ফ্রিল্যান্সিং কোথায় শিখব বিস্তারিত জানুন
ফ্রিল্যান্সিং কোথায় শিখব এই প্রশ্নটি, যে সমস্ত নতুনরা ফ্রিল্যান্সিং জগতে ঢুকতে চাচ্ছেন তাদের মনের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আসলেই তো, ফ্রিল্যান্সিং কোথায় শিখলে ভালো হবে। আজকে আমরা এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
ফ্রিল্যান্সিং কোথায় শিখতে পারি এই কথার পাশাপাশি আরেকটি প্রশ্ন মনে জেগে ওঠে যে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখব। আজকের এই ব্লগটি আপনারা সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে পড়লে বিস্তারিত তথ্য পাবেন। তবে, চলুন শুরু করা যাক।
পেজ সূচিপত্রঃ ফ্রিল্যান্সিং কোথায় শিখব
- ফ্রিল্যান্সিং কোথায় শিখব
- ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখব
- মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখব
- ফ্রিল্যান্সিং কি এবং কেন
- ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধা কি কি
- ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি
- ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোনটি বেশি প্রয়োজন হয়
- ফ্রিল্যান্সিং এর বর্তমান অবস্থা
- একজন ফ্রিল্যান্সারের মাসিক আয় কত
- লেখকের শেষ কথাঃ ফ্রিল্যান্সিং কোথায় শিখব
ফ্রিল্যান্সিং কোথায় শিখব
ফ্রিল্যান্সিং কোথায় শিখব এ কথার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বলতে পারি, বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সিং জনপ্রিয় একটি সেক্টর যেখানে বয়স ভেদে বিভিন্ন ধরনের মানুষ কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের দেশের তরুণরা বিশেষ করে এই সেক্টরের প্রতি অত্যন্ত নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। পড়াশোনার পাশাপাশি তারা ফ্রিল্যান্সিং করছে সাথে চাকরিজীবী ব্যক্তিরাও চাকুরীর পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং কে সুন্দর আয়ের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে আমরা দেখতে পারি বয়স্ক ব্যক্তিরাও ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই।
এই যে সমস্ত মানুষ ফ্রিল্যান্সিং করছে তারা নিশ্চয়ই কোথাও না কোথাও থেকে এ বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করেছে। ফ্রিল্যান্সিং কোথায় শিখব এই প্রশ্নের উত্তরে বলা যেতে পারে ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য সবচেয়ে বড় মাধ্যম, গুগল ও ইউটিউব। আমরা জানি, গুগল ও ইউটিউবে যে কোন বিষয়ের উত্তর থাকে। আমরা যদি নিজেরা বুঝতে পারি যে, কোন বিষয়ের পর কোন বিষয়ের জ্ঞান অর্জন করলে আমরা ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারবো, সেক্ষেত্রে বিনামূল্যে এই দুটি সোর্স থেকে আমরা শিখতে পারি।
এখন বলি, ইউটিউব ও গুগলে আপনারা সঠিক গাইডলাইন পাবেন না, অনেক ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য যে বিষয়গুলো স্টেপ বাই স্টেপ শিখতে হয় সেগুলো সুন্দরভাবে শেখা যায় না। সেক্ষেত্রে বলা যেতে পারে, আপনার নিকটস্থ যেকোনো আইটি ট্রেনিং সেন্টার থেকে যদি নির্দিষ্ট বিষয়ে কোর্স করেন, সফল ফ্রিল্যান্সার হতে আপনি সম্পূর্ণ গাইডলাইন পেয়ে যাবেন। কিন্তু মনে রাখবেন, বর্তমান সময়ে ধোঁকাবাজ এত পরিমানে বেড়েছে যে সঠিক প্রতিষ্ঠান খুঁজে পাওয়া কষ্টসাধ্য ব্যাপার।
এ বিষয়ের সুন্দর সমাধান হচ্ছে, আপনারা যেই প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ নিতে চাচ্ছেন সেই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে গুগল ও ইউটিউবে সার্চ দিন। যে ব্যক্তি আপনাদের ট্রেইনার হবে তার সম্পর্কে সম্পূর্ণ খোঁজ খবর নিন। যেই প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে চাচ্ছেন সেই প্রতিষ্ঠানের পূর্বের ছাত্ররা সফল কিনা সে বিষয়ে জানুন। শুধুমাত্র সুন্দর বিজ্ঞাপন ও কথার ফুলঝুরিতে ভুলবেন না। আপনারা যদি সঠিক প্রতিষ্ঠান পেয়ে যান, সেক্ষেত্রে সুন্দরভাবে প্রশিক্ষণ নিয়ে যে বিষয়ে শিখতে চাচ্ছেন সে বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করুন ও প্রচুর প্র্যাকটিস করুন।
ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখব
ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখব এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে গেলে, ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য যে উপায়গুলো রয়েছে তার মধ্য থেকে যদি আপনারা কোনো আইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে আপনারা ফ্রিল্যান্সিংয়ের যে সেক্টরটিতে দক্ষ হতে চাচ্ছেন, চোখ কান বুঝে সেই বিষয়ে পরিপূর্ণ দক্ষ হওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগে যান। প্রচুর সময় ও প্র্যাক্টিস আপনাকে সফলতার উচ্চস্থানে নিয়ে যেতে পারে। বিষয় সংশ্লিষ্ট জ্ঞান অর্জন কালীন সময়ে কখনো এটা ভাবা ঠিক হবে না যে, আমি কত দ্রুত ইনকাম শুরু করব বা আমার ইনকাম শুরু হচ্ছে না কেন। একটা কথা মনে রাখবেন, আপনি যদি যে বিষয়ে ফ্রিল্যান্সিং করতে চাচ্ছেন সে বিষয়ে দক্ষ হন, কাজ আপনাকে খুজে নিবে।
ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য আপনার প্রয়োজন হবে একটি কম্পিউটার ও ইন্টারনেট লাইন। এ দুটি যখন আপনার হাতে থাকবে তখন আপনি এ বিষয়ে ইউটিউব ও গুগলে যেটা জানতে চাচ্ছেন সেটা লিখে সার্চ করে জেনে নেন। বিভিন্ন সেমিনার অনুষ্ঠিত হয় সেখান থেকে জ্ঞান নিতে পারেন। ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে যারা সফল হয়েছে তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নেবেন এবং কিভাবে তারা সফল হয়েছে সে সম্পর্কে জানবেন। আপনাদের এই জানার বিষয়টি সামনের দিকে এগিয়ে যেতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করবে।
এই পৃথিবীতে দক্ষ ব্যক্তির অনেক চাহিদা আর অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে দক্ষতার কোন বিকল্প নেই। এজন্য দক্ষ হতে প্র্যাকটিসের কোন বিকল্প নেই আর প্র্যাকটিস করার জন্য আপনার দিনে নির্দিষ্ট পরিমাণ সময় প্রতিদিন ব্যয় করতে হবে। সব সময় মনে রাখবেন, প্র্যাকটিস করার সময় বা জ্ঞান অর্জনের সময় আপনি যতটুকু অলসতা করবেন ততটুকু পিছিয়ে পড়বেন। অলস ব্যক্তিরা কখনো সফল হতে পারেনা কিন্তু অনেক সময় দেখা যেতে পারে যে প্রচুর কাজ করছেন তারপরেও সফল হতে পারছেন না তখন হাল না ছেড়ে কোথায় আপনার সমস্যা হচ্ছে এ বিষয়টি খুঁজে বের করুন ও সমাধান করুন, আপনি অবশ্যই সফল হতে পারবেন।
মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখব
মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখব এ বিষয়ে বলতে গেলে আমাদের ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য যে বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তা হল প্রচুর পরিমাণে ভিডিও দেখা ও বিষয় সম্পর্কে জানা। আমরা জানি বর্তমান সময়ে যে মোবাইল ফোন গুলো রয়েছে তা দিয়ে অনেক জটিল কাজ পর্যন্ত করা যায়। আমরা প্রতিনিয়ত ইউটিউবে ভিডিও দেখে থাকি ও গুগলে সার্চ করি মোবাইল ফোন দিয়ে। এই দুটি কাজ আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আপনি যখন ইউটিউব, গুগল ও ফেসবুক থেকে মোবাইলের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের জ্ঞান অর্জন করবেন, তখন তা প্র্যাকটিস করার জন্য মোবাইল ফোন সম্পূর্ণরূপে সক্ষম না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আপনাকে কম্পিউটারের সাহায্য নিতে হবে। এজন্য বলা যায় শুধুমাত্র মোবাইল ফোন দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করা সম্ভব না তবে কিছু কিছু বিষয় আপনারা করতে পারবেন। যেমনঃ কনটেন্ট রাইটিং। কনটেন্ট রাইটিং করার জন্য আপনার মোবাইল ফোনই যথেষ্ট কিন্তু আপনি যদি আপনার লেখাটা আরো ভালো মানে নিয়ে যেতে চান, তার জন্য কম্পিউটারের সহায়তা নিতে হবে।
আপনি যখন মোবাইল ফোনের সাথে সাথে একটি কম্পিউটার দিয়ে আপনার ফ্রিল্যান্সিং শেখার বিষয়গুলি সুন্দরভাবে প্র্যাকটিস করবেন তখনই আপনি দক্ষ হয়ে উঠবেন আর দক্ষতা আপনাকে আপনার কাঙ্খিত কাজ খুঁজতে ও করতে সাহায্য করবে। একটা কথা মনে রাখবেন, বিভিন্ন ধরনের গেম খেলা ও বিনামূল্যে অনেক ইনকামের বিষয় সহ অ্যাড দেখে টাকা ইনকাম, বিভিন্ন এপসের প্রমোশন করে বা রেফার করে টাকা ইনকাম, এগুলো বিষয় ফ্রিল্যান্সিং এর মধ্যে পড়ে না। এজন্য ফ্রিল্যান্সিং করার আগে কাজের বিষয়গুলো সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন।
আরও পড়ুনঃ কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং এ্যাকাউন্ট খুলব
ফ্রিল্যান্সিং কি এবং কেন
ফ্রিল্যান্সিং কি এবং কেন এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে গেলে আমরা বলতে পারি যে, ফ্রিল্যান্সিং হল এক ধরনের পেশা যেটা করার জন্য কোন অফিসে যেতে হয় না বা কারোর আন্ডারে থেকে তার কথামতো কাজ করতে হয় না বরং এটি একটি স্বাধীন পেশা, যেখানে আপনি আপনার ইচ্ছামত আপনার দক্ষতা অনুযায়ী কাজ করবেন ও পেমেন্ট নিবেন। এটা বলা যায় এক ধরনের প্রজেক্ট সিস্টেমের ইনকাম, যেমনঃ বায়ার আপনাকে কাজ দিবে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আপনি কাজটি করে দিবেন তার পরিপ্রেক্ষিতে পেমেন্ট পাবেন, এটাই ফ্রিল্যান্সিং।
ফ্রিল্যান্সিং কেন এ বিষয়ে বলতে গেলে বর্তমান সময় তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর হওয়ায় এই সেক্টরে সমস্ত ধরনের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সহ আমাদের দেশেও কাজ করার জন্য এই সেক্টর টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বায়ার এবং সেলারদের মাঝে। ধরুন, আপনার একটা প্রতিষ্ঠান আছে, আপনি কাজ করার জন্য কোন ব্যক্তি নিয়োগ দিবেন, বিষয়টি যেমন সময় সাপেক্ষ তেমনি ঝামেলা পূর্ণ। সেক্ষেত্রে আপনি অনলাইন প্লাটফর্মে আপনার প্রজেক্ট এর জন্য এড দিলেন, দক্ষতা সম্পন্ন ব্যক্তিরা আপনার কাজ করে দিল, তাতে সময় এবং অনেক ধরনের ঝামেলা থেকে আপনি মুক্তি পেলেন।
চাকরি দিয়ে একজন ব্যক্তির কাছ থেকে আপনার কাঙ্খিত কাজ সব সময় নাও পেতে পারেন ও একই ধাঁচের একঘেয়ে কাজ আপনার প্রতিষ্ঠানকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে বাধা হতে পারে। সেক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টর টা সুবিধাজনক এ কারণে যে, আপনি বিভিন্ন কাজের জন্য বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সারকে নিয়োগ দিচ্ছেন ও কাজ করে নিচ্ছেন, কাজটি মানসম্পন্ন পেয়ে যাচ্ছেন এবং বিভিন্ন ধরনের কাজ পাচ্ছেন। এই ভেরিয়েশনটা আপনার প্রতিষ্ঠানকে অনেক এগিয়ে নিয়ে যাবে, এ কারনেই ফ্রিল্যান্সারদের দিয়ে কাজ করার হার দিন দিন বাড়ছে।
আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশে কোটিপতি হওয়ার উপায়
ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধা কি কি
ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধা কি কি এ বিষয়ে বলতে গেলে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে বায়ার এবং সেলার থাকে। বলতে গেলে দুই পক্ষই সুবিধা পায় ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে। ধরুন আপনি একজন বায়ার, আপনার যে ধরনের কাজ প্রয়োজন সেটা ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে অ্যাড দিলেন এবং আপনি ফ্রিল্যান্সার পেয়ে গেলেন এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আপনার কাজ হয়ে গেল, এটা বায়ারের সুবিধা।
সেলারের ক্ষেত্রে সেলার নিজের কম্পিউটারের সামনে অনলাইন সংযোগ দিয়ে বসে আছেন, তিনি বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস ভিজিট করছেন যে কোথায় কাজ আছে, তিনি একটি কাজের জন্য এপ্লাই করলেন এবং কাজ পেয়ে গেলেন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ করে দিয়ে পেমেন্ট নিয়ে নিলেন, এটা সেলার বা ফ্রিল্যান্সারের সুবিধা। দুটি ক্ষেত্রেই বিভিন্ন ঝামেলা ও সময় বাঁচানো গেল। এজন্য আমরা বলতে পারি, গতিশীল একটি ব্যবসায়িক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য ফ্রিল্যান্সিং সেক্টর টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যদি আপনাদের সাথে আলোচনা করতে চাই তাহলো কর্মসংস্থান। অর্থাৎ, বর্তমান সময়ে পড়াশোনা চলাকালীন ইনকামের রাস্তা একমাত্র ফ্রিল্যান্সিং। পড়াশোনা চলাকালীন এই কাজটার সাথে সাথে পড়াশোনা শেষ করার পর নির্দিষ্ট একটা চাকরি নিয়ে জীবন নির্বাহ করতে হবে এমন সমস্ত চিন্তা থেকে ফ্রিল্যান্সিং আপনাকে মুক্তি দেবে। বর্তমান সময়কে চিন্তা করে এই সুবিধাটা এখন আমরা ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে পেয়ে থাকি।
ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি
ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, বর্তমান সময়ে সারা বিশ্বে প্রচুর পরিমাণে ফ্রিল্যান্সার রয়েছে এবং এর হার দিন দিন বাড়ছে। আমরা বলতে পারি, আগামী এক দুই বছরের মধ্যে সারা বিশ্বে ফ্রিল্যান্সিং কাজের হার দ্বিগুণ হয়ে যেতে পারে। বর্তমান সময় থেকে যেভাবে ফ্রিল্যান্সিং এর বিভিন্ন সেক্টর উন্নত হয়ে উঠছে তাতে বলা যায়, এই সেক্টরের ভবিষ্যৎ খুবই সম্ভাবনাময় ও উজ্জ্বল।
এখন কথা হচ্ছে এই সেক্টর সম্ভাবনাময় এটা কিভাবে বুঝব, দেখুন একটি কাজ যদি স্থায়ী কোন ইমপ্লয়ার কি দিয়ে করানো হয় সেক্ষেত্রে কোম্পানির খরচ ও সময় যে পরিমাণ হয় তার চেয়ে যদি ওই কাজটি ফ্রিল্যান্সিং সেক্টর এর মাধ্যমে করা হয় সেই খরচ তিন ভাগের এক ভাগ হয় আর অনলাইনে প্রত্যেক ফ্রিল্যান্সারের কর্ম দক্ষতা সম্পর্কে সমস্ত নথি যেহেতু দেওয়া থাকে বায়াররা খুব সহজেই দক্ষ ফ্রিল্যান্সার খুঁজে পায়।
এই সমস্ত অ্যাডভান্টেজ এর কারণে ভবিষ্যতে স্থায়ী ইমপ্লয়ারের হার অনেক মাত্রায় কমে যেতে পারে, সেই জায়গাটা দখল করবে ফ্রিল্যান্সাররা। সাধারণত ফ্রিল্যান্সাররা দুই ভাবে কাজ করে, যেমনঃ রিমোট ও প্রোজেক্ট। রিমোট ফ্রিল্যান্সার অর্থাৎ বিভিন্ন দেশ থেকে কাজ পেয়ে ওই কাজ করে দেওয়া এবং প্রজেক্ট হল অনেকটা চাকরির মত, অর্থাৎ প্রতিমাসে কমপক্ষে ১৪০ থেকে ১৬০ ঘন্টা ওই কোম্পানির হয়ে কাজ করে দিতে হয়। এখন আপনারা বুঝতেই পারছেন ফ্রিল্যান্সিং সেক্টর টা ভবিষ্যতে অনেক ভালো অবস্থানে চলে যাবে।
আরও পড়ুনঃ ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে কতদিন লাগে
ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোনটি বেশি প্রয়োজন হয়
ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোনটি বেশি প্রয়োজন হয় এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে শুরুতে যে কথাটি আসে তাহলো দক্ষতা। অর্থাৎ আপনার দক্ষতার উপরে নির্ভর করবে আপনি কত ভালোভাবে ফ্রিল্যান্সিং কাজ করতে পারবেন। বন্ধুগণ, আপনাদের কে মনে রাখতে হবে দক্ষতা কিন্তু অল্প সময়ে আসে না এবং অল্প পরিশ্রমের ফলে অর্জন হয় না। দক্ষতা অর্জন করতে হলে আপনাকে প্রচুর ধৈর্যশীল হয়ে যেই সেক্টরটি আপনি শিখতে চাচ্ছেন ওই সেক্টরে সময় দিয়ে কাজ শিখতে হবে।
ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য প্রয়োজন হবে একটি কম্পিউটার, ইন্টারনেট সংযোগ, একটি মার্কেটপ্লেস অ্যাকাউন্ট ও মার্কেট সম্পর্কে বোঝা। এই সমস্ত বিষয়গুলো যদি আপনার আয়ত্তে থাকে আপনি একজন দক্ষ ফ্রিল্যান্সার হিসেবে খুব দ্রুত পরিচিতি পাবেন। ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয়তা হল বায়ারের রেটিং, অর্থাৎ আপনি যে বায়ারের কাজ করবেন কাজটি যদি সুন্দর হয় বায়ার আপনাকে ভালো রেটিং দিবে কাজ খারাপ হলে কম রেটিং পাবেন এই রেটিং এর উপর নির্ভর করবে আপনার ভবিষ্যতে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা।
আরেকটি বিষয় ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য খুবই প্রয়োজনীয় তাহলো প্রচার, অর্থাৎ আপনাকে একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করে সেখানে নিয়মিত ভিডিও আপলোড ও আপনার কাজ সম্পর্কে প্রচার করতে হবে। সেই সাথে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও আপনার সম্পর্কে প্রচার করতে হবে। এর মাধ্যমে আপনি দ্রুত মানুষের কাছে দক্ষ ফ্রিল্যান্সার হিসেবে পরিচিতি পাবেন এবং একজন বায়ার যখন আপনাকে কাজ দিতে চাইবে তখন আপনার এই এভিডেন্স গুলো কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে।
আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশে কোটিপতি হওয়ার উপায়
ফ্রিল্যান্সিং এর বর্তমান অবস্থা
ফ্রিল্যান্সিং এর বর্তমান অবস্থা যদি আমি আলোচনা করতে চাই সে ক্ষেত্রে বিস্তারিত বলতে গেলে বড়োসড়ো একটি আর্টিকেল লেখার প্রয়োজন। তা সত্ত্বেও আমি সংক্ষেপে কিছু বিষয় আজকে আলোচনা করছি। ফ্রিল্যান্সিং কোথায় শিখব এই কথার সাথে এও জানতে হবে বর্তমান পৃথিবীতে ফ্রিল্যান্সিংয়ের যে চিত্র তাতে বাংলাদেশের অবস্থা বেশ নিচুতে। যদিও জনসংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থা বিশ্বে দ্বিতীয় কিন্তু দক্ষ জনবলের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থা ২৯ তম। বর্তমানে বাংলাদেশে রেজিস্টার্ড ফ্রিল্যান্সার রয়েছে সাড়ে ছয় লাখের বেশি। এরমধ্যে পাঁচ লাখ কর্মরত রয়েছেন।
অন্য একটি সোর্স থেকে জানা যায় যে, বর্তমান বাংলাদেশে ১০ লাখের মতো ফ্রিল্যান্সার রয়েছে। সংখ্যাটা দশ লাখ হলেও দক্ষ জনবলের দিক থেকে এই সংখ্যা কত তা বলা মুশকিল হলেও এটা আমরা বুঝতে পারি যে তা খুবই নগণ্য। অর্থাৎ আমরা যদি দক্ষ জনবল বা দক্ষ ফ্রিল্যান্সার তৈরি করতে না পারি, সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থা আরো নিম্নমুখী হবে। এই আলোচনা থেকে আপনারা বুঝতে পারলেন ফ্রিল্যান্সিং এর বর্তমান অবস্থা যা আছে তার থেকে আরো বেশি রয়েছে চাহিদা। অর্থাৎ চাহিদা অনুযায়ী আমাদের দেশে দক্ষ জনবল নেই।
আপনারা যারা নতুন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চাচ্ছেন তাদের জন্য বলি, এখনো বাংলাদেশ দক্ষ জনবল বা দক্ষ ফ্রিল্যান্সারের প্রচুর অভাব রয়েছে। এখন থেকে যদি শুরু করে দক্ষতার মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারেন, ভবিষ্যতে আপনার অবস্থান হবে অনেক উপরে। ধরুন দশ বছর আগে যে সমস্ত কাজকর্ম ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে চলতো বর্তমানে তা এ আই দিয়ে করা হচ্ছে। যার কারনে প্রতিনিয়ত আপডেট না হওয়ার কারণে ও নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা না থাকার কারণে ১০ বছর আগের ফ্রিল্যান্সাররা মার্কেট থেকে ঝরে পড়ছে।
একজন ফ্রিল্যান্সারের মাসিক আয় কত
একজন ফ্রিল্যান্সারের মাসিক আয় কত এ বিষয়ে বলতে গেলে, একজন দক্ষ ফ্রিল্যান্সারের মাসিক আয় সম্পর্কে কোন সঠিক ধারণা পাওয়া সম্ভব না। একটা বিষয় মনে রাখবেন, আপনি যত দক্ষ হয়ে উঠবেন আপনার কাজ ও কাজের পেমেন্টের হার তত বেশি হবে। আপনি যদি এখন ফ্রিল্যান্সিং শুরু করেন এবং মন দিয়ে কাজ করেন আপনার বায়াররা যদি আপনার রেটিং ভালো দেয় আপনি আজ যে অর্থে কাজ করছেন এক বছর পর সেই অর্থ কয়েক গুণ বেড়ে যেতে পারে।
একজন ফ্রিল্যান্সার দক্ষ হয়ে যদি কাজ শুরু করেন সেক্ষেত্রে ধরে নেওয়া যায় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারেন। এমাউন্টটা খুব কম মনে হলেও এভাবে যদি টানা এক বছর নীতি নৈতিকতার সাথে ও মন দিয়ে কাজ করে যান, তা তিনগুণ বৃদ্ধি পাওয়াটা মোটেও অসম্ভব হবে না। সুতরাং বুঝতেই পারছেন একজন ফ্রিল্যান্সারের মাসিক আয় সম্পর্কে না জেনে কাজের দক্ষতার দিকে মনোনিবেশ করা উচিত। মনে রাখবেন, দক্ষ মানুষের বা দক্ষ ফ্রিল্যান্সারদের বর্তমান পৃথিবীতে প্রচুর মূল্য রয়েছে।
বর্তমান পৃথিবীতে ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্র, তারপর ভারত। এভাবে করে পৃথিবীর বিভিন্ন রাষ্ট্র ফ্রিল্যান্সিংয়ে অনেক এগিয়ে আছে কারণ তারা একজন ফ্রিল্যান্সারের মাসিক আয় কত এ বিষয়ে চিন্তা না করে কাজে প্রচন্ড দক্ষ হয়েছে। সুতরাং ইনকামের দিকে চিন্তা না করে আসুন আমরা সবাই মিলে কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ি, মন দিয়ে কাজ করি ও দক্ষ ফ্রিল্যান্সার হয়ে গড়ে উঠি, অর্থ আমাদের পিছে পিছে ঘুরবে।
লেখকের শেষ কথাঃ ফ্রিল্যান্সিং কোথায় শিখব
ফ্রিল্যান্সিং কোথায় শিখব এ কথার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিংকে মুক্ত পেশা হিসেবে দেখা হয় ও এর জনপ্রিয়তা প্রচুর। তা সত্ত্বেও দেশে দক্ষ ফ্রিল্যান্সারের প্রচন্ড অভাব। উপরিউক্ত আলোচনার মাধ্যমে আমরা এই বলে শপথ নিতে পারি যে, কাজে দক্ষ হব, নীতি নৈতিকতা বজায় রাখবো এবং দেশের মান উচ্চ করবো।
আমার এই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন বিষয়ের উপর ব্লগ পোস্ট করা হয়। আমি আশা করব এই লেখা থেকে আপনারা অনেক তথ্য পেয়েছেন ও উপকৃত হয়েছেন। সব সময় এই ওয়েবসাইট ভিজিট করুন, বিভিন্ন তথ্য পাবেন। আপনাদের সুন্দর ভবিষ্যৎ কামনা করে এখানেই শেষ করছি।
আর্টমহলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url