধ্যমে ব্যবহার করি। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সোলার এনার্জি ব্যবহার হয়, তবে সে হার খুব বেশি নয়। সোলার এনার্জির মাধ্যমেও ইলেকট্রনিক প্রডাক্ট ব্যবহার হয়ে থাকে।
অ্যাটমিক এনার্জির ব্যবহারও বর্তমান পৃথিবীতে প্রচুর। এই পৃথিবীতে প্রচুর এটমিক এনার্জির মাধ্যমে বিদ্যুৎ তৈরি করা হয়। রকেট, ভূ উপগ্রহ ও স্পেস স্টেশনে অ্যাটমিক এনার্জির ব্যবহার রয়েছে। অ্যাটমিক এনার্জি খুবই শক্তিশালী একটি শক্তি। এই শক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা অনেক বেশি শক্তি উৎপন্ন করতে পারছি কিন্তু এই শক্তিকে যদি কন্ট্রোল করা না যায় তাহলে হতে পারে মানব সভ্যতা ধ্বংসের অন্যতম কারণ।
লেখকের শেষ কথাঃ ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের জীবনযাত্রাকে কিভাবে পরিবর্তন করেছে
ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের জীবনযাত্রাকে কিভাবে পরিবর্তন করেছে এ বিষয়ে আমরা বিস্তারিত তথ্য পেয়েছি এবং এও বুঝতে পারলাম তথ্য প্রযুক্তি ব্যতীত আমাদের জীবন অচল।
আমার এই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন বিষয়ের উপর ব্লগ পোস্ট করা হয়। এতক্ষন আমরা যে আলোচনা করলাম তা থেকে আশা করি আপনারা উপকৃত হয়েছেন। এই ওয়েবসাইটটি সব সময় ভিজিট করলে বিভিন্ন ধরনের তথ্য পাবেন। আপনাদের সুন্দর ভবিষ্যৎ কামনা করে এখানেই শেষ করছি।
আর্টমহলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url