কর্মক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ১০ টি ব্যবহার সম্পর্কে জানুন
কর্মক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ১০ টি ব্যবহার নিয়ে বলতে গেলে মানব জীবনে প্রযুক্তির ব্যবহার খাদ্য, পানি ও বাসস্থানের মত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আজকের আর্টিকেলে আমরা এই বিষয় সম্পর্কে জানতে চলেছি। মনোযোগ দিয়ে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়লে আশাকরি অনেক তথ্য পাবেন।
বর্তমান সময়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব প্রকট আকার ধারণ করেছে। প্রযুক্তির সাথে জড়িত নয় এমন একটি চাকরি পাওয়াও আজকাল কঠিন হয়ে পড়েছে। চলুন আরও বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
পেজ সূচিপত্রঃ কর্মক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ১০ টি ব্যবহার
- কর্মক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ১০ টি ব্যবহার
- কর্মক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব
- শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার
- যোগাযোগ ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার
- ব্যবসা-বাণিজ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার
- চিকিৎসা প্রযুক্তির সুবিধা কি কি
- অফিস আদালতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার
- দৈনন্দিন জীবনে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার
- কৃষি ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার
- গবেষণার কাজে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার
- পরিবহন ব্যবস্থাপনায় তথ্য ও প্রযুক্তির ব্যবহার
- লেখক এর শেষ কথাঃ কর্মক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ১০ টি ব্যবহার
কর্মক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ১০ টি ব্যবহার
কর্মক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ১০ টি ব্যবহার সম্পর্কে এখানে আলোচনা করব। কিন্তু এর বাইরেও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। তথ্য ও প্রযুক্তির ব্যবহার নেই এমন একটি সেক্টর বর্তমান সময়ে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। সময় যত আপডেট হচ্ছে তথ্য ও প্রযুক্তির ব্যবহার ততই বেড়ে চলেছে। বর্তমান সময়ে এমন কোন সেক্টর নেই যেখানে তথ্য ও প্রযুক্তির ব্যবহার নেই।
আমরা আগে বিভিন্ন অফিস আদালতে প্রচুর নথিপত্রের মোটা মোটা খাতা দেখতে পেতাম। কোন একটি বিষয় খুঁজতে গেলে তাদেরকে প্রত্যেকটি খাতা উল্টে উল্টে বিষয়টি বের করতে হতো। কোন কোন সময় এমন দেখা গেছে একটা নথি খুঁজতে সারাদিন পর্যন্ত লেগে যেতো। তথ্য ও প্রযুক্তির ব্যবহার এই সমস্ত কর্মকাণ্ডকে দ্রুত ও সহজ করে তুলেছে।
আমরা বিভিন্ন ধরনের কাজকর্ম করার জন্য বিভিন্ন অফিসে আবেদন করে থাকি, সে ক্ষেত্রে দেখা যায় কাজটি হতে প্রচুর সময় লেগে যায়। উদাহরণস্বরূপ বলতে গেলে আপনি যদি একটি লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেন আপনাকে প্রচুর সময় দিতে হবে। আপনি যদি বিদেশে যেতে চান তার জন্য যেই কাগজপত্রগুলা তৈরি করা প্রয়োজনীয় হবে তা করতেও প্রচুর সময় লেগে যায়। প্রযুক্তির উন্নতিতে এই সমস্ত কাজকর্মগুলো এক সময় আরো দ্রুত হয়ে যাবে।
কর্মক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব
কর্মক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব অপরিসীম। কর্ম মানে কাজ আর কাজই একটি মানুষের জীবন। এই জীবন যখন সহজ হয় তখন মানুষ অনেক কাজকর্ম অল্প সময়ে করতে পারে। কাজ করার জন্য যে বিষয়গুলো মানুষ প্রতিনিয়ত ব্যবহার করে থাকে তা যদি হয় সহজ ও সাবলীল হয়, সেক্ষেত্রে কাজের পরিমাণ ও গতি দুই ই বৃদ্ধি পায়।
মানব জীবনে কাজের গতি বৃদ্ধি ও সময়কে ছোট করার বিষয়ে তথ্য ও প্রযুক্তির গুরুত্ব অপরিসীম। মানুষের প্রয়োজনীয় যেকোনো কাজ সুন্দর ও ঝামেলামুক্ত ভাবে করার জন্য বিভিন্ন বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিষয় আবিষ্কার করেছেন এবং বর্তমান সময়ে আবিষ্কারের হার এত বেশি যে, প্রতিনিয়ত কাজের ক্ষেত্র পরিবর্তিত হচ্ছে।
কর্মক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ১০ টি ব্যবহার সহ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব এতটাই বেশি যে, মানুষ এই সেক্টর ব্যতীত বর্তমান সময়ে কোন কিছুই কল্পনা করতে পারে না। যে মানুষ তথ্যপ্রযুক্তিতে যত আপডেট সে ততোই তার জীবনে সফল। সফল হতে কে না চায়, এজন্য প্রয়োজন তথ্যপ্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে আমাদেরও প্রতিনিয়ত উন্নত হওয়া ও হওয়ার মন মানসিকতা পোষণ করা।
আরও পড়ুনঃ ফ্রিল্যান্সিং কোথায় শিখব - বিস্তারিত জানুন
শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার
শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার উল্লেখযোগ্য হারে দেখা যায়। আগে যেকোনো প্রতিষ্ঠানে পড়তে গেলে সেখানে ভর্তি হয়ে সশরীরে ক্লাস করতে হতো। বর্তমান সময়ে আপনি চাইলে ঘরে বসে পৃথিবীর সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হতে পারেন ও ক্লাস করতে পারেন। অনলাইনের কল্যাণে আপনি যে কোন গবেষণামূলক কাজকর্ম সাবলীল ভাবে করতে পারছেন।
বর্তমান সময়ে যেকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রজেক্টর এর মাধ্যমে ক্লাস নেওয়া ও ক্লাসের ভিডিও তৈরি করে শিক্ষার্থীদের দিয়ে দেওয়া হচ্ছে, যার কারনে প্রাইভেট টিউটরের বদলে এই ক্লাস ভিডিও গুলো দেখে শিক্ষার্থীরা খুব ভালোভাবে তাদের বিষয়টি বুঝতে পারছে। জানার দুনিয়া হাতের মুঠোয় এসে যাওয়ার কারণে কোন শিক্ষার্থী যদি কোন ধরনের সমস্যায় পড়ছে সাথে সাথে শিক্ষক তথ্য নেওয়ার সোর্স স্টুডেন্টকে বলে দিচ্ছে ও সে খুব দ্রুত সেই বিষয়ে সমাধান পেয়ে যাচ্ছে, যা হচ্ছে মূলত এই তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে।
বর্তমান সময়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাস এটেনডেন্টস নেওয়া হয় তথ্য ও প্রযুক্তির মাধ্যমে যার কারণে মাস শেষে বোঝা যায় একজন ছাত্র-ছাত্রী কি পরিমান ক্লাসে অ্যাটেন্ড করেছে। ক্লাসের বিভিন্ন বিষয়, বিভিন্ন ওয়ার্ক হোয়াটসআপ- মেসেঞ্জারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দিয়ে দেওয়া হচ্ছে যার মাধ্যমে সঠিক সময়ে সঠিক ক্লাস ওয়ার্ক শিক্ষার্থীরা সুন্দরভাবে করতে পারছে, যা হয়েছে মূলত তথ্য ও প্রযুক্তির উন্নতির কারণে।
আরও পড়ুনঃ ফ্রিল্যান্সিং হালাল ইনকামের খোঁজে
যোগাযোগ ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার
যোগাযোগ ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার আমরা প্রতিনিয়ত করছি। আমরা জানি পূর্বের সময়ে যোগাযোগ করার জন্য অন্যতম মাধ্যম ছিল চিঠি যা আজ বিলুপ্ত হয়ে তার জায়গা দখল করেছে তথ্য ও প্রযুক্তির অন্যতম মাধ্যম মোবাইল ফোন, ইমেইল, ভিডিও কনফারেন্স, টেলিফোন কনফারেন্স, টেলিভিশন ইত্যাদি। যার মাধ্যমে পৃথিবী হয়ে গেছে অনেক ছোট।
