কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং এ্যাকাউন্ট খুলব

 কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং এ্যাকাউন্ট খুলব প্রশ্নটি প্রত্যেক ফ্রিল্যান্সারের মনে ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার আগে এসে পড়ে। ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য একটি এ্যাকাউন্ট অতীব জরুরী। 

কিভাবে-ফ্রিল্যান্সিং-এ্যাকাউন্ট-খুলব

কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং এ্যাকাউন্ট খোলা যায়  প্রশ্নটির সাথে সাথে ফ্রিল্যান্সিং এ্যাকাউন্ট তৈরির জন্য কোন ওয়েবসাইট ব্যবহার করা যায় এই বিষয়টি জানার আগ্রহ সৃষ্টি হয়। এই আর্টিকেলের মাধ্যমে চলুন আমরা বিষয়টি জেনে আসি। 

পেজ সূচিপত্রঃ কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং এ্যাকাউন্ট খুলব 

কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং এ্যাকাউন্ট খুলব 

কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং এ্যাকাউন্ট খুলব এ বিষয়ে বলতে গেলে, আমাদের দেশে অধিক জনবল ও শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর আধিক্যতার কারণে চাকরি করা ও চাকরি পাওয়া খুব কঠিন হয়ে পড়েছে। সাথে সাথে যেহেতু অনলাইনের কল্যাণে বিভিন্ন কাজকর্ম করার সুযোগ রয়েছে। যার কারনে শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর ফ্রিল্যান্সিংয়ের দিকে ঝুঁকে পড়ার প্রবণতা প্রচুর দেখা যাচ্ছে। চাকরি নাকি ফ্রিল্যান্সিং এই কথাটা সম্পর্কে আরো বিস্তর জানলে মুক্ত পেশা হিসেবে ফ্রিল্যান্সিংকেই অগ্রাধিকার দেওয়া যেতে পারে। 

ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য বিভিন্ন বিষয়ে কর্মে দক্ষ হয়ে যখন আমরা এ কাজটি করতে চাইবো তখন প্রয়োজন হবে একটি এ্যাকাউন্ট। বর্তমান বিশ্বে ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য বিভিন্ন জনপ্রিয় ওয়েব সাইট রয়েছে। তার মধ্যে Upwork, Fiverr, Freelancer, Guru অন্যতম। প্রত্যেকটি সাইটে একাউন্ট খোলার নিয়ম মোটামুটি এক এর মধ্য থেকে আপনারা যেকোনো একটি মার্কেটপ্লেস কে কেন্দ্র করে ফ্রিল্যান্সিং এ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন। 

এ্যাকাউন্ট খোলার আগে মনে রাখতে হবে, শুধুমাত্র একটি কম্পিউটার নিয়ে ও কাজে হালকা দক্ষ হয়ে এই সমস্ত প্লাটফর্মে কাজ করা ও পাওয়া কষ্টকর। যার কারণে আপনার যদি পর্যাপ্ত দক্ষতা থাকে সেক্ষেত্রে আপনি কাজ করার জন্য অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন। তবে, এই মার্কেটে প্রচুর কম্পিটিশন থাকার কারণে আপনাকে প্রচুর পরিমাণে ধৈর্য ও সময় দিতে হবে। আমি এখানে freelancer.com ওয়েবসাইটে একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্বন্ধে আলোচনা করব।