আমাদের দেশে অনেক আগে থেকেই বিদেশে চাকুরীর বিষয়টা রয়েছে। আমরা যদি তাদের কাছে কোন তথ্য পাঠাতে চাইতাম বা তাদের সাথে যোগাযোগ করতে চাইতাম সেক্ষেত্রে চিঠির উপরে নির্ভর করতে হতো। ঐ চিঠি ফ্লাইট এর মাধ্যমে সে দেশে পৌঁছাতো যা ছিল অনেক সময় সাপেক্ষ বিষয়। বর্তমান সময়ে তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে আমরা মুহূর্তের মধ্যে যেকোনো ইনফরমেশন, ছবি, ভিডিও পাঠাতে পারছি।
আমরা এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়ার জন্য রেল, বাস, এয়ার টিকিট কেটে থাকি। সশরীরে না যেয়ে আগে এই সমস্ত টিকিট কাটা কোনমতেই সম্ভব ছিল না। বর্তমান সময়ে ই টিকেটিং সিস্টেমের কারণে আমরা ঘরে বসে যেকোনো মাধ্যমের টিকেট কাটতে পারছি, যা আমাদের সময় বাঁচাচ্ছে এবং অনেক ঝামেলা থেকে মুক্তি দিচ্ছে আর এটা সম্ভব হয়েছে তথ্য ও প্রযুক্তির কারণে।
ব্যবসা-বাণিজ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার
ব্যবসা-বাণিজ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার খুব ভালোভাবে আমরা দেখতে পাই। আধুনিক ব্যবসা ও আমদানি রপ্তানিতে পূর্বে যে সময় ব্যয় হতো বর্তমানে তা শূন্যের কোঠায় এসে ঠেকেছে। বর্তমান সময়ে আমরা ব্যাংক, বীমা, ক্রেডিট কোম্পানি, পরিবহন ও উন্নত বিশ্বের যে কোন স্থান থেকে কেনাকাটা করতে পারছি খুব সহজে। যেটা সম্ভব হয়েছে একমাত্র তথ্য প্রযুক্তির উন্নতি সাধনের কারণে।
আমরা আজ এক জায়গায় বসে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে ই কমার্সের মাধ্যমে বিভিন্ন পণ্য কিনতে পারছি। বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট ভিজিট করার মাধ্যমে আমরা অনেক তথ্য ও বিষয় সম্পর্কে খুব সহজে জানতে পারছি। আমাদের যদি কোন একটি খাবার খেতে পছন্দ হয় সাথে সাথে আমরা বিভিন্ন ফুড ডেলিভারি অ্যাপ এর মাধ্যমে অর্ডার করছি এবং সাথে সাথে সে খাবার আমাদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে, যা তথ্য ও প্রযুক্তির কল্যাণে।
দেশের ভেতরে ও বাইরে বিভিন্ন ধরনের লেনদেন করার জন্য আমাদেরকে এখন কোন সময়ই ব্যয় করতে হচ্ছে না বলা যায়। ডুয়েল কারেন্সি কার্ড এর মাধ্যমে যেকোনো দেশ থেকে যেকোনো ধরনের ব্যবসায় খুব সহজে লেনদেন করতে পারছি। আমরা এখন দেখতে পাই, বাংলাদেশের প্রায় প্রত্যেকটি ব্যাংকের এটিএম বুথ রয়েছে, যার মাধ্যমে আমরা যেকোন স্থান থেকে আমাদের প্রয়োজনীয় টাকা উত্তোলন করতে পারছি, তার সাথে অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন অর্থ আদান-প্রদান খুবই সহজ হয়ে গিয়েছে প্রযুক্তির কল্যাণে।
আরও পড়ুনঃ ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে কতদিন লাগে
চিকিৎসা প্রযুক্তির সুবিধা কি কি
চিকিৎসা প্রযুক্তির সুবিধা কি কি এ বিষয়ে বলতে গেলে যেকোনো ধরনের জটিল রোগ নির্ণয় করা খরচ সাপেক্ষ হলেও তা এখন সম্ভব। আমরা জানি পূর্বে খুব সাধারণ রোগের কারণে মহামারী পর্যন্ত দেখা দিয়েছে। কিন্তু এখন মানবদেহের এমন কোন সমস্যা নাই যা প্রযুক্তির কল্যাণে সমাধান করা কষ্টসাধ্য। ইসিজি, আল্ট্রাসোনো, এন্ডোস্কোপি, চোখের সমস্যা নির্ণয় সহ দেহের অনেক জটিল অঙ্গের চিকিৎসা বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির কল্যাণে খুব সহজে করা যায়।
নতুন নতুন ঔষধ উদ্ভাবন ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে গবেষণার কাজ খুব সহজেই এখন ডাক্তাররা করতে পারছেন। বৈশ্বিক বিভিন্ন সভা-সেমিনার, ওয়েবিনার সহ যেকোনো সময় এক দেশ থেকে আরেক দেশের চিকিৎসকদের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করা তা এখন নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা হিসেবে পরিচিত। বিভিন্ন দেশের চিকিৎসা শাস্ত্রের গবেষকদের সভা-সেমিনারের মাধ্যমে নতুন নতুন রোগের চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যাপক সফলতা পাওয়া যাচ্ছে।
বিশ্বে যে সমস্ত দেশে চিকিৎসার উন্নতির জন্য বিভিন্ন যন্ত্রপাতি আবিষ্কার হচ্ছে ও বাজারজাত হচ্ছে তা আমরা যেকোনো দেশে বসে কিনতে পারছি ও দেশের জনগণকে সেবা দিতে পারছি। এ বিষয়টা এত উন্নত ও সহজলভ্য হয়েছে একমাত্র তথ্য ও প্রযুক্তির কল্যাণে। ভবিষ্যৎ সময়ে আমরা বলতে পারি, এ জাতীয় সুযোগ সুবিধা আরো ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাবে এবং আমাদের জীবন আরো সুন্দর ও সহজ হয়ে উঠবে।
আরও পড়ুনঃ কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং এ্যাকাউন্ট খুলব
অফিস আদালতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার
অফিস আদালতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার অফিসিয়াল যেকোনো ধরনের কাজকে অনেক সহজ করে তুলেছে। আমরা পূর্বের সময় দেখতে পেতাম অফিসে গাদা গাদা খাতা বা নথির সারি। আদালতে একটি কেসের জন্য বিভিন্ন ধরনের হয়রানি মূলক সমস্যা দেখা দিত। বর্তমান সময়ে এ জাতীয় সমস্যা এক ক্লিক এর মাধ্যমে সমাধান হয়ে যাচ্ছে শুধুমাত্র তথ্য ও প্রযুক্তির কল্যাণে।
অফিস আদালতে এখন ধুলোবালিময় নথিপত্রের সারির বদলে আমরা দেখতে পাচ্ছি একটি কম্পিউটার ও প্রিন্টার। তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে মানুষের সময় ব্যাপক হারে কমে যাওয়ার কারণে হয়রানি মূলক ও তথ্যের সীমাবদ্ধতা দূর হয়ে গিয়েছে, যা কাজের গতিতে দ্রুত ও সাবলীল করে তুলেছে তথ্য প্রযুক্তি। মানব জীবনের ক্রমবর্ধমান উন্নতি সাধনের সাথে সাথে প্রযুক্তির ব্যবহারের কারণে জীবন জীবিকা নির্বাহ সহজ করে তুলেছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি।
আগামী ভবিষ্যতে অফিস আদালতে কাজের জন্য পিয়নের ছোটাছুটি হয়তো আমরা আর দেখতে পাবো না। কারণ, যেকোনো একটি নোটিশ ইমেইলের মাধ্যমে মুহূর্তে সবার কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। আগে যে কোন ছুটির জন্য সরকারি ক্যালেন্ডার ব্যবহার হতো এবং অতিরিক্ত ছুটি নোটিশে হাতে লিখে ঝুলিয়ে দেওয়া হতো। সবাই সেখান থেকে একে একে এসে দেখে পড়ে নিতো কিন্তু এ সমস্যাও তথ্য প্রযুক্তি খুব দ্রুততম সমাধানের পথ খুঁজে দিয়েছে।
দৈনন্দিন জীবনে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার
দৈনন্দিন জীবনে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার আমাদের জীবনকে সহজ ও সুন্দর করে তুলেছে। আমরা বিদ্যুৎ ব্যবহারের সাথে সাথে বাড়িতে টেলিভিশন, ফ্রিজ, এসি সহ আরো আপডেট বিভিন্ন গেজেট ব্যবহার করছি। উন্নত বিশ্বে দেখা যায় সম্পূর্ণ বাড়িটাই তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। যেকোন স্থান থেকে ভয়েস কমান্ড এর মাধ্যমে যেকোনো কাজ করা যাচ্ছে।
আমরা আগে যে সমস্ত গাড়ি ব্যবহার করতাম তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে সেই গাড়িগুলো হয়ে গেছে এখন অনেকটা রোবটিক স্টাইলের। গাড়ির কোন যন্ত্রের সমস্যা হলে সাথে সাথে বলে দিচ্ছে আবার ট্রাফিক সিগনাল মেন্টেইন করা যায় এই গাড়িতে বসেই, সাথে আপনি চাইলে অটো ড্রাইভারের সুবিধা ও পেয়ে যাবেন যা সম্ভব হয়েছে এই তথ্য ও প্রযুক্তির কল্যাণে।
মানব জীবনে তথ্যপ্রযুক্তির গুরুত্ব ব্যাপক। আমাদের জীবনমান সহজ থেকে সহজতর করে তুলেছে এই তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার। প্রতিনিয়ত দৈনন্দিন কাজে প্রয়োজন এ সমস্ত বিষয়ের আপডেট ভার্সন আমরা পেয়ে যাচ্ছি। বিভিন্ন ধরনের কুকার আমাদের রান্নার ঝামেলা একেবারেই মুক্ত করে দিয়েছে। আমরা বলতে পারি দৈনন্দিন জীবনে এমন কোন সেক্টর নাই যেখানে প্রযুক্তির ব্যবহার হয় না।
কৃষি ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার
কৃষি ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহারের বিষয়ে যদি আমরা বলতে চাই পূর্বের সময় লাঙ্গল দিয়ে চাষ করে ফসল ফলানো হতো, তা ছিল যথেষ্ট সময় ও কষ্টসাধ্য বিষয়। বর্তমান সময়ে তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে আমরা অনেক আপডেট যন্ত্র পেয়েছি, যা এই সমস্যা থেকে আমাদেরকে মুক্তি দিয়েছে। আমরা বিভিন্ন ধরনের গাইডলাইন পেয়ে যাই তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে যার মাধ্যমে আমাদের ফসল আরো ভালোভাবে ফলানো সম্ভব হয়।
বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে বীজের উন্নতি সাধন, বিভিন্ন ক্রস ফসলের উদ্ভাবন, ১২ মাস ফলানোর মত ফসলকে তৈরি সহ প্রত্যেকটি ফসলের ফলন ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে। ফসল ফলানোর ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সমাধান হয়ে যাচ্ছে সহজে যা পূর্বে এমনও দেখা গেছে একটি সমস্যার কারণে বছরের পুরো ফসলটাই নষ্ট হয়ে গেছে যা এখন হওয়া অসম্ভব, মূলত এই তথ্যপ্রযুক্তির কারণে।
মাঠে ফসল ভালো হওয়া সত্বেও ফসলকে ঘরে তোলার যে সনাতন পদ্ধতি ছিল তা থেকে আমরা বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখতে পেতাম। মাঠ ভর্তি ফসল ঘরের তোলার আগে নষ্ট হয়ে যাওয়ার মতো নজিরও রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে জনবল না পাওয়ার কারণে ফসলের ক্ষতি হওয়াটা ছিল নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। বর্তমান প্রযুক্তির কল্যাণে খুব অল্প সময়ের মধ্যে অধিক জনবলের কাজ অল্প সময়ে করা সম্ভব হচ্ছে, যার অবদান তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিকে দেওয়া যায়।
আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশে কোটিপতি হওয়ার উপায়
গবেষণার কাজে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার
গবেষণার কাজে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার ব্যাপকভাবে আমরা দেখতে পাচ্ছি। পূর্বের বিজ্ঞানীগণ বিভিন্ন ধরনের গবেষণা করেছেন, এমনও অনেক সময় হয়েছে একই গবেষণা দুইজন করছেন না জানার কারণে। একজন স্বীকৃতি পাচ্ছেন তো আরেকজন পাচ্ছেন না বা এমনও অনেক সময় হয় কোন বিজ্ঞানী একটি বিষয় নিয়ে গবেষণা করতে করতে মারা গেলেন সেই গবেষণার বিষয়বস্তু ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা না জানার কারণে ওই গবেষণাটা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না।
বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির যুগে আমরা বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীদের সাথে সব সময় যোগাযোগের কারণে কে কি বিষয় নিয়ে গবেষণা করছে তা সহজেই জানতে পারছি, যার কারনে মেধার বাজে খরচ হচ্ছে না। অনেক সময় দেখা যায় একই বিষয় নিয়ে দুইজন গবেষক গবেষণা করছেন। নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ থাকায় গবেষণার শুরুতে তারা জানতে পারছেন এবং যেকোনো একজন ওই বিষয় থেকে সরে অন্য আরেকটি বিষয় নিয়ে গবেষণা শুরু করলেন তাতে দুইটি বিষয়ে আমরা ফলাফল পেলাম।
অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে অনেক গবেষকের ক্ষেত্রে গবেষণা করার জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা ও প্রয়োজনীয় গবেষণা উপাদান পাওয়া কষ্টকর। বিভিন্ন উপাদান সংগ্রহের ক্ষেত্রে গবেষকরা বিভিন্ন দেশ থেকে বিভিন্ন দ্রব্য আমদানি করতে পারছেন এবং তা তাদের গবেষণা কাজে লাগাতে পারছেন। পূর্বের সময় এ ধরনের কাজকর্ম করতে বছরকে বছরও লেগে যেতে পারত কিন্তু বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে তা হয়ে গেছে সহজ ও সাবলীল একটি বিষয়।
পরিবহন ব্যবস্থাপনায় তথ্য ও প্রযুক্তির ব্যবহার
পরিবহন ব্যবস্থাপনায় তথ্য ও প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির কারণে অনেক ঝামেলা ও সময় বেঁচে গিয়েছে। বিভিন্ন ধরনের পরিবহন সংক্রান্ত সমস্যা আমরা সব সময় ফেস করে এসেছি। বিশেষ করে ঈদের সময় টিকিট পাওয়া একটা জটিল ও সৌভাগ্যের বিষয় হিসেবে দেখা হতো। আবার গাড়ির যন্ত্রাংশগুলো সেকেলে হওয়ার কারণে ও রক্ষণাবেক্ষণ এর সুন্দর ব্যবস্থাপনা না থাকার কারণে পরিবেশ দূষণ থেকে সড়ক দুর্ঘটনার মত ঘটনা খুবই স্বাভাবিক বিষয় ছিল।
অনেক ক্ষেত্রে দূরযাত্রার বিভিন্ন যানবাহন সম্পর্কে তথ্য না থাকার কারণে ও স্বল্পতার কারণে যাত্রীরা বিভিন্ন জায়গায় যেয়ে বসে থাকতো ও যানবাহনের অপেক্ষা করত, এটা খুব একটা ঝামেলার বিষয় ছিল। বর্তমান সময়ে এই বাংলার এমন কোন স্থান নাই যেখান থেকে বিভিন্ন স্থানে যাওয়া কষ্টকর অবস্থায় রয়েছে। একেবারেই রুরাল এরিয়া ব্যতীত এ জাতীয় সমস্যা তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে এখন নেই বললেই চলে।
আমরা এখন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এয়ার টিকিট, এয়ারের অবস্থান, সিডিউল সহ রেলের ক্ষেত্রেও রেলের টাইম লস, রেল বর্তমানে কোথায় অবস্থান করছে এ জাতীয় বিষয় সহ শহরের যেকোন স্থান থেকে পরিবহনের জন্য ট্যাক্সিকে বা বাইক রাইড এগুলো আমরা পেয়ে যাচ্ছি আমাদের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এক ক্লিকে। সুতরাং, আমরা বলতে পারি তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে আমাদের পরিবহন ব্যবস্থাপনা অনেক সুন্দর ও সাবলীল হয়েছে।
লেখক এর শেষ কথাঃ কর্মক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ১০ টি ব্যবহার
কর্মক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ১০ টি ব্যবহার বিষয়ে আমরা বলতে পারি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কল্যাণে আমাদের জীবনে যে সমস্ত বিষয় আছে, সব ক্ষেত্রেই ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়েছে এবং আমাদের সময় অনেক দ্রুত ও বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সহজ উপায় গুলো বের হয়েছে।
আমার এই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন বিষয়ের উপর আর্টিকেল প্রকাশ করা হয়। আমি আশা করছি উপরোক্ত আলোচনা থেকে আপনারা বিষয়স সংশ্লিষ্ট জ্ঞান অর্জন করতে পেরেছেন। বিভিন্ন ধরনের বিষয় সম্পর্কে জানতে এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। আপনাদের স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবন কামনা করে এখানেই শেষ করছি।
আর্টমহলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url