  • এই ওয়েবসাইটে অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য প্রথমে আপনাকে যেতে হবে freelancer.com এ।
  • ওয়েবসাইটে ঢোকার পর প্রথম পেজে আর্ন মানি ফ্রিল্যান্সিং নামে একটি লিঙ্ক পাওয়া যাবে এখানে ক্লিক করার পর রেজিস্ট্রেশন ফর্ম পূরণ করতে হবে। 
  • এরপর আপনি সাইন আপ পেজে দুইটি উপায়ে অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারেন ফেসবুক একাউন্ট ব্যবহার করে ও ইমেইল আইডি ব্যবহার করে। তবে, যেহেতু এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনি অনেক জটিল বিষয়ে কাজ করবেন সেহেতু ইমেইলের মাধ্যমে একাউন্ট খোলাটা নিরাপদ হবে। সেক্ষেত্রে, প্রথম বক্সে নিজের ইমেইল বসাতে হবে। দ্বিতীয় বক্সে পাসওয়ার্ড বসাতে হবে। 
  • I agree to freelancer user agreement and privacy policy.  অপশনে ক্লিক করে পরের স্টেপে যাবেন। 
  • এরপরে ইউজার নেম বসাতে হবে সে ক্ষেত্রে আপনাকে বেশ কিছু সাজেশন ইউজার নেম দেখাবে। সেখান থেকে যেকোনো একটি পছন্দ করে ইউজার নেম হিসেবে সিলেক্ট করে নেক্সট বাটনে ক্লিক করতে হবে। 
  • আপনি যদি এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নিজে ইনকাম করতে চান সেক্ষেত্রে, I want to work অপশনে ক্লিক করতে হবে। আর যদি আপনি অন্য কোন ফ্রিল্যান্সারদের দিয়ে কাজ করাতে চান সেক্ষেত্রে i want to hire অপশন ক্লিক করতে হবে।  
  • আপনার অ্যাকাউন্ট সাইন আপ কমপ্লিট হয়েছে। এর পরের পেজে আপনার দক্ষতা গুলো সিলেক্ট করে নিন
  • দক্ষতা সিলেক্ট করার ক্ষেত্রে আপনি যে সমস্ত বিষয়ে দক্ষ সেই বিষয়গুলো নির্বাচন করতে হবে এবং এই বিষয়গুলোর উপর নির্ভর করে আপনাকে প্রজেক্ট দেওয়া হবে। এরপর নেক্সট অপশনে ক্লিক করুন।
  • এরপরে যে পেজটি দেখানো হবে সেটি আপনার প্রোফাইল পেজ। এখানে আপনার পুরো ইনফরমেশন দিতে হবে। তার মধ্যে রয়েছে, প্রোফাইল পিকচার আপলোড করা, আপনার সম্পূর্ণ নাম, আপনি কি কি ভাষা জানেন এবং আপনার কাজের অভিজ্ঞতা এইসব ঘরগুলো পূরণ করে নেক্সট ক্লিক করুন। 
  • এখন আপনাকে অর্থ প্রদানের পদ্ধতি যোগ করতে হবে এবং এটি যাচাই করতে বলা হবে। এখানে আপনাকে ক্রেডিট ডেবিট কার্ড বা পেপাল একাউন্ট ব্যবহার করতে বলা হবে যাইহোক আপনি এই কাজগুলি পরে করতে পারেন এর জন্য নিচের স্কিপ ফর নাও বাটনে ক্লিক করুন। 
  • এখানে আপনি একটি প্রমোশন পেজ দেখতে পাবেন অর্থাৎ নির্দিষ্ট পরিমাণে অর্থের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সার ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে প্লাস মেম্বারশিপ এড করে থাকে আপনার ইচ্ছা হলে নিতেও পারেন নাও নিতে পারেন না নেওয়ার ক্ষেত্রে স্কিপ ফর নাউ অপশনটি ক্লিক করতে হবে 
  • এই ধাপ গুলো পার করে আপনারা ফ্রিল্যান্সার অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারেন। আশা করি আপনারা এ বিষয়ে সুন্দরভাবে কাজ করতে পারবেন।
একাউন্ট তৈরির পর প্রয়োজনীয় কাজঃ একাউন্ট তৈরির পর প্রয়োজনীয় কাজগুলো অবশ্যই করতে হবে যেগুলো না করলে আপনি পরবর্তীতে প্রজেক্ট বিড দিতে পারবেন না সেক্ষেত্রে  
  • আপনি যেই ইমেইল দিয়ে একাউন্ট খুলেছিলেন সেই ইমেইলের ইনবক্সে যে লিংকটি আসবে সেটা দিয়ে ভেরিফাই করে নিতে হবে। 
  • ফোন নাম্বার দিয়ে একাউন্ট ভেরিফাই করে নিতে হবে। 
  • প্রোফাইল অপশনে যেয়ে আপনার সম্পূর্ণ ঠিকানা দিতে হবে 
  • এই কাজগুলো করার পর আপনার ফ্রিল্যান্সার একাউন্টটি সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত হয়ে গিয়েছে। 

প্রজেক্টবিডিং কিঃ ফ্রিল্যান্সার ওয়েবসাইটে আপনার একাউন্ট খোলার পর আপনি বিভিন্ন ধরনের প্রজেক্ট দেখতে পারবেন এবং এই প্রজেক্ট গুলো কোন কোন কোম্পানি বা ব্যক্তি দিয়েছে তা দেখতে পারবেন। 

  • যেই প্রজেক্টে কাজ করতে আপনি আগ্রহী হবেন সেখানে ক্লিক করুন। 
  • প্রজেক্ট এ ক্লিক করার পর সমস্ত বিবরণ দেখতে পাবেন।
  •  উক্ত প্রজেক্ট বিষয়ে আপনার কি অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও জ্ঞান রয়েছে সে বিষয়ে লিখে দিতে হবে।
  • আপনাকে আরো লিখতে হবে আপনি কত পারিশ্রমিকে কাজটি করবেন এবং কত দিনের মধ্যে কাজটি সম্পন্ন করতে পারবেন।
  • সব অপশন গুলো পরিপূর্ণভাবে পূরণ হওয়ার পর প্লেস বিড অপশনে ক্লিক করলে আপনার আবেদনটি যিনি কাজটি পাবলিশ করেছেন তার কাছে চলে যাবে। 

আপনার মত অনেক ফ্রিল্যান্সাররা একই কাজের জন্য আবেদন জমা করবে। সেখান থেকে যেই ফ্রিল্যান্সারকে যোগ্য বলে মনে হবে তাকে কাজটি দেওয়া হবে। এই সিস্টেমটাকে প্রজেক্ট বিডিং বলে। 

ফ্রিল্যান্সিং কাকে বলে 

ফ্রিল্যান্সিং কাকে বলে এই বিষয়টি বিভিন্ন ব্যক্তি বিভিন্ন ভাবে ব্যাখ্যা করে থাকেন। তবে আমার মতে, ফ্রিল্যান্সিং একটি মুক্ত পেশা যেখানে আপনি ইন্টারনেটে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। এটি আর কয়েকটি সাধারণ কাজের মতই তবে, আপনার ইচ্ছা অনুযায়ী চলবে। আপনি চাইলে কাজ করতে পারেন আবার যখন ইচ্ছা বন্ধ করে আবার পুনরায় কাজ করতে পারেন, এই স্বাধীনতা ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে রয়েছে।

 আপনার যেই কাজের বিষয়ে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা রয়েছে তার সাথে অন্যদেরকে সংযোগ করে কাজ করা ও বিনিময়ে অর্থ আদান প্রদান করা। সেটা হতে পারে দেশের বাহিরে বা ভেতরে যেকোনো ধরনের কাজ। ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের মধ্যে অনেক ধরনের কাজ রয়েছে।আপনার দক্ষতা অনুযায়ী যে কোন বিষয়ের উপরে আপনি কাজ করতে পারেন। 

ফ্রিল্যান্সিং করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের যে পপুলার বিষয়গুলো রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম, রাইটিং, ডিজাইনিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, প্রোডাক্ট সেইলিং ইত্যাদি। এই কাজগুলো সাধারণত ঘন্টায়, দিনে, সপ্তাহে ও মাসে করে দিতে হয়। এমন অনেক কাজ আছে যেগুলোর সময়সীমা থাকে কয়েক ঘন্টা অর্থাৎ ওই সময়সীমার মধ্যেই কাজটি করে দিতে হবে। আবার এমন অনেক কাজ রয়েছে যেগুলোর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ একমাস পর্যন্ত সময় দিয়ে থাকে।  

আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশে কোটিপতি হওয়ার উপায়

ফ্রিল্যান্সিং এ্যাকাউন্ট কেন খুলবো

ফ্রিল্যান্সিং অ্যাকাউন্ট কেন খুলবো এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় একটি অ্যাকাউন্ট একজন ফ্রিল্যান্সারের প্রতিষ্ঠানস্বরূপ। একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে যেমন ব্যবসায়িক কাজকর্ম পরিচালনার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন হয়ে থাকে তেমনি একজন ফ্রিল্যান্সারের একাউন্টে এর মাধ্যমে তার সমস্ত কাজকর্ম ও অর্থ আদান-প্রদান হয়ে থাকে। 

এজন্য একজন ফ্রিল্যান্সার যখন একাউন্ট খুলবেন তখন তাকে সবদিক বিচার বিশ্লেষণ করে কাজে দক্ষ হয়ে অ্যাকাউন্ট খুলতে হয়। একজন ফ্রিল্যান্সারের অ্যাকাউন্ট খোলার পর প্রথম অবস্থাতে কাজ পাওয়া খুবই কষ্টসাধ্য হয় এবং যদি ওই ফ্রিল্যান্সার তার কাজে পরিপূর্ণ দক্ষ না হয় তবে প্রথম দিকে দুই একটি কাজ করার পর তার রেটিং খারাপ হয়ে যায় ও পরবর্তীতে কাজ পাওয়া কষ্টকর হয়। 

একজন ফ্রিল্যান্সারের সব সময় একাউন্ট খোলার আগে চিন্তা করতে হবে কি ধরনের কাজ আমি করতে পারি এবং কি ধরনের কাজ করে আমি অর্ধ উপার্জন করবো। বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের ফ্রিল্যান্সিং করার ওয়েবসাইট রয়েছে তার মধ্যে আপনার জন্য কোনটি বেটার হবে সেটা বুঝে অ্যাকাউন্ট ফুলে কাজ করা শুরু করতে হবে। কোন ফ্রিল্যান্সারের যদি একাউন্টে না থাকে সেক্ষেত্রে মার্কেট প্লেস থেকে যে সমস্ত কার্যক্রম হয়ে থাকে সেটা তিনি করতে পারবেন না। 

নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সেরা মার্কেট প্লেস কোনটি  

নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সেরা মার্কেট প্লেস কোনটি এ বিষয়ে বলতে গেলে ফাইভার, আপ ওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সার ডট কম, পিপল পার আওয়ার এবং গুরু ডট কম হল পাঁচটি নির্ভরযোগ্য মার্কেটপ্লেস।কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং এ্যাকাউন্ট খুলব এ বিষয়টি জানার সাথে এও জেনে রাখুন দীর্ঘদিন ধরে যারা ফ্রিল্যান্সিং করছেন তাদের নির্ভরযোগ্যতা ও ভালো সার্ভিসের কারণে এই পাঁচটি সাইট খুব ভালো হবে বলে মনে করেন। এই মার্কেটপ্লেস গুলি এক একটি এক এক রকম ভাবে সেবা দিয়ে থাকে। চলুন আরও বিস্তারিত জেনে আসি। 

ফাইভারঃ বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস এ কাজ করার জন্য অর্ধ পরিশোধ করতে হয় সে ক্ষেত্রে ফাইবার অর্থ নিয়ে থাকে না যার কারণে নতুনদের জন্য এটি খুবই চমৎকার এবং সম্ভাবনাময় ওয়েবসাইট হতে পারে। দক্ষতার উপর নির্ভর করে নতুন ফ্রিল্যান্সাররা এখান থেকে খুব সহজে কাজ পেতে পারেন। এই ওয়েবসাইটে, কনটেন্ট রাইটিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, ডিজাইনিং সহ অন্যান্য সকল সেক্টরের ফ্রিল্যান্সিং কাজ পাওয়া যায়। 

আপ ওয়ার্কঃ আপওয়ার্ক মার্কেটপ্লেসটি বর্তমানে ফ্রিল্যান্সারদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। এই মার্কেটে দুই রকম ভাবে কাজ পাওয়া যায়, তাহলো ঘন্টাভিত্তিক ও মূল্য ভিত্তিক অর্থাৎ এই সাইটে যে কেউ ঘন্টাভিত্তিকভাবে কাজ করে পেমেন্ট নিতে পারেন আবার চুক্তিভিত্তিক ভাবে কাজ করে পেমেন্ট নেওয়া যায়। পেমেন্ট নেওয়ার ক্ষেত্রে জব বিডিং সিস্টেমের কারণে কিছু মূল্য পরিশোধ করতে হয় আবার পেমেন্টের ক্ষেত্রে ৫% থেকে ২০% পর্যন্ত এই সাইটকে প্রদান করতে হয়। কিন্তু এই সাইটে টাকা উত্তোলন করা ঝামেলা মুক্ত। ব্যাংক ট্রান্সফার, ডিরেক্ট ডিপোজিট, পেপাল ইত্যাদির মাধ্যমে ফ্রি ছাড়া পেমেন্ট এর টাকা উত্তোলনের সুবিধা রয়েছে। 

ফ্র‍ীল্যান্সার ডট কমঃ এই ওয়েবসাইটে নতুনদের জন্য বিভিন্ন ধরনের কাজের সুযোগ রয়েছে। তার মধ্যে, সফটওয়্যার, মোবাইল ডেভেলপমেন্ট, ডিজাইন সহ অন্যান্য ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের কাজগুলো সুন্দর ভাবে করা যায়। এখানেও ঘন্টাভিত্তিক ও চুক্তিভিত্তিক কাজের পাশাপাশি প্রতিযোগিতামূলক কাজের সুযোগ রয়েছে অর্থাৎ ক্লায়েন্ট নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ তার কাজের বিনিময়ে ঘোষণা করে থাকেন সেখানে ফ্রিল্যান্সাররা তাদের কাজগুলো নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে জমা দেন সেখান থেকে সবচেয়ে ভালো কাজটি ক্লায়েন্ট গ্রহণ করে পেমেন্ট পরিশোধ করে থাকেন। 

গুরু ডট কমঃ এই সাইটটির একটি বড় সুবিধা হচ্ছে এখানে গ্রুপ বেধে কাজ করা যায়। বড় বড় প্রতিষ্ঠানের প্রজেক্ট এই সাইটে পাওয়া যায়। সাথে প্রোগ্রামিং, সেলস এন্ড মার্কেটিং, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, রাইটিং, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড আর্কিটেকচার সহ অন্যান্য কাজ করার সুযোগ রয়েছে। সেই সাথে এসইও সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন সহ অন্যান্য বিভিন্ন কাজ করা যায়। 

পিপল পার আওয়ারঃ এই সাইটে যে সমস্ত কাজের সুযোগ রয়েছে তার মধ্যে ডিজাইন ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার ডেভলপমেন্ট সহ নেস সাপোর্টের কাজ করা যায়। এই ওয়েবসাইটে কাজ বিড করার সাথে সাথে সার্ভিসও সেল করে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। এই ওয়েবসাইটের আরেকটি বড় সুবিধা হচ্ছে, এখানে কাজের রেট অনেক বেশি। যার কারণে অনেকে কম সময়ে বেশি আয় করার সুযোগ-সুবিধার কারণে এই ওয়েবসাইটে কাজ করে থাকেন। 

আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশের অন্যতম আইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ''অর্ডিনারি আইটি''

ফ্রিল্যান্স সার্ভিস মার্কেটপ্লেস কি 

ফ্রিল্যান্সার সার্ভিস মার্কেটপ্লেস কি এ সম্পর্কে জানতে হলে আমরা বলতে পারি একটি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস হল একটি অনলাইন প্লাটফর্ম যেখানে ক্লাইন্টরা বিভিন্ন কাজের জন্য জব পোস্ট করে থাকে এবং ফ্রিল্যান্সাররা কাজ করে অর্থ উপার্জন করে আপনি যদি একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করতে চান এবং আপনার ক্যারিয়ার গড়তে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে ফ্রিল্যান্সিংয়ে দক্ষ হতে হবে সেক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সার সার্ভিস মার্কেট প্লেসে কাজ করতে পারবেন। 

ফ্রিল্যান্স সার্ভিস মার্কেটপ্লেস কি

এই মার্কেটপ্লেসগুলো বিভিন্ন ধরনের সেবা দিয়ে থাকে। যার মাধ্যমে নির্দিষ্ট হারে অর্থ কেটে নেওয়ার মাধ্যমে তারা সার্ভিস দেয়। নির্দিষ্ট হারে অর্থ কেটে নেওয়ার কারণে তারা নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ও বায়ার বা ক্লায়েন্ট এবং ফ্রিল্যান্সারদের মাঝে যোগসূত্র স্থাপন করে। যার মাধ্যমে দুই পক্ষই লাভবান হয় সাথে মার্কেটপ্লেস পক্ষ কিছু অর্থ কেটে নেওয়ার মাধ্যমে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করতে পারে।

 ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস না থাকলে কাজ করার জন্য নির্ভরযোগ্য স্থান ফ্রিল্যান্সাররা পেতো না ও বায়ার রাও কাজ দিতে পারতো না। যার কারণে এই মার্কেটপ্লেসটি অতীব জরুরী বলা যেতে পারে। মার্কেটপ্লেস তৈরি হয়েছে বলেই ফ্রিল্যান্সাররা কাজ করতে পারছে। তাই নির্দিষ্ট অর্থ কেটে নেওয়ার পরেও মার্কেটপ্লেসগুলো ফ্রিল্যান্সারদের কাছে অনেকটা হাট বাজারের মত কাজ বা সার্ভিস বিক্রির অন্যতম নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান। 

ফ্রিল্যান্সার নাকি ফাইভার কোনটি ভালো  

ফ্রিল্যান্সার নাকি ফাইবার কোনটি ভালো এই প্রশ্নের উত্তরে বলা যেতে পারে দুটি মার্কেট প্লেস ই ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান। বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সিং এর জনপ্রিয়তা এত বাড়ার পেছনে এ জাতীয় মার্কেটপ্লেস গুলোই প্রধান কারণ। তারপরেও প্রত্যেকটি মার্কেটপ্লেসের আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। চলুন আমরা জেনে আসি, নতুনদের জন্য কোন মার্কেটপ্লেসটি ভালো।

ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার জন্য কোন মার্কেট প্লেসটি ভালো হবে এ বিষয়ে যদি চিন্তা করেন এবং আপনি যদি নতুন হন সে ক্ষেত্রে আপনার জন্য ফাইভার একটি ভালো অপশন। অন্যদিকে আপনি যদি দক্ষ ও অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সার হন এবং ভালো মানের কাজ পেতে চান সেক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সার বা আপওয়ার্ক আপনার জন্য ভালো অপশন হতে পারে। 

ফ্রিল্যান্সার ওয়েবসাইটটি ভালো মানের কাজ প্রদান করে থাকে ও অর্থ ভালো মানের হয় সেক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে যদিও এই সেক্টরে দক্ষতা প্রত্যেকটি মার্কেটপ্লেস এর প্রয়োজন তবে নতুনরা এই ওয়েবসাইটে প্লেস পাওয়া খুবই কষ্টকর এবং টিকে থাকা কঠিন অন্যদিকে ফাইবার একটু নিম্নমানের কাজ প্রদান করলেও শুরুতে এই মার্কেটপ্লেসের মাধ্যমে আপনি সহজে কাজ পেতে পারেন। 

আরও পড়ুনঃ মিল্কশেক এর উপকারিতা ও অপকারিতা


বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং সেক্টর কোনটি 

বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং সেক্টর কোনটি এ বিষয়ে বলতে গেলে প্রথমেই বলতে হয় ডিজিটাল মার্কেটিং এর কথা। কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং এ্যাকাউন্ট খুলব এ বিষয়টি জানার সাথে এও জেনে রাখতে হবে বাংলাদেশে বা ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটে ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রয়োজনীয়তা প্রচুর। ডিজিটাল মার্কেটিং ছাড়া বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং কল্পনা করা কষ্টকর, যার কারনে এই সেক্টরের কাজগুলোর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। আপনি যদি ভালো মানের ফ্রিল্যান্সার হতে চান সেক্ষেত্রে ডিজিটাল মার্কেটিং এ আপনাকে দক্ষ হতেই হবে। 

ডাটা এন্ট্রির কাজ বর্তমান সময়ে নতুনদের জন্য খুবই জনপ্রিয় কারণ এই কাজ করতে তুলনামূলকভাবে অন্যান্য কাজের তুলনায় সহজ হয়। এই কাজ করতে হলে এই বিষয়ে অবশ্যই দক্ষ হতে হবে। মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ও এক্সেল জানার পাশাপাশি বিভিন্ন টুলের ব্যবহার জানতে হয় এবং টাইপিং স্পিড খুব ভালো না হলে এই সেক্টরেও ভালোভাবে কাজ করা সম্ভব হয় না। আপনারা যারা এই সেক্টরে ভালো করতে চান অবশ্যই টাইপিং জানতে হবে। 

কনটেন্ট রাইটিং হতে পারে আপনার জন্য একটি ভালো মাধ্যম। আপনার যদি লেখালেখির দক্ষতা থাকে এবং গবেষণামূলক কাজকর্ম করার মন মানসিকতা থাকে, সে ক্ষেত্রে কনটেন্ট রাইটিং সেক্টরটি আপনার জন্য খুবই ভালো হতে পারে। বর্তমান যুগ কনটেন্টের যুগ। যার কনটেন্ট যত ভালো যেকোনো সেক্টরে সে তত এগিয়ে। এছাড়াও আরো আছে ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট গ্রাফিক্স ডিজাইন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার সহ অন্যান্য বেশ কিছু কাজ যেগুলো বর্তমান সময়ে খুবই জনপ্রিয়। 

আরও পড়ুনঃ ছেলেদের মুখের তৈলাক্ততা দূর করার ফেসওয়াশ


আপওয়ার্ক কোন ধরনের ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস 

আপওয়ার্ক কোন ধরনের ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস এটি জানার আগে আমরা এই ওয়েবসাইটটির জন্ম লগ্ন ইতিহাস একটু জেনে নিই।  আমাদের দেশে ফ্রিল্যান্সিং যখন শুরু হয় তখন মার্কেটপ্লেস হিসেবে জনপ্রিয় ছিল ফ্রিল্যান্সার ডটকম, ওডেস্ক ও ইল্যান্স। পরবর্তীতে ওডেস্ক ও ইল্যান্স একত্র হয়ে আপওয়ার্ক মার্কেটপ্লেস তৈরি করে। ফাইবার মার্কেটপ্লেস গীগবেজ হওয়ায় প্রতিযোগিতা না করেও কাজ করা যায় বর্তমানে আপওয়ার্কও  এই সিস্টেম চালু করেছে। 

আপওয়ার্ক কোন ধরনের ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস

দীর্ঘ মেয়াদী বিভিন্ন ধরনের কাজের সুযোগ থাকায় দক্ষ ফ্রিল্যান্সারদের কাছে এই মার্কেটপ্লেসটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ফাইভারকে অনুসরণ করে অনেক বিষয় পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করেছে।যার কারনে কাজ খোঁজার জন্য ক্লায়েন্টের অপেক্ষায় না থেকে নিজে কাজ খুঁজে করার সুযোগ থাকায় এই মার্কেটপ্লেসটি বর্তমানে বেশ জনপ্রিয়। ঘন্টা ভিত্তিক কাজ করা যায় এই মার্কেটপ্লেসে যার কারণে কাজের পারিশ্রমিক খুব ভালো পাওয়া যায়। এছাড়াও আরো বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা রয়েছে এই মার্কেটপ্লেসে।

আপওয়ার্কে যদি আপনি কাজ করতে চান, আপনাকে ব্যবহার করতে হবে কানেক্ট নামক ভার্চুয়াল মুদ্রা, যা এক কানেক্ট সমান ১৫ সেন্ট হারে কিনতে হয়। অনেকে অভিযোগ করেন আপওয়ার্ক মার্কেটপ্লেসে অনেক বেশি আবেদন করার পরও কাজ না পেয়ে অ্যাকাউন্ট বাতিল করে দেয় কিন্তু বিষয়টি পুরোপুরি এমন নাও হতে পারে। আপনি যদি দক্ষ ফ্রিল্যান্সার হন ও কোম্পানির প্রত্যেকটি নিয়ম মেনে কাজের জন্য আবেদন করেন সেক্ষেত্রে এই প্লাটফর্মটি আপনার জন্য খুবই ভালো। 

কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করা যায় 

কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করা যায় এ বিষয়ে এতক্ষণ আমরা বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস থেকে তথ্য পেয়েছি এবং আমরা এও বুঝতে পেরেছি যে আপনার যদি দক্ষতা ও ট্যালেন্ট থেকে থাকে সেক্ষেত্রে আপনি নির্দিষ্ট বিষয়ে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস গুলোর মাধ্যমে কাজ করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারেন যা হতে পারে দেশের মধ্যে বা অন্যান্য কোন দেশে অর্থাৎ ফ্রিল্যান্সিং এমন একটি পেশা যার মাধ্যমে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ধরনের কাজ ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে আয় করা সম্ভব। 

 আমাদের দেশে যে প্রচুর জনবল রয়েছে সে হারে চাকরির ক্ষেত্র অপ্রতুল। যার কারণে তরুণ জনগোষ্ঠী শিক্ষিত হয়ে চাকরি না করে ফ্রিল্যান্সিংকে মুক্ত পেশা হিসেবে ধরে কাজ করে যাচ্ছে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে প্রচুর কাজ থাকা সত্ত্বেও সে হারে জনবল নেই। যার কারণে কাজের জন্য প্রচুর ক্লায়েন্ট বা বায়ার আমাদের দেশের ফ্রিল্যান্সারদের কাছে বা বিভিন্ন দেশের ফ্রিল্যান্সারদের কাছে কাজ দিয়ে কাজ করিয়ে নেয়। যার মাধ্যমে আমরা প্রচুর অর্থ ঘরে বসে উপার্জন হয়ে থাকে। 

আপনি যদি কোন মার্কেটপ্লেসের অধীনে না থেকে নিজে দেশের মধ্যে ফ্রিল্যান্সিং করতে চান সেক্ষেত্রেও প্রচুর কাজের সুযোগ রয়েছে। যেমন আপনি যদি চান বাংলা ভাষায় আর্টিকেল লিখবেন তাও করা সম্ভব বর্তমান সময়ে যেকোনো ব্যবসা ফেসবুক ইউটিউব গুগলের মাধ্যমে অ্যাড দিয়ে প্রচার ও প্রসার হয়ে থাকে যেই কাজগুলো করে আপনি দেশের মধ্যে থেকে দেশের কাজ করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারেন। তবে যেখানেই ফ্রিল্যান্সিং করুন না কেন আপনাকে অবশ্যই দক্ষ হতে হবে। 

লেখকের শেষ কথাঃ কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং এ্যাকাউন্ট খুলব 

কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং এ্যাকাউন্ট খুলব এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যেতে পারে যে, বর্তমান সময়ে চাকুরীর চেয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করা যায় যা মুক্তপেশা হিসেবে বিবেচিত। আর এই কাজ করার জন্য কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং এ্যাকাউন্ট খুলে কাজ করা যায় সে বিষয় সহ বিভিন্ন বিষয় আমরা জানতে পারলাম। 

আমার এই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন বিষয়ের উপর ব্লগ লেখা হয়। উপরিউক্ত আলোচনা থেকে আমি আশা করব আপনারা সঠিক তথ্য পেয়েছেন। আমার ওয়েবসাইটটি সব সময় ভিজিট করে পাশে থাকুন। আপনাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করে এখানেই শেষ করছি।  

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আর্টমহলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